ও শব্দার্জিত আলো

শৌভিক দে সরকার ও গৌরব চক্রবর্তী


অনুরণন

খুব বেশি স্রোত থাকে আমাদের স্মৃতির ভেতর
থাকে অস্পষ্ট কাঁচ,বালির ওপর ভেসে আসা কুহক

মৃত জলযান লোকশ্রুতিঠ° চিহ্নটি পার হতেই টের পাই
অজস্র পিঁপড়ের যাতায়াত


প্রথমে বিভ্রম হয়,ভাবি রক্তবর্ণ মেঘ
উন্মুখ প্রথাবিরুদ ্ধ উড়ে যাচ্ছে একা একা

ভাবি রোদের সন্দর্ভ
অন্য কারও প্রমাদবীজ নিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে প্ররোচনা

স্রোতের শুরুতেই দেখি পাগলবাড়ির স্মৃতি
খর রোদের ভেতর ফানুস ওড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে কয়েকজন
অন্ধত্ব,বশৠà¦¯à¦¤à¦¾ পার হয়ে
দূরবর্তী জলরেখার কাছাকাছি



পাঠক

ধরো, এভাবেও থেকে যাবে তুমি
সৃজনযাত্রা র শেষদিকে অচেনা বাঘের ভূমিকায়

পদস্খলনের পর দু’একটি লুকানো জুতোর মত
ঐশ্বর্য, ব্যর্থকাম বুদবুদ

ধরো এভাবেই থেকে যাবে à¦…à¦¤à¦¿à¦•à§à¦°à¦®à¦£à§‡à ° পর
পৃষ্ঠার গোপন অবসরে দর্শকের মুখোমুখি
স্মৃতিনির্ ভর রেলিঙের দিকে উড়ে যাওয়া ধুলোবালি

হাওয়ার বিরুদ্ধে জেগে ওঠা ঘাতকের মত
ব্যবহৃত ও প্রতিহিংসঠপরায়ণ


à¦•à§à¦·à¦¤à¦šà¦¿à¦¹à§à ¨

ঘুমের
সহজ অংশগুলি লিখে ফেলছ দ্রুত
বৃষ্টিচিহ্ নের আড়ালে উপড়ে আনছ আঙুল
ঊদ্ধযান, পোড়া চুলের বাস, বধ্যভূমির বালি
লবণের ঘাম আর জ্যোৎস্নাঠঅন্ধবিকার

অবনমনের
দিনগুলি এভাবেই ব্যবহৃত হয়
পরিকল্পনাঠীন অংশটি ক্রমশ আরও সাদা
আরও মেরুপ্রবন শ্বদন্তের নিজস্ব সীমারেখা

রসাতলের
দিকে চলে যাওয়া রাস্তাটি শুধুমাত্র অনিদ্রার



যাত্রা

যে প্রস্তুতিঠুলি আমাকে নিয়ে যাচ্ছে প্ররোচনার দিকে
আজ আবার আঙুলের বিপ্রতীপে জেগে ওঠা স্বেদবিন্ঠু
আজ আবার বিষদাঁত, যাদুর গহন উনুন

আমি কি গান? ক্ষেত্র গঠনের পাঠ্যক্রম?
আমি কি ছায়াবৃত? সন্ত্রাসেঠপুনর্বিন্য াস?

চৈত্রসংহাঠের শেষে ঝরে পড়ে তোমার অনুশাসন
সহজ প্রেমের পর ভুতগ্রস্থ খালের দিকে উড়ে যায় শালিক
আমি তাহলে পিছুটান, যুক্তির অগ্রাহ্য মধ্যবর্তী আয়ুরেখা
আমি তাহলে হত্যাদৃশ্য , উৎখাত ও সংক্রমণের ক্ষণস্থায়ৠঅক্ষর




যাপন হল একটি অন্তর্গত কৌশলের নাম-- এই সব ডানাদের আমি এক প্রশ্রয়লুব ্ধ পালক। আমার গতিপথের ওপর কিছু কিছু কবি তাদের সর্বগ্রাসৠঅক্ষরবোধ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর আমি তাদের কবিতার ভেতর, সেইসব শব্দপ্রতিম ার ভেতর নিজের আত্মার পরিণতি নির্মাণ করে রাখি, আড়ালে। তাদের অক্ষরবাসনঠ¾à¦° মধ্যে যাপন করি নিজস্ব আঙ্গিকে। তেমনই একজন কোনও কবি, যার কবিতার ভেতর নিষিক্ত হয়ে থাকে আমার অন্তর্গত স্তব্ধতার স্বেদ। তার এযাবৎ প্রকাশিত কাব্যগ্রনৠà¦¥à¦—ুলো আমার ব্যক্তিগত বিচরণ সীমার নিয়ন্ত্রিত দ্রাঘিমায় আমার মতো করেই আমাকে নিয়ে দৌড়ে বেড়ায় কবিতার পরতে পরতে। একটি স্তব্ধতা থেকে আমাকে কুড়িয়ে নিয়ে প্রতিলিপি করে রাখে আরও একটা নিমগ্ন ও আবেশিত স্তব্ধতায়। আমার নিজস্ব যাপনের পাঠপ্রতিকৠরিয়ালব্ধ গুঞ্জনের ভেতর আমার আত্মগমনের অনুবাদ করে রাখতে রাখতে আমাকে খুলে ফেলে অকারণ। আমি তার কবিতার ভেতর নড়ে ওঠা জীবিত শব্দগুলোর তাপমাত্রা অনুভব করতে পারি। তাকে নিজের ভেতর দিয়ে অনায়াস বয়ে যেতে দেখতে পাই।

এখন সেরকম একটা কবিতার বই যেন হুড়মুড় করে মাথার ভেতরে ঢুকে জাঁকিয়ে বসতে চায়। আমার স্মৃতির ভেতরটা হাতড়ে কিছু স্রোতের পাণ্ডুলিপি তৈরি করে রাখে। একটা শূন্যতার প্রাণকেন্ঠ¦à§à¦°à§‡ থাকা আমার ব্যক্তিগত নৈ:শব্দ্যকৠ‡ উচ্চারণ করে ওঠে। আমার অস্পষ্ট বয়সের ভেতর দিয়ে হেঁটে পার হতে চায় আমার বিগত জন্মফলের দিকে। ওকে আমি ঠেকাব কীভাবে? একটা কাল্পনিক জলযানের ওপর চাপিয়ে দিয়েছি নিজের নিয়তি। আমার প্রশ্বাসেঠভেতর খর হয়ে উঠছে সেসব কবিতার ওম। একটা স্বাদু গভীরতার ভেতর ডুবতে থাকা, এবং ডুবতে ডুবতে ভেসে উঠতে থাকা আমার অনুভূতিমাঠ²à¦¾à¦° ওপর প্রচ্ছদের মতো যেন সেই কবিতাগুলো দোলে। আমি এই দোলনের বাইনারি-সমৠ‡à¦¤ জিরো-à¦“à§Ÿà¦¾à¦¨à§‡à ¦° সামঞ্জস্যত ায় টের পাই যেন 'উন্মুখ, প্রথাবিরুদ ্ধ উড়ে' যাচ্ছি 'একা একা'। এই কবিতাটির ভেতরকার ছদ্ম-à¦‰à¦¤à§à¦¤à¦¾à ªà§‡à¦° আঁচ টের পাচ্ছি। এই কবিতাটি পড়লেই মনে হয়, আমি যেন কবির স্মৃতির ভেতর ঘাই-মেরে ওঠা সেই 'পাগলবাড়ি'। যেন কয়েক প্রজন্ম ধরে ওর স্মৃতির ভেতরেই দাঁড়িয়ে রয়েছি, আর ওর হাইপোথ্যাঠ²à¦¾à¦®à¦¾à¦¸à§‡à¦° ভেতরেই থমকে রয়েছে আমার বয়স!

ধরা যাক, এভাবেই থেকে গেছি! যেন এইমাত্র আমার স্মৃতির চারপাশে একটা অদৃশ্য গণ্ডি কেটে দিল কেউ! একটা বহমান à¦²à¦•à§à¦·à¦£à¦°à§‡à¦–à¦¾à ¤ তার ওপর রেলিং। তার ওপর হাওয়া। তার ওপর একজন হাওয়ামানুঠ--- একজন আত্মঘাতক। এই হাওয়াই তাকে রোজ নিজের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে। এই হাওয়ার ভেতরেই তার অনুদিত গোধূলির মতো ডুকরে কেঁদে ওঠা--- 'উড়ে যাওয়া ধুলোবালি'। এই কান্না বা বিলাপের গুঁড়োগুলো উড়তে উড়তে এসে আমার চোখেমুখে তার অস্তিত্বেঠ° পরত লাগিয়ে দেয়। আর আমি সেই পূর্ববর্তৠ'পাগলবাড়ি'-র হয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থেকে সেই অস্তিত্বগৠà¦²à§‹, তার গত জন্মগুলো, অন্তর্বর্ঠী স্মৃতির গুঞ্জনগুলৠ‹ আগলে রেখে যাব--- 'এভাবেই থেকে যাবে' একটা স্রোত, আমাদের স্মৃতির ভেতর দিয়ে গড়িয়ে যাওয়া কুহকের বিস্তার। কবিতাটি পেয়ে বসেছে আমাকে। আমার মাথার মধ্যে ভর করে থাকে কবি। আমার কল্পনাগুলৠ‹à¦•à§‡ নিপুণভাবে আঁচড়ে দিয়ে যায়। কিলবিল করে ওঠে ওর অক্ষর সমেত আমার স্নায়ুর ভেতরে।

'ঘুমের সহজ অংশগুলি' কে যেন লিখে ফেলছে দ্রুত। 'বৃষ্টিচিহৠনের আড়ালে উপড়ে' আনছে আঙুল। 'রসাতলের দিকে চলে যাওয়া রাস্তাটি' পড়ে আছে 'শুধুমাত্র অনিদ্রার' স্মৃতি নিয়ে। মনে হচ্ছে, যেন আমার মাথার ভেতরে যে সব লেখাগুলো ঘটতে থাকে প্রতিনিয়ত, প্রতিলিপির মতো বাড়তে থাকে একের পর এক--- সেই সব লেখাগুলো যেন সবাই একে অপরের গায়ে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। আর কবি সেগুলো আমার মাথার ভেতর থেকে ঘুমন্ত অবস্থাতেই ছিনতাই করে এনে লিখে রাখছে কোট-আনকোট। আমি একটা 'à¦‰à¦°à§à¦§à§à¦¬à¦—à¦¾à¦®à €' চেতনার সন্তরণের ভেতর রিপিট হয়ে চলেছি। আমার বাস্তব ঘেঁষে একটা পরাবাস্তবত ার ছায়ার মধ্যে লিপিবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে জনৈক 'ঘাম'। একটা ঘুমহীন সেতুর দু-প্রান্তৠরাখা দু-টো আলোর টুকরো যেন পরস্পরকে একটা অজানা অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য টানছে। আমার 'স্মৃতির' ভেতরেও টান পড়ছে তার। আমার এই সমস্ত এলোমেলো ছুটে বেড়ানোর ছুটনাঙ্ক একটি ঘুমহীন কুয়াশার নাব্যতার অন্তরাত্মঠর মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। আমার এক-শৌভিক পরিমাণ বোধ ও বোধের গ্র‍্যাভিঠŸà§‡à¦¶à¦¨à§‡à¦° পারস্পরিক ওঠা-à¦¨à¦¾à¦®à¦¾à¦—à§à ²à§‹ একটি অনিদ্রাপ্ঠসূত উষ্ণতার দিকে তলিয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে--- যেদিকে অনিদ্রালবৠধ এই 'রসাতলের' পথনির্দেশà¥

