পোকামাকড়ের মুখে তার
কথা শুনেছি, বাকলে,
পাতায় লেখা তার কথা
আকাশরেখায়...
দুটো কাঁটা পরস্পর কে
ভালোবাসছে আর আর উলের
বলটা লাফিয়ে লাফিয়ে
ঘুরে বেড়াচ্ছে, এই
পরিচিত দৃশ্য আদতে
বাহ্যিক, অন্তরে
নির্মাণ হচ্ছে, যেমন
সোয়েটার যেমন তোমার,
আমার, আর তিনি? হাঁটছেন,
চলছেন রান্না করছেন,
বাথরুম পরিস্কার, গাছে
জল দিচ্ছেন, জুতো
পরিস্কার করছেন, গুন
গুন করে গান গাইছেন আর
নির্মাণ এক নিরন্তর
প্রকিয়া। নির্মাণ আসলে
এক খেলা,যার নিয়ন্ত্রণ
শুধু তাঁর।
সকালের আলো গায়ে মেