খরাদগ্ধ মুখ

মিছিল খন্দকার ও উল্কা



১।
কিষানির কুলা হাতে
ধান থেকে উড়িয়ে দিতে দেখেছি চিটা,
চিটার মর্মমূলে কোন সে ব্যথা
কার দোষে
মাটিতে লুটালে মন টের পাবে কি?
তুমিও তো মাটির সন্তান।
কুটিলতা বড় ভয় পাই,
যুবা বয়সী আধাপাকা বুদ্ধিতে।
সরলের সংজ্ঞা খুঁজি-
ও সরল, কীভাবে বুঝব তুমি কে?
তবে কি সুপুরির খোলে চড়ে
ফিরে যেতে হবে শৈশবে?
কে তবে টেনে টেনে নেবে?
খোল তো গাছের দান; যন্ত্রে চলে না।
আর শৈশব-
একটা স্মৃতি ছাড়া সবই বিস্মৃত,
সেটা বড় ভয়ানক;
তখনও মাছ হতে শিখিনি
কেননা জানি না সাঁতার,
নৌকায় চড়েছি দু’জন-
বন্ধু আর আমি
যখন মাঝ নদীতে
দেখি নৌকা ফুটা
যত সেঁচি তারও চেয়ে বেশি ওঠে পানি!
সে যাত্রায় কীভাবে বেঁচেছি
তা আজ বাদ থাক,
শুধু বলি-
ইদানীং সে রকম ভয়ানক আতঙ্ক নিয়ে চলি
কেনইবা নয়,
যতটা জেনেছি তাতে
পাঁজরের ইঁদুরে কাটে
à¦ªà§à¦°à¦¤à§à¦¯à§‡à¦•à§‡à ° নিজস্ব হৃদয়!
(পাদটীকা :
আমার সে বন্ধু এখন
আস্ত মৃগেল,
চাতুর্যও শিখেছে ঢেড়
প্রায়শই বলে শুনি-
মাছ হলে হতে হয়
গভীর জলের!)
২।
যদি ডুবে যাই প্রভু, যদি ভেসে উঠি ফের, যদি দেখি মিশছে সাগরে লাভাস্রোঠযতো আগুনের। তাতেই ভাসান, ভেসে ফেঁসে যাওয়া, মোহনায় গিয়ে নিজেকে পাওয়া। আলাপ-প্রলাঠªà§‡ মিশে যায় যদি, রগচটা নদী- কিংবা নদীতে মিশে যায় যদি যতো আলাপের স্ফটিক দানা, তাতে কি কথার শরবত হবে?
যদি দেখি কেউ আকাশে তুলে, ফেলে দেয় ফের- আর পড়ে গিয়ে ডাল ধরে বাঁচি, মানুষের ডাল। যদি তারই মধ্যে বাসায় পাখির, দেখি লেগে আছে পাখিদের ভিড়। আমাকে তাড়া ঠোঁটে তুলে দেয় জমা শস্য দানা। সাথে যদি তারা উড়তে শেখায়, দেয় ডানা ধার, ধার দেবে ডানা? তবে উড়ে উড়ে উড়ে যদি চলে যাই কোনো ভুল জনপদে, না না, পড়ে যাই যদি শিকারীর ফাঁদে। যদি সে মম হাত-পা বেঁধে ধরে নিয়ে যায়, বাজারের ভিড়ে বেচতে উঠায়। তাতে আমা এই পাখির জীবন, পাখি জীবনের সাধ মুছে যায়। মানুষ জীবনের প্রতি অতীতের আহ্লাদ, যদি ফিরে আসে! পাখি চোখে তবে চিকচিকে জল, যদি টলমলে জলে ভিজে গলে যায় পাখির জীবন, তবে কি প্রভু ডানাও যাবে গো ঝরে?
যদি দেখি বুকের মধ্যে শ্বাশত ইঁদুর, চিরায়ত বাঘ- যদি দেখি খুব লু হাওয়া ধায়, এদিকে পৌষের শেষে সমাগত মাঘ, মনের কেন্দ্রে কী জানি জাগে, কেন যে জাগে, কী কারণে জেগে ওঠে? যদি বাগানের সব ঝরে যাওয়া ফুল ফের বৃন্তে ফোটে, তারা হাসে আর দোলে বাতাসের কোলে। আমি তুলে দেই বুকের বাদাম, তুলে দিতে হয়, যেন সব জল- স্থলবিহীন, বয়ে নিয়ে যায় তরল কঠিন, অম্ল-মিঠা জীবনেরে কই? কোথায় নেবে? এই ভেবে ভেবে ভেবে, ঘুম দিই- যদি জলের ভাসানে, কে ধরে ভেজা গান! একি জলের কণ্ঠ? ঢেউয়ের তবলা বাজে? এরই মাঝে যেন পৃথিবীর মতো কোন নদী পাড়ে ভেড়ে মম দেহতরী? তাতে দেখি কোন কৃষকের বউ, নদী পাড়ে তার হৃদয়ের মৌ- বারবার আসে কলসি নিয়ে, ফিরে দেখে কলস খালি। যদি এমন ঘটনা ঘটতে থাকে, থাকে ঘটতেই, তাতে কি কৃষ্ণের থাকে প্ররোচনা? আমি কি তাকে তুলে নেব প্রভু- নেব কি তবে তুলে। সেই ভাল তবে, ভাল সেই হবে- ঠিক জীবনের ভুলে!