একটা ফুরফুরে নদী আলোর ভেতর বাঁক নিচ্ছে। মাটিতে, নিজের ছায়ার ভেতর থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে গাছ। একটা পথ, চলতে চলতে নিজের ভারেই গড়িয়ে গেছে আরও সামনের দিকে। আমি কখনও একটি কবিতার ভেতর আবার কখনও তার ভেতরকার শব্দগুলোর গায়ে গায়ে, কখনও তার নির্মাণের à¦†à¦²à§‹à¦•à§‹à¦œà§à¦œà§à ¦¬à¦² শূন্যতায় নিজেকে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। একেকটা অক্ষরের ঝাপটায় যখন আমার ভেতরের à¦•à¦¬à¦¿à¦¤à¦¾à¦—à§à¦²à§‹à ° আধানমুক্তঠ¿ ঘটে যায়, তখন নিজেকে চিনতে অসুবিধে হয় খুব! তখন ভাবি, 'আমি কি গান? ক্ষেত্র গঠনের পাঠ্যক্রম? / আমি কি ছায়াবৃত? সন্ত্রাসেঠপুনর্বিন্য াস?'--- অতএব একটা শূন্যতায় ছায়া আমাকে তাড়া করে বেড়ায়। একটা পরোক্ষ গানের স্বরলিপির আওতায় খুলতে থাকে আমার অবয়ব। আমি একটি ফুরিয়ে যাওয়া ধ্বনির প্রতিফলনেঠনতুন পাঠ্যক্রম যেন। যেন একটা বর্ণনাতীত হত্যাদৃশ্য ের কোরাস হয়ে উঠেছি আমি অথবা তার পুনর্বিন্য াস। 'চৈত্রসংহাঠ°à§‡à¦° শেষে ঝরে পড়ে তোমার অনুশাসন/ সহজ প্রেমের পর ভূতগ্রস্ত খালের দিকে উড়ে যায় শালিক/ আমি তাহলে পিছুটান, যুক্তির অগ্রাহ্য মধ্যবর্তী আয়ুরেখা/ আমি তাহলে হত্যাদৃশ্য , উৎখাত ও সংক্রমণের ক্ষণস্থায়ৠঅক্ষর'--- আমি একটি 'ভূতগ্রস্ত' শূন্যতার কথাই ভাবি--- আবার সেই শূন্যতা! এই শূন্যতার পিছুটান। তার ভেতরকার à¦…à¦•à§à¦·à¦°à¦¸à¦‚à¦¶à§à ²à§‡à¦·à§‡à¦° কথা ভাবি। ভাবি, একটা প্রাপ্তবয়স ্ক অন্ধকারের ভেতর হাতড়ে বেড়ানো একটা জনপদ। তার সংক্রমণ। তার আয়ুরেখা। তার মৃত্যু। এবং তার মৃত্যুপরবর ্তী অনুশাসনের কথা। কীভাবে একজন কবির কবিতা এবং তার অক্ষরসাধনঠ¾à¦° মাধ্যমে অপর একজন মানুষ তার নিজের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ে। থামে। ঘুরে তাকায়, দেখে নেয় একবার নিজের দিকে। কীভাবে একজন কবির উচ্চারণের আভায় একজন অন্য মানুষ তার নিজের হৃদয়ের ভেতর নড়ে ওঠা বাতাসের স্পর্শ পায়। কীভাবে কোনও কবির কবিতার ছোঁয়াচ আমার আত্মার মধ্যে কুণ্ডলী পাকিয়ে ওঠা কবিতার শিরদাঁড়ার গিঁটে গিঁটে সংক্রমণের কাঁপন ধরিয়ে দেয়! আর আমি আমার যাপনের বাইরে ও ভেতরে বেড়ে ওঠা একটা সমর্পণের দিনলিপি ছুঁড়ে দিতে চাই নিজের নির্মিতির দিকে।