মা কে নিয়ে আমার কোনো
আদিখ্যেতা নেই। একদম
নেই। যেমন অন্যদের
থাকে, কাব্যকথা, শুধুই
মাকে কেন্দ্র করে অখন্ড
শৈশব, আবর্তিত কিছু
কৈশোর কিংবা গোপন
নির্ভরশীলতার কোনো
বিরহী যুবতী দুপুর। না
আমার ওসব কিচ্ছু নেই।
আমার মা কি তবে ফেলে আসা
যুগের সামন্ত পরিবারের
কেবলই জৈবিক
জন্মদাত্রী, অতঃপর
একান্নবর্তী পরিবারে
হারিয়ে যাওয়া অচেনা
মানুষ কিংবা
পুঁজিবাদের বিকাশে
ব্যক্তিস্বাতন্ত্রনায়
আচ্ছন্ন অনাগত কালের
নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত
কোনো বিচ্ছিন্ন সত্তা?
না, এর কোনটাই নয়।
কিন্তু, তবু আমার মাকে
নিয়ে আমার কোনো
আদিখ্যেতা নেই। আমার মা
কোনদিন খুব আদর করে
মুখে ভাত তুলে খাইয়েছেন
আমার মনে পড়েনা। আমার
স্মরণ অতীতে নেই তিনি
খুব লক্ষীমনি সোনামনি
বলে সোহাগ করে কাছে
ডেকেছেন কিংবা বা আদৌ
কোনদিন ডেকেছেন কিনা!
মাঝে মাঝে আমার
জীবনসঙ্গী শান্তনু বলে
তোমার মধ্যে একটা
‘মা-ভীতি’ আছে।
‘মা-ভীতি’? হ্যা ভীতিই
বোধহয় বলে একে।
সারাক্ষণ সারাবেলা
ভিতরে জেগে থাকা
অন্তর্গত এক পাহারাদার,
আমার মা। যেখানে যাই
যতদূরে- তাড়া করে ফেরে
সে। কোথায় পড়েছিলাম
যেন? হ্যা আবদুল মন্নান
সৈয়দ- ‘যেখানেই আমি যাই
দুটি নির্নিমেষ চোখ
পিছনে ছুটছে, পিছলে
পড়ছে না একবারও। সরে
যাচ্ছে না, এমনকি পলক
ফেলছে না কখনো, যেন
মানুষের চোখ নয়।’
(মাতৃহননের নান্দী
পাঠ)
স্মৃতিভ্রষ্ট
শৈশবটুকু থাক, কৈশোর
থেকে বলি। সেই বোধ জাগা
কৈশোরে ধীরে ধীরে যুবতী
হয়ে উঠার পথে মা মানে
আমার কাছে কড়া শাসন- চুল
কেটে ফ্যাশন করা যাবে
না, শ্যাম্পু দিয়ে
‘ফিরিঙ্গি’ উড়িয়ে নয়
(শ্যাম্পু করা উড়ু–
উড়ু– চুল প্রসঙ্গে
শব্দটা মার নিজস্ব
প্রয়োগকৃত) তেলে চপচপে
করে রাখতে হবে চুলের
গোছা। কাকডাকা ভোরে ঘুম
থেকে উঠে পড়তে বসতে হবে,
কারো চিঠি এলে খাম না
খুলে আগে মায়ের হাতে
দিতে হবে। রবিবার
সাপ্তাহিক নাটক ছাড়া
টিভি দেখা যাবে না।
রাস্তার ধারে জানালাটা-
যেখান দিয়েই একটুখানি
মুক্তির আবাহন নিয়ে
টুকটাক মুগ্ধ চোখ আর
মোহময় শিস ভেসে আসে
সেটা একদম খোলা যাবে
না। কিসে হ্যা? উঠতি
বয়সটাতে কিসের সঙ্গী
সাথীদের মতো ফ্যাশন! গজ
কাপড় কিনে বানিয়ে দিতেন
বুকে কুচি দেয়া ফ্রক,
যৌবনোদগমন গোপন করে
রাখার জন্য দমবন্ধ
সেমিজ, যেগুলো পরতে
পরতে নিজেকেই একসময়
অপরাধী ভাবতে থাকতাম,
কেনো বেয়াড়া বুকগুলো
বেড়েই চলছে! মা যে এবার
দরজায় ও দাঁড়াতে দেয়
না। যেদিন প্রথম
যৌবনবতী হলাম- ১১ বছর ৮
মাস বয়স আমার।
ঋতু-¯্রাবের রক্তে
ভীতসন্ত্রস্ত আমি যখন
যখন ‘মা’র সামনে
দাঁড়িয়েছিলাম- খুব মনে
পড়ে মা আমার জল টলটলে
চোখের দিকে তাকিয়ে
সামান্যতম সহানুভূতি
নয়, মাথায় মস্ত এক ঠুয়া
দিয়ে বললেন- কদিন ধরে
খুব তেঁতুলের ভর্তা
খাওয়া হচ্ছে না? হ্যা
তখন এটা এক কমন ট্যাবু-
টক খেলে ঋতু¯্রাব বেশি
হয়। আমার সঙ্গী সাথীদের
কারো পিরিয়ড হয়নি, কেনো
এতো কম বয়সে আমার হলো?
এটাও আমারই অপরাধ।
সমস্ত দৌড়ঝাপ, টক
খাওয়া-খাওয়ি বন্ধ।
অবরুদ্ধ আমি সেবার
কয়েদী হয়ে উঠলাম। শিকলে
বাধা হাত পা-শারিরীক
কষ্ট আর মানসিক
যন্ত্রনায়
বয়সন্ধিকালের কী দুঃসহ
সময় আমার। ঠিক তখন
একদিন অফিস শেষে মা
আমার জন্য নিয়ে এলেন এক
পোটলা হোমিওপ্যাথি
পাউডার, চুপি চুপি হাতে
নিয়ে বললেন- রোজ সকালে
একটা আর রাতে একটা খাও।
ব্লিডিংটা কম হবে।
ব্যাথাও কমবে।
প্রথমবার-প্রথমবার আমি
মায়ের চোখে যেন মমতার
ছায়া আবিষ্কার করতে
সক্ষম হলাম।
কিন্তু সেই একবারই,
আবার স্কুল আবার
পরীক্ষা, পরীক্ষার
রেজাল্ট, ক্লাসে
ফার্স্ট হয়েও প্রগ্রেস
রিপোর্ট নিয়ে বাড়ি
ফিরতে ভয়। কোনদিন মা কে
খুশি করতে পারিনি,
কিচ্ছুতে পারিনি।
ইংলিশ ২য়পত্রে নাম্বার
কম কেন? গণিতে তো তোমার
মতো এতো খারাপ করার কথা
নয়! মার জেরার সামনে
নিরুত্তর মুখে বুকে
ধড়াস আর হাঁটু ঠকঠক।
এখনো কী থেমেছে সেই বুক
ধকধক হাঁটু কাঁপা?
মায়ের তাড়া করা চোখ
আমাকে সর্বক্ষণ পাহারা
দেয়,কোথায় কখন পিছলে
যায় পা। মূহুর্তের জন্য
কোনো অন্যায়ে নত করি
মাথা। তারপরও যে
অন্যায়গুলি করে ফেলি
সাহস করে টুকটাক, অতল
ভয়ে তলিয়ে যেতে যেতে
কেবল মায়ের চোখজোড়াই
তাড়া করে ফেরে- মা জেনে
যাবে না তো? তাবৎ পৃথিবী
শাস্তি দিক আমাকে, তবু
আমার মা না জানুক।
আচ্ছা, মা জানলে কী হবে?
এই বয়সে দু সন্তানের
জননীকে কী শাস্তি দেবেন
তিনি? সেই ছোট্টবেলার
মতো চুলের গোছা ধরে
বলবেন- কেন করলি এ কাজ?
কেন করলি? না নিশ্চয়ই
বলবেন না। আমি ঠিক
কল্পনা করতে পানি মুখে
এক অমোচনীয় অমাবস্যা
নিয়ে কিচ্ছু না বলে চলে
যাবেন তিনি। মার এই
কিচ্ছু না বলাটাতেই
রাজ্যের যত ভয় আমার।
মার বকা, মার চুলের মুঠি
ধরা সেসব পাট তো চুকে
গেছে কৈশোরেই, তারপর
থেকেই শুরু হয়েছে মায়ের
কিচ্ছু না বলা। মায়ের
সেই কিচ্ছু না বলা যেন
কবরের নিস্তব্ধতা,
অসহনীয়-ভয়াবহ। যেন
আমার মা নেই তার
অস্তিত্ব নিয়ে,এমনই
ভয়াবহ দুর্বহ দু:সহ
ভয়াবহ সেই কিচ্ছু না
বলা।তখন বোধহয় মা কেন
আমার চুলের মুঠিটা ধরে
টেনে দেয় না একটিবার!
আমি ব্যাথায় ককিয়ে উঠে
জেনে যাই আমার মা আছেন,
আমার মা আছেন বাতাসের
মতো অনিবার্য আবেষ্টন
হয়ে আছেন আমার
চারপাশে।
এখন মাঝে মাঝে মায়ের এই
চুলের মুঠি ধরাটা খুব
মিস করি আমি ইদানিং, যখন
জীবনের ঘরদোরে সহ¯্র
তাড়া, লেখার, পড়ার,
বাচ্চাদের পড়ানোর,
রান্নার আর যখন
হাঁফিয়ে উঠি
জীবনযুদ্ধে ক্লান্ত
তখন বোধ হয়, ভোরের ঘুম
থেকে চুলের গোছা ধরে
টেনে উঠিয়ে পড়তে বসানোর
মতো-মা যদি এসে চুলের
গোছা ধরে বলতেন-
হাঁফাচ্ছিস কেনো, সামনে
তো দীর্ঘসময় পাড়ি দিতে
হবে জীবনের! থামলে চলবে!!
ঠিক ঠিক আমি ফিরে পেতাম
কৈশোরে পরীক্ষার পড়া
তৈরি করার সেই স্পৃহা,
জীবনযুদ্ধে থেমে না
পড়ার স্পৃহা, হাঁফিয়ে
না পড়ার স্পৃহা।
মাকে নিয়ে আমার একদম
কোনো আদিখ্যেতা নেই।
একদম নেই, সেই শৈশবে,
স্মৃতিতে আবছা খেলা করা
শৈশবে,আমার খুব একটা
ভোরের কথা মনে পড়ে। ঘোর
বর্ষার ভোর। ঘুম ভেঙ্গে
জেগে দেখছি মাটির ঘরে
খাটের পা ডুবিয়ে জমে
যাওয়া বর্ষার জল সেচে
বালতিতে কাপড় চুবিয়ে
চুবিয়ে ঘর লেপছেন মা,
তারপর খুঁজে পেতে এনে
সারি করে ইট বিছিয়ে
দিচ্ছেন খাট থেকে দরজা
পর্যন্ত, আমি নামবো বলে,
১৮ বছর বয়সে শুধুমাত্র
মেট্রিক পাশ করে বিয়ে
হয়ে যাওয়া মা আমার।
মাত্র ২০ বছর বয়সে
প্রথম মা হওয়া মা আমার।
দুধ ক্ষীর সরের সম্পন্ন
ঘর থেকে অনটনক্লিষ্ট
পরিবারের বড় ছেলের বউ
হয়ে আসা মা আমার। ঘরে
পঙ্গু শ্বশুর সাতজন
দেবর ননদ আর একা
স্বামীর রোজগারের ঘরে
বউ হয়ে, ঘর গেরস্থালি
সেরে ২৫ বছরে তিন
সন্তানের জননী হওয়া,
বি.এ, বি.এড ডিগ্রী অর্জন
করা মা আমার। সংসারের
অসুবিধার জন্য একের পর
এক লোভনীয় চাকরি ছেড়ে
আসা মা আমার। শেষমেষ
প্রথম শ্রেণির
কর্মকর্তা হিসেবেই শেষ
করেছিলেন কর্মজীবন। আজ
নিজের দু সন্তান, এই
নানা নাগরিক সুবিধার
গেরস্থালির তাড়ায়
হাঁফিয়ে অসহ্য অবাক হয়ে
ভাবি আমার মা কি করে
পারলেন এতোটা, আমি কী
পারতাম? না কক্ষনোই না।
তাই তো মাকে নিয়ে কোনো
আদিখ্যেতা নেই আমার,
থাকবে কী করে, আমরা তিন
ভাই বোন, আমার বাবার
দু’পয়সার সরকারি চাকরি
কিছুই যে আমার মাকে
আদিখ্যেতার সুযোগ
দেয়নি। জীবন তার কাছে
মাটির চুলায় কাঁচা কাঠে
উননু জ্বালানোর মতো
আবশ্যকীয় দায়িত্ব।
নিজে চাকরি করে সংসারের
অনটন গুছিয়েছিল। মাটির
ঘর, কাঁচা উনুন থেকে
প্রথম শ্রেণীর সরকারি
কর্মকর্তা, তাঁর সবটুকু
যুদ্ধের সাক্ষী আমি।
একদিন এক বান্ধবীর
বাসায় গিয়ে দূর থেকে
দেখেছিলাম সেই
বান্ধবীর মা তার মেয়ের
খেলতে গিয়ে ছিলে যাওয়া
জায়গাটিতে আদর করে মলম
লাগিয়ে দিচ্ছেন।
দৃশ্যটা বহু বহু কাল
আমাকে ভীষণ কষ্ট
দিয়েছে। আমার মা তো
জানতোই না কোনদিন কোথায়
পড়ে গিয়ে আমার পা খানি
ছিলে গেছে বা হাতখানি
কেটে গেছে! এখন না
সম্পন্ন বয়সে টের পাই,
মার সেই ফুসরত ছিল কই,
মাটির উনুনে ফু দিয়ে
আগুন জ্বালিয়ে তিনবেলা
দশজনের পরিবারের
খাদ্যের আয়োজন করতে হতো
তাকে, পঙ্গু শ্বশুরকে
নিয়ম করে স্নান করাতে
হতো, তাঁর পায়খানা
পরিষ্কার করতে হতো।
তাকে খাইয়ে দিতে হতো, আর
দিন শেষে সন্ধ্যাবেলা
একহাতে ছোট ভাইটাকে
কোলে নিয়ে আরেক হাতে বই
নিয়ে পড়তে বসতে হতো। মা
কে নিয়ে আমার কোন
আদিখ্যেতা নেই, কিন্তু
দৃশ্যগুলো চোখে ভেসে
উঠলেই যে চোখ জলে ভরে
উঠে তা মোটেই আদিখ্যেতা
নয়, আত্মসমর্পণ। একাগ্র
অর্চনা চর্মচোখে দেখা
এক অলৌকিক ঈশ্বরীর।
মার ও যে কোনো
আদিখ্যেতা নেই আমাদের
নিয়ে। প্রতিবছর
দূর্গোৎসব করার মতো
সম্পন্ন ঘর থেকে এসে
আমার মা কাটিয়েছেন সেই
জীবন যে জীবনে পরণের দু
খানি শাড়ির একখানি শাড়ি
কোনো কারণে না শুকালে
ভিজেটাই পরে কাটাতে হতো
বেলা। মায়ের মুখে
শোনা,রিলিফের সাদাথান
প্রিন্ট করে এনে দিতেন
বাবা। সধবার পরিচ্ছদ
রংগীন শাড়ি কেনার
সামর্থ্য নেই বলে! আজ
ভাজ না খোলা শাড়ির
স্তুপ হাতে নিয়ে আমার
মমা গল্প করেন এগুলো।
না, তার বয়ানে আমি কোনো
আক্ষেপ পাঠ করি না।
যেনো এই স্বাভাবিক, সেই
দু শাড়ির জীবন ও, আজ
পরার সুযোগ না হয়ে উঠা
জমে যাওয়া ডজনখানেক
শাড়ির জীবন ও। মায়ের
দিকে তাকিয়ে ভাবি, নিয়ত
এই জীবনের পরিবর্তনের
দর্শন কোন দার্শনিকই
বা লিখতে পারবে এর চেয়ে
বিশ্বস্ত!
আমার মা ভীষণ চাইতেন,
তাঁর সন্তানদের জীবন
তাঁর মতো না হোক, যতোটা
কড়া শাসনে রাখলে
নিশ্চিত হয় আমাদের
ভবিষ্যত নিরাপত্তা
ততোটাই করতেন তিনি।
আমরা কী তাঁর প্রত্যাশা
পূর্ণ করতে পেরেছি? না।
মোটেই না। তবু আজ আমরা,
আমরা তিন ভাই বোন, পোস্ট
গ্র্যাজুয়েট
করেছি,কাকারা সব
প্রতিষ্ঠিত তার
সবটুকুই মায়ের জন্য।
আমার মা-আমি অবাক মানি
কী করে পুরো পরিবারের
বিপক্ষে দাঁড়িয়ে, সবার
বাঁধার মুখে আমাকে-
আমাদের বংশের প্রথম
মেয়ে সন্তানকে ঢাকায়
পড়তে পাঠিয়েছিলেন।
এতোটা জোর কোথায় কীভাবে
অর্জন করেছিলেন তিনি!!
যদি সবার আশংকা সত্য
করে দিয়ে পথ হারিয়ে
ফেলতাম আমি কী উত্তর
দিতেন তিনি পুরো
পরিবারের কাছে? না বোধ
করি তিনি এটা ভাবেনও
তিনি। তিনি বিশ্বাস আর
ভরসা রেখেছেন আমার উপর।
আমি কি পেরেছি তাঁর
বিশ্বাস আর ভরসার মূল্য
দি?ে পারিনি। মোটেই
পারিনি। নিজের পছন্দে
বিয়ে করেছি মায়ের
প্রচন্ড অমতে। কিন্তু
অবাক হয়ে দেখেছি কী
সন্তানসম ¯েœহে তিনি
কাছে টেনে নিয়েছেন আমার
জীবন সঙ্গীকে। আর আমার
আদিখ্যেতাহীন মা কে আমি
সত্যিকার অর্থে
আবিষ্কার করেছি নিজে মা
হওয়ার সময়। অনাহারে
নির্ঘুমে রাতের পর রাত
তিনি বসে থেকেছেন আমার
শিওরে। ইনকিওবিটরে
বাচ্চাগুলো রেখে আমি
যখন বাসায় আকুল কাঁদছি
আমি আমার মাথায় ঈশ্বরের
মতো মায়ের
¯স্নেহার্দ্র হাতের
ছোঁয়া পেয়ে ভেবেছি
কোথায় লুকিয়ে
রেখেছিলেন তিনি এতো
ভালোবাসা, অনুভব করেছি
অলৌকিক বোধে যেনো বা,
তার হাতের তালুর নীচে
আমার নির্বিঘ্ন
আগামী,কিচ্ছু হবে না
আমার,আমার সন্তানদের ।
আমার মাথায় হাত রেখে মা
কাঁদছেন। আর সান্তনা
দিচ্ছেন! আমার মা!! আমার
মহিয়সী মা, রাতের পর রাত
আমার সাথে নির্ঘুম পাড়ি
না দিলে আমার
প্রিম্যাচিউর যমজ
সন্তান দুটি বেঁচে উঠতো
কিনা জানি না। আমার মা,
আমার মহিয়সী মা, মাটির
ঘর থেকে তিনতলা বিল্ডিং
এ উঠে আসা মা। দৃঢ়
চিত্তে সংসার সমরাঙ্গন
পাড়ি না দিলে তিনি নিজে
কিংবা আমি আমি হতে
পারতাম কিনা জানি না।
হ্যা ‘মা’ কে নিয়ে
আমাদের কোনো আদিখ্যেতা
নেই, মা তো আকাশের চাঁদ
নয় যে কাব্য হহবে। আমার
মা যে সূর্য-তীব্র কঠোর
তেজরশ্মি। যার কারণে
প্রাণের অস্তিত্ব। আজ
আমি যা আমি যেটুকু তার
সবটুকুই শুধুই আমার
মায়ের।