৩।
অগ্নি উদ্গিরণ কালে
কোনো à¦…à¦—à§à¦¨à¦¿à¦—à¦¿à¦°à¦¿à ° জ্বালামুখà§
বৃত্তাকার পরিভ্রমণ করে
হিংস্র-à¦•à§à¦Ÿà ¿à¦² লাভায় হয়েছি উজ্জ্বল।
আমার দারুণ অভিলাষ,
তোমাকে দেখাই এই মুখ
কতটা প্রাত সূর্যের মতো লাল!
পরিশিষ্ট সময়ে সে আগুন
চর্ম-মাংস খুলে
আমাকে করেছে নরকংকাল।
এবার হাড়ের ঝংকারে
দীর্ঘপথ পদব্রজের শেষে
যদি তোমার;
তোমাদের নিকটে ফিরে আসি,
তুমি বা তোমরাওতো চিনবে না
আঁতকে উঠবে, ভূত! ভূত!!
তবে কি আমার স্বতন্ত্র পরিচয়
ডাকাতি করবে অগ্নিগিরি? তুমিইতো প্রকৃত সুহৃদ, রে নারী!
কতবার তুলেছো আলতো
আদিবাসী ঘুম থেকে,
টেনে নিয়েছ আরণ্যিক প্রেমে।
অনাহূত মেঘে হারিয়ে গেলে চাঁদের চেরাগ,
ছুঁয়ে ছুঁয়ে চিনেছ সঠিক।
যে সময়, আমাকে ঠেলে দিয়েছে আগুনে
করেছে গোত্রহীন,
তুমিতো নও তার দলে, প্রতিনিধি।
তাই বলি,
যে কোনও প্রবাহে যদিবা নিকটে আসি ফের
পাশে দাঁড়িও;
সময়কে বিবাদি করে
নিয়ো মামলার প্রস্তুতি।
আর একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে জেনে নিয়ো,
রক্ত-মাংস জুড়ে করে দিতে পারবে কিনা সার্জার।

******


বন্ধুত্বেঠহাত ধরতেই সে দৌড় দিল অনন্তের উদ্দেশ্যে- পায়ে অদম্য অ্যাটমিক বিস্ফোরণ ঝাঁপিয়ে পড়ল ঈশ্বর থেকে হনুমান জন্ম নিয়ে। মাথায় তখন শুক্ল তিথির বাংলাদেশ তেড়ছা চোখে তারিয়ে বেড়াচ্ছে আমাদের মতো কিছু মজ্জা চেবানো কঙ্কাল। ধান ক্ষেত থেকে আন্তর্জাতঠক গ্লো সাইন বোর্ডে এই বন্ধুত্ব সাইরেন বাজিয়ে ঘুরে দাঁড়াল- দলা দলা সূর্য পকেট থেকে বের করে পুরে ফেলল মুখে তারপর এক একটা চিউইং গামের বেলুন গড়ে উড়িয়ে দিল বরফযুগের পাড়ে। ধূসর সংজ্ঞা গুলে সম্পৃক্ত উষ্ণতা টেনে নিল পানির বুক থেকে। তারপর বন্ধনী ভেঙে গুঁড়িয়ে খানিকটা পানি বানিয়ে দিল বাতাস আর অবশিষ্ট বাতাসায় দিল হরির লুট। কাণ্ড দেখে সুপুরির ঝরে যাওয়া ছোবড়া বদলে গেল নারকেলের বাদামী কলেবরে। স্থাবর অস্থাবরের প্রতিকূলে অনুকূল সমাবেশে বিভোর হয়ে পড়ল অসংখ্য বিকেল।
দাঁড় বাইবার বৈঠা সামলে এক শব্দ অন্যকে হঠাৎ দাবী করল বিপরীত বলে আর অকস্মাৎ সল্প পরিসরে মাথা চারা দিয়ে উঠল দূর্বা ঘাস। মাছেদের সাথে আঁশটে জীবনে অভ্যস্ত শুচিবাই চমকে উঠল আয়নায় চোখে তার জুতো কামড়ানি দাঁতগুলো দেখে। মাছেদের দাঁত ছিল না তাই হাঁটুজল ডিঙিয়ে শাস ছাড়ানো নারকেলের খোলস ত্যাগ করে বন্ধুত্ব উঠে এলো চোরাবালি আর পোড়া ইটের দেশে। তখন পায়ের বিস্ফোরণে প্রশান্ত সাগরের ঢেউ জেগেছে। উষ্ণ শীতল নুতন প্রাক্তন কোলাকুলি করে ভুতের মতো ভেদ করে যাচ্ছে একে অন্যের শরীর। কবিতার উল্টো পিঠের ঢেউটি দেখেছিল- একটা মিছিল দানা বেঁধে বেঁধে ক্রমশ দীর্ঘ হয়ে হারিয়ে ফেলছে সৈকতের হ্রস্ব বা ৯! মনে পড়ল à¦†à¦—à§à¦¨à§‡à§Ÿà¦—à¦¿à¦°à ¦¿à¦° মাথায় চেপে বন্ধুনী চেয়েছিল মুক্তার মালা হতে... তার গিলিগিলি হোকাস ফোকাসে অধিকার সম্বন্ধে পূর্বস্মৃঠি বড়ই অপমান জনক তাই বেশি কথা না বাড়িয়ে শীতল বর্ণমালা তুলে দিল জ্বালামুখৠর ঠোঁটে।
ক্লান্ত হয়ে পড়ছিল বন্ধুত্বেঠমধ্যমা, সাবধান করল তর্জনী- ভেঙে পড়বার সময় নেই মোটেই। পালং শাকের দেশে এখন মৌরি ফুল সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছে শুকনো লঙ্কা। সারা শরীরে একাধিক বীজ নিয়ে পাল্টে দিচ্ছে বেঁচে থাকার মানে। যদিও দৌড়তে দৌড়তে অনেক বীজ গড়িয়ে গেছে এদিক সেদিক অনেক বীজ লুকিয়ে পড়েছে মায়ানমার প্লেটের ফাটলে। সেখান থেকে তাকালে পুরো বাংলাদেশটঠ¾à¦•à§‡ অ্যামিবা মনে হয় যার থেকে কোষ ভাঙতে ভাঙতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে আক্ষরিক যৌবন। কলতলায় তাকে আছড়ে আছড়ে কাচলে খোল নলচে à¦›à¦¿à¦à§œà§‡à¦–à§à¦à§œà ‡ বেরিয়ে পড়ে দুটো হাত আর চারটে পা যাদের দুটো মাথায় দুটো বুদ্ধি দুটো ধর্ম, দুটো স্বর্গ, দুটো নরক, দুটো শালিক আর দুটো দল।
দুরন্ত দলাদলির মাঝে দাঁতহীন মাছেদের সাথে দেখা করলাম আবার, এখনো তারা ভেসে চলেছে শুধু ভেসে থাকার জন্য। সেই সুযোগে ডিম পাড়ার জন্য হূল ফুটিয়ে গেছে মশকীরা। মাছেরাও অবসরে হিসেব করে ফেলেছে সরে গেছে কতো জলের স্রোত, ছায়া রোদ্দুর আর হাওয়া। এই জলে যারা হাত ধুয়ে গেল তাদের থেকে কিছু বন্ধুত্ব খুলে তলিয়ে গেছে অজান্তেই। কবি তার কবিতায় শেষ শব্দের শেষ অক্ষরটা লিখতে গিয়ে ফুরিয়ে ফেললেন কালি শুধু পড়ে রইল দোস আর ভুল বানানের ইতিহাস। তখন মেঘেদের মিছিল এসে থেমেছে হাওড়া ব্রিজের মাথায়। কবি কলমের রঙ বদলালেন কেয়ারফুল স্পিন বোলারের মতো। নীলচে কালোয় ফিরে এলেন আবার মোহনায় দুই রঙ আধা আধা ছেপে টেনে দিলেন শেষ অক্ষর।
খর্ব হয়ে এল কবিতা ডালপালা টেনে গুটিয়ে মেহনতির মতো à¦–à¦¾à¦®à¦–à§‡à§Ÿà¦¾à¦²à¦—à §à¦²à§‹ সাজিয়ে ফেলল হাতের তালুতে। মেহেদী পাতা আঁকড়ে তখন শুঁয়োপোকা চাইছে বেড়ে উঠতে- বেলুন ফোলানো সূর্যের সাথে ওড়ার পাল্লা দিতে। কোনো ক্যামেরার ফোকাস নেই রেকর্ড করবার কেবল দূর্বা ঘাস চেপ্টে বসে সেসব দেখছে দুটো মজ্জা চেবান কঙ্কাল যারা ঈশ্বর নয়, হনুমান নয়, দোসর হতে চেয়েছিল।