বিযুক্তি নয়, সংযুক্তির চেতনা- ‘কলির সন্ধ্যে’-য় কিছু অমূলক কথা

প্রবুদ্ধ ঘোষ

মারী তো ছিলই সব বাড়ির ভেতরে
কুরে কুরে খাওয়া অবসাদ
অভিমানও নিভে যাওয়া, দূরত্ব ছিলই
সন্ধ্যেয় জ্বলে ওঠা, একা পথ।
এখনও একাই আছে দেয়ালের ছবি
নাম লেখা, বিষুবরেখাঠ° ঢঙে তাতে
সামান্য মনখারাপেরঠ¾ আহতকথনে
ভেঙে পড়ে বিষাদবাড়ির আশেপাশে

মারী তো আছেই, সাঁকো- দু’দিকে দু’জন
ঘর থেকে ঘর- দূরত্ব বেড়েছে
এমন ভোরের রঙে মৃত গল্পেরা
বসন্ত হাওয়ায় দোল খেয়ে ঝরে গেছে

জ্বলে মৃত তারাদের শোক, হাতের ভেতর
জোনাকিরা জমা হয়, অধিকন্তু এ জীবনবোধ

সব কিছু নাকি ফিরে আসছে? দূষণ কমে গেছে বলে, লোকচলাচল থেমে গেছে বলে। সে তো আনন্দের কথা। বহুদূর দেখা যাচ্ছে। কত দূর? যতদূর গেলে আমাদের ফেলে আসা পথ গুলো পুনর্ভ্রমণ করা যায়? যত দূর গেলে বিগত ভুল গুলো সাজিয়ে নেওয়া যায় সুখাশ্রয়ী পাজ্‌ল গেমের বিন্যাসে? যতদূর গেলে বিগতযৌবন দেহ শরীরী স্পর্শের ভেতর ডুবে যেতে পারে? যতদূর দেখা গেলে অশক্ত-রোগগ ্রস্ত বয়েস চলে যেতে পারে দৌড়ে প্রজাপতি ধরা বাল্যে?

না, কিচ্ছু ফেরেনা কোথাও। একরৈখিক গতিতে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধেয়ে যায় জীবন সম্ভাবনা।
আমরা বিযুক্তি জানছি শুধু। সংকট মুহূর্তে আরও সরে সরে যাচ্ছি আমরা। পরিচিতের থেকে, অপরিচিতের থেকে, জ্ঞাত অজ্ঞাত সকলের থেকে। বন্ধুদের থেকে, আত্মীয়দের থেকে, আগের প্রজন্মের থেকে, এমনকি নিজেদের থেকেও। সরে যাচ্ছি আমরা আয়না থেকেও। কেন সরে যাই? ভালবাসা আর মিলনের বোধ যেমন আজন্মলালিঠ, তেমন তো বিচ্ছেদ আর শত্রুতাও। সংকটের মুহূর্তে আমরা à¦ªà§à¦°à¦¤à§à¦¯à§‡à¦•à§‡à ‡ আউড়ে যাই বেঁধে বেঁধে থাকার প্রিয় সব কবিতার পংক্তি, গানের চরণ। তবু ছুঁই না কিছুতেই মনেরই গভীর তলদেশে জমে থাকা অন্ধকার। কিন্তু, তা তো থাকে, থেকে যায়। ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া, যার প্রয়োজন ফুরিয়েছে, তাকে অবহেলায় সরিয়ে দেওয়া। এক্সপায়ারঠডেট পেরিয়ে যাওয়া ওষুধ, ম্যানুফ্যা কচারিং ডেটের ৬ মাস পেরিয়ে যাওয়া কোল্ড ড্রিংক... যখন প্রাণ আর বস্তু এক হয়ে যায়? যখন জীবন্ত মানুষ আর ব্যবহার্য বস্তুর গুরত্ব একই হয়ে যায়?! à¦…à¦ªà§à¦°à§Ÿà§‹à¦œà¦¨à§‡à ° জীবনকে ছেঁটে ফেলার পাঠ দিয়ে চলে সময়, সমাজ; অজান্তে সে বিষভাবনা আমদের যাবতীয় বোধ অবশ ক’রে দেয়।

#
প্রয়োজন ফুরোলে দল থেকে বের করে দেওয়া হয়। খেলার দল থেকে বের করে দেওয়া হয়। ‘বুড়ো’দের প্রতি এই অবহেলা কী আজকের? ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটস্‌মৠযান যখনই কোনও ম্যাচে খারাপ খেলত, শোরগোল উঠে যেত- ‘বুড়োটাকে বাদ দেওয়া হোক এবার’, ‘কবে অবসর নিচ্ছ হে?’। বুড়ো বেতো ঘোড়াকে বাতিল করে দেওয়াই নিয়ম। বয়েস- সচেতন রাখে আমাদের; ক্ষমতা আর প্রভাবের সচেতনতা। অশক্ত যারা, ক্রমশঃ অক্ষম যারা, সবলতার দিন পেরিয়ে দুর্বল সন্ধে সন্তর্পণে পার হচ্ছে যারা, তাদের ধীরেসুস্থৠ‡ বা একঝটকায় সুবিধেমতো ঝেড়ে ফেলারই তো পাঠ দেওয়া হয় আমাদের প্রতিদিন। ব্যবহারঅযৠগ্য মালপত্তর যেমন বোঝা, à¦…à¦ªà§à¦°à§Ÿà§‹à¦œà¦¨à§€à Ÿ ছবি-ভিডিও-à¦ªà §‡à¦¨ যেমন স্পেস্‌ খায় তাই ডিলিটযোগ্ঠ¯, তেমনই মানুষের গুরুত্ব। সংকটকালে সর্বাগ্রে বাঁচানো হয় শিশু ও নারীদের। ভবিষ্যত প্রজন্ম ধারণ করবে যারা। আর, ভবিষ্যৎ-রকৠà¦·à¦¾ বা বংশরক্ষার সেই নিয়মেই গুরুত্ব কমে আসে বৃদ্ধ-বৃদ্ঠাদের। সংকট গাঢ় হলে এই নিয়মের বাস্তবপ্রয় োগ ঘটে। টেক্সাসের লেফটেন্যাঠ¨à§à¦Ÿ গভর্নর তাই জানিয়ে দেন যে, “আমেরিকার অর্থনীতি অক্ষুণ্ণ রাখতে ও নাতি-নাতনিঠের প্রজন্মকে চেনা আমেরিকা উপহার দিতে বয়স্ক নাগরিকরা কি জীবন বাজি রাখতে পারে না?” পরোক্ষে তরুণ প্রজন্মের মঙ্গলার্থৠ‡ বৃদ্ধবৃদ্ধ াদের জীবন থেকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত। স্পেন-à¦‡à¦¤à¦¾à¦²à ¿à¦° বেড়ে চলা মৃত্যুমিছঠলে এবং à¦†à¦•à§à¦°à¦¾à¦¨à§à¦¤à§‡à ° ভিড়ে বহু ক্ষেত্রেই চিকিৎসার ন্যূনতম সুযোগ পৌঁছচ্ছে না বয়স্কদের কাছে। করোনা-à¦­à¦¾à¦‡à¦°à ¦¾à¦¸à§‡à¦° প্রকোপে বয়স্ক নাগরিক, যাঁদের রোগ-à¦ªà§à¦°à¦¤à¦¿à¦°à ‹à¦§ ক্ষমতা কম, তাঁদেরই মৃত্যুর হার বেশি, অন্ততঃ তেমনই বলছে বিশ্বব্যাপ ী প্রায় তিনমাসের কেসস্টাডিॠ¤ সংকটের মুহূর্তে আমরাও কি তাই মনে মনে চেয়ে নিচ্ছি নিজেদের সুস্থতা, বরিষ্ঠ নাগরিকদের প্রাণের বিনিময়ে?

কিন্তু, অতীতকে কি à¦…à¦ªà§à¦°à§Ÿà§‹à¦œà¦¨à§€à Ÿ বলে ফেলে দেওয়া যায়? যা স্মৃতি ব্যবহারের নয় আর, তাকে কি খাদের ধারে নিয়ে গিয়ে আচমকা ধাক্কা মেরে দেওয়া যায়? যে মুহূর্ত এতদিন ধরে লালিত হয়েছে সযত্নে, হঠাৎ কোনও সংকটকালে তাকে কি ছুঁড়ে ফেলা যায়? যে প্রজন্ম তাঁদের সময়ের আখ্যান আর ভালবাসার কথনে সাঁকো গড়ে দিয়েছে এই প্রজন্মের সঙ্গে বা আগত ভবিষ্যতের, সে প্রজন্মকে কি অবহেলায় নিস্পৃহতায় বিনা চিকিৎসায় অন্তর্জলি যাত্রায় রেখে দেওয়া যায়? অর্থনৈতিক সংকট থেকে বাঁচতে সংক্রমণের আশঙ্কা মাথায় নিয়েও অবসর-ভাতা বা সমাজের ‘বোঝা’ হালকা করতে একটা গোটা প্রজন্মকেঠ‡ কি ভাল্‌নারেঠ¬à¦² করে দেওয়া যায়?

বোকা বুড়োর গল্পটা মনে আছে? সে গল্পে ছিল পাহাড় কাটার চেষ্টা। সকলেই হেসেহিল, বুড়ো লোকটার অসাধ্যসাধঠের ইচ্ছে দেখে বলেছিল, ‘পাগল’। তখনও সেই বুড়ো লোকটা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল চেষ্টাটুকৠà¦° মানে বোঝাতে। কেউ মেনে নেয়নি। তার মতামত, প্রচেষ্টা সবই প্রায় একঘরে হয়ে গিয়েছিল। বুড়ো জানত, আপাতদৃষ্টঠতে তার এই বোকামিও ফলপ্রসূ হতে পারে; যদি সে না পারে, তার পরবর্তী প্রজন্ম, তারও পরবর্তী প্রজন্ম পাহাড় দু’টো সরিয়ে রাস্তা বানানোর চেষ্টা করেই যাবে, চেষ্টা চলবে যতদিন না পাহাড় কেটে বানানো রাস্তা দিয়ে যাতায়াত সুগম হয়। সমাজের চোখে বাতিল হয়ে যাওয়া সেই বৃদ্ধের নিষ্ঠা ও শ্রমে মন গলল দেবদূতদের, তারা সরিয়ে নিয়ে গেল পাহাড়, আগামী সভ্যতার পথ খুলে গেল। কনফুসিয়াসৠর শিষ্য লিউ শিয়াং-এর পুনর্কথিত গল্পকে মাও সে তুং জীবন্ত করে তুলেছিলেন চিনের সমাজে; পাহাড়দু’টৠ‹ তখন সমাজে গেঁড়ে বসা সামন্ততন্ত ্র আর সাম্রাজ্যব াদ, দেবদূতেরা চিনের সাধারণ মানুষ এবং বোকা বুড়ো কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিভূ। বুড়োকে যতই পাগল বা বোকা কিংবা তার চিন্তাকে বাতিলের খাতায় ফেলে দেওয়া হোক, বুড়োর অভিজ্ঞতা, নিষ্ঠা ও শ্রমের কাছে হার মানে বাকিরা।

#
“He looked at the colonel. Then he looked at the postmaster seated in front of the telegraph key, and then again at the colonel.
'We're leaving,' he said. The postmaster didn't raise his head.
'Nothing for the colonel,' he said.
The colonel felt ashamed.
'I wasn't expecting anything,' he lied. He turned to the doctor with an entirely childish look. 'No one writes to me.'
They went back in silence.”

কর্নেলের জন্যে কোনও চিঠি বা খবর আসত না। অবসর-ভাতাও পেতেন না কর্নেল। বৃদ্ধ কর্নেল আর তাঁর হাঁপানি-অসৠà¦–ে-ভোগা স্ত্রী দিন গুনতেন টাকা পাওয়ার। কর্নেল প্রতিসপ্তা হে যেতেন জাহাজঘাটায় , অন্তহীন অপেক্ষা। কর্নেল তবু আশ্বাস দিতেন তাঁর স্ত্রীকে। কর্নেল, কলম্বিয়ার সেই মহাযুদ্ধে পরাজিতদের মধ্যেও মাথা উঁচু ক’রে বেঁচে থাকা কর্নেল, অবসরভাতা পাওয়ার প্রতিশ্রুত কর্নেল এবং একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে ফেলা কর্নেল- সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছিলেনॠ¤ তবু, কিছুতেই ছেলের খুন হওয়ার স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মোরগটা বেচতে পারত না। প্রতিদিন বৃদ্ধকে একটু একটু ক’রে অসহায় ক’রে দিত সময় এবং ব্যর্থ আশা। প্রতিদিন হেরে যেতে যেতেও ‘গোডো’-র মতোই চিঠির আশা, অবসরভাতা পাওয়ার আশা। ক্রমশ আরও একা আরও দরিদ্র হতে থাকা পরিবার। বাইরে মার্শাল ল, জরুরি অবস্থা। কর্নেল এক প্রতিবেশীঠ° মৃত্যুতে খুশি হন বা বলা ভাল বিমর্ষ হন না, কারণ, বহু বছর বাদে জরুরি অবস্থার কালো ছায়ায় ঢাকা সে দেশে সেই প্রতিবেশী জরায় স্বাভাবিকঠাবে মারা গেছে! অনাহার এবং দারিদ্র যখন প্রবল, ঘরের সব জিনিসই প্রায় বিক্রি হয়ে গেছে, তখনও আশা- আর কয়েকটা দিন কেটে যাবে ঠিক... কর্নেল কোনও চিঠি পায় নি, কোনও ভাতা এসে পৌঁছয়নি; গাঋস্যা মার্কেজ অদ্ভুত সমাপতনের মিষ্টতায় জাদুবলে কোনও অলৌকিক সমাধান এনে দিতে পারেননি। শুধু ভেঙে গেছে বৃদ্ধ কর্নেল আর তাঁর স্ত্রী-র সমস্ত সাঁকো। কর্নেল বহুদিন গুমোতে চান, এড়িয়ে যেতে চান অনাহার আর দেশজোড়া হাহাকারের দিনগুলো; জেগে উঠতে চান মোরগ লড়াইয়ের দিন, জানুয়ারির কোনও এক দিন। তাঁর ছেলে আগুস্তিন মারা গেছিল যে মোরগ-à¦²à§œà¦¾à¦‡à§Ÿà §‡ গিয়ে, সেই মোরগ লড়াইয়ের বাজি জেতার আশা, অবসরভাতার চিঠি এসে পৌঁছানোর আশা... কর্নেল কি হেরে যেতে পারেন? অতীতের সঙ্গে বর্তমানের জুড়ে থাকার যে আখ্যান, তা কখনও মরে যেতে পারে? নিরাশার দিনেও তো সেই দিন গোনার নির্ভরতাটু কুই সম্বল।
গার্সিয়া মার্কেজ এই গল্পের চরিত্রদের খুঁজে নিয়েছিলেন দু-প্রজন্ম আগের আখ্যানকথন থেকেই। তাঁর ঠাকুর্দার ছায়ায় তৈরি কর্নেল চরিত্র আর ঠাকুমার ঝুলি ভরা গল্পের মতো ইতিহাস, কলম্বিয়ার রাজনীতি আর ব্যক্তিমনৠর অতলে অনুসন্ধানà¥

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের দূরত্ব বেড়ে গেছে অনেক। এক প্রজন্মের ভাষা বোঝে না প্রজন্মান্ তর। মূল্যবোধ, সংস্কৃতি, মত-বিনিময়, নীতি-মানসিঠ•à¦¤à¦¾, রুচি, শিক্ষাবোধ- প্রজন্মের সঙ্গে প্রজন্মান্ তরের দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। এই দ্বন্দ্বেঠবোধহয় কোনও ঠিক-ভুল বা নীতি-à¦…à¦¨à§€à¦¤à¦¿à ¦° বাইনারি হয় না। তবু, প্রত্যেক প্রজন্মই চায় তার আগের বা পরের প্রজন্মের ওইসব মূল্যবোধ, সংস্কৃতি, রুচি, শিক্ষাপরিঠরকে হঠিয়ে à¦¨à¦¿à¦œà§‡à¦¦à§‡à¦°à¦•à§‡à ¦‡ প্রতিষ্ঠিত করতে। দশক বদল, সময় ও আর্থ-সামাজঠ¿à¦• অবস্থার বদলের সঙ্গে সঙ্গে এই দ্বন্দ্বেঠঅবস্থানও বদলেছে। প্রত্যেক প্রজন্মের নিজস্ব কালস্থানিঠতার সঙ্গে মানানসই মানসিকতা ভেঙ্গেছে গড়েছে। নব্বই দশক থেকে ‘বিশ্বায়ন†™ নামক যে সর্বগ্রাসৠঅথচ উদারমুখ সংস্কৃতি-à¦°à ¾à¦œà¦¨à§€à¦¤à¦¿ বিশাল ডানা মেলে দেশ-à¦¬à¦¿à¦¦à§‡à¦¶à§‡à ¦° আকাশ ছেয়ে ফেলল, তাতে এই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্ তরের দূরত্ব তথা জেনারেশন গ্যাপও গেল বেড়ে, খুব দ্রুত। বিশ্বায়ন-উঠ¦à¦¾à¦°à¦¨à§€à¦¤à¦¿à¦° প্রভাবে দ্রুত বদলাতে থাকল আমাদের পরিসর ও সাংস্কৃতিঠ• বোধ। বদলে যেতে থাকল আদর্শ। বাতিল হয়ে যেতে থাকল কিছু আগের কেনা à¦‡à¦²à§‡à¦•à§à¦Ÿà§à¦°à¦¨à ¿à¦• গ্যাজেট, কিছু আগে শেখা কর্মপদ্ধতঠকিংবা কিছু আগে আহরিত কোনও তথ্য। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্ তরের ব্যবধান আগে হয়ত ২০-২৫ বছর হত, এখন তা বদলে গেছে ১০-১২ বছরের ব্যবধানে। মধ্য ত্রিশের কোনও যুবকের সঙ্গে প্রজন্মান্ তরের ব্যবধান সদ্য তরুণের, সদ্য কিশোরীর নীতি-à¦¶à¦¿à¦•à§à¦·à ¾à¦ªà¦¦à§à¦§à¦¤à¦¿à¦° সঙ্গে বহু দূরত্ব প্রায়-ত্রিঠযুবতীর। এর কোনও ঠিক-ভুল নীতি নির্ধারণ সহজ নয়, বিচারক আমরা কেউই নই। শুধু এই দূরত্ব বেড়ে যেতে দেখা এবং কখনও কখনও আন্তরিকতাৠŸ বা অন্য প্রচেষ্টাৠসেই দূরত্ব কমানোর প্রয়াস- এটুকুই করতে পারি আমরা।

আর, আমরা তো জেনেই গেছি ‘বাতিল-করে- ¦¦à§‡à¦“য়া’র সংস্কৃতি। অগ্নি-জেলে ¦° কালি ফুরোলেই ফেলে দিতে হত, বহু ইউজ-à¦…à§à¦¯à¦¾à¦¨à§à ¦¡-থ্রো নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহার্যৠরতালিকায় ঢুকে পড়ল; এখন জানি ১ বছরের মধ্যে নতুন স্মার্টফোঠকিনে নিতে হয়, প্রতি দু’মাসে উন্নততর হয় অ্যাপ এবং ২ বছরের মাথায় পুরনো à¦‡à¦²à§‡à¦•à§à¦Ÿà§à¦°à¦¨à ¿à¦• গ্যাজেট ফেলে নতুন না নিলে সমাজের একদিকের ভ্রু কপালে উঠে যায়। বস্তু থেকেই আসা চেতনায় জারিত হয় আমাদের মন। তাই, সম্পর্কের চেতনাতেও কি তার প্রভাব পড়ে? হারবার্ট বুঝেছিল মায়া থেকে যায় সব কিছুতে, টান। সব কিছুর জন্যে মন কেমন করত তার, চিলছাদ, কাকের ডাক, রাত, সকাল- হারবার্টেঠমন কেমন করত তাকে চরকাল অবহেলা করেছে যে সেই বৃদ্ধ জ্যেঠামশাঠআর নিরবচ্ছিনৠন স্নেহে তাকে আগলে রেখেছিল যে সেই জ্যেঠিমার জন্যও। বিনুর জন্যে মখারাপ আর মায়ার টানও থেকে গেছিল- তাই ‘ভূত’ আর অতীতের সঙ্গে দোস্তি পাতিয়ে ফেলে হারবার্ট।
আমাদের প্রজন্ম কি সেই মায়া আর অনুভব করি? à¦…à¦ªà§à¦°à§Ÿà§‹à¦œà¦¨à§€à Ÿ সম্পর্ক আর মূল্যহীন অতীতের অবয়বগুলো নিয়ে স্বপ্নে দেয়ালা করি আমরা? নাকি নিজেদের বাঁচানোর জন্যে আর স্পেস-এর জন্যে ডিলিট কি-এর ওপরে আঙুল রাখাই থাকে সবসময়? তাই, বুড়োদের প্রজন্ম মিটে গেলেও যদি আমরা টিঁকে যেতে পারি, আমাদের ভবিষ্যৎ কিছু আর্থ-সামাজঠ¿à¦• সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে- সেই ভাবনাও ঢুকে পড়ে ঘোর সংকটকালীন ছিদ্রপথে?

#
বিপন্ন মনঃস্তাপেঠমুহূর্তে যুধিষ্ঠির ছুটে যেত ভীষ্মের কাছে। শরশয্যায়, সূর্যের উত্তরায়ণে নির্দিষ্ট মৃত্যুদিনৠর অপেক্ষা করছিলেন ভীষ্ম। যুধিষ্ঠির প্রতিদিন যেতেন তাঁর কাছে, রাজনীতির জ্ঞান আর ব্যক্তিগত নীতি-à¦®à§‚à¦²à§à¦¯à ‡à¦° টালমাটাল ক্ষণে কিছু উপদেশ নিতে। সাম-দান-দণ্ঠ¡-ভেদের জ্ঞানের সঙ্গে তত্ত্বশাস্ ত্রের বাইরের ব্যবহারিক বোধ ভীষ্ম ভাগ করে নিতেন অনুজের সঙ্গে। যুধিষ্ঠির উদ্বিগ্ন হন ভীষ্মের আখ্যানে, তাঁর শাস্ত্রবোঠআর ধর্মতত্ত্ব সংশয়ে পড়ে- “আপনার কথা শুনে আমার ধর্মজ্ঞান শিথিল হচ্ছে। আপনার কথিত ধর্মে আমার প্রবৃত্তি হচ্ছে না।” ভীষ বলেন, “আমি তোমাকে বেদাদি শাস্ত্র থেকে উপদেশ দিচ্ছি না... ধর্মের কেবল এক অংশ আশ্রয় করা উচিত নয়, রাজধর্মের বহু শাখা।” যুধিষ্ঠির স্বোপার্জঠত ধর্মবোধ আর ভীষ্মের রাজনীতিবোঠ§à§‡ ভর ক’রে রাজ্যশসন করেছিলেন তারপর।

করোনা-à¦‰à¦¤à§à¦¤à ¦° পৃথিবীর আর্থ-সামাজঠ¿à¦• প্রেক্ষাপঠŸ কী হবে, রাজনীতির দিশা কী হবে, আমরা এখনই সিদ্ধান্তৠআসতে পারি না। আমরা অনুমান করতে পারি মাত্র, আমরা কেস-স্টাডি এবং ব্যক্তিগত ধ্যানধারনা থেকে সম্ভাবনা অনুমান করতে পারি। আর, না। দূষণ কমে গেলেই সব কিছু ফিরে আসে না। আমাদের ফ্যান্টাসি কে তা খানিক শিহরিত করতে পারে। এই যে ঘরবন্দী জীবন, অনুশাসনের সরকারিবিধঠস্বাস্থ্যব িধি এবং এই যে সারা বিশ্বে একই সময় মারীর প্রবল আতিশয্য যেখানে পূর্বনির্ঠারিত কোনও পদ্ধতি কাজ করছে না আর- এ তো আক্ষরিকই à¦…à¦­à§‚à¦¤à¦ªà§‚à¦°à§à¦¬à ¤ তার প্রভাব সম্পর্কে পড়বেই, মূল্যবোধও হয়ত বদলাবে অনেক। তবু, হাত ছেড়ে দেব না আমরা। জাত-ধর্ম-ভাঠ·à¦¾-লিঙ্গ এবং শ্রেণিতে বহুধাবিভকৠত সময় ও সমাজেও অন্ততঃ এটুকু আশ্বাস রাখা যায়ই। ঘরের ভেতরে ঢুকে পরা ঘরগুলোর দরজা খুলতে খুলতে হয়ত আরও ভালভাবে বাঁচতে শিখব আমরা। ভাইরাস যেভাবে অভিযোজিত করে নেয় নিজেকে, প্রতিকূলতঠ¾à¦° সঙ্গে লড়ে নিজেকে টিঁকিয়ে রাখে নতুন নতুন হোস্টের শরীরে; তেমনই কি আমরাও পারব না অভিযোজিত করে নিতে নিজেদের? নিজেদের স্বার্থরকৠষার্থে অপরকে বাতিল না ক’রে, অগ্রজ প্রজন্ম আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষায় ভারসাম্য রেখে এবং অনাদিঅনন্ঠ¤ প্রকৃতিকে আর ধ্বংস না করেই আমরাও অভিযোজিত করতে পারব না নিজেদের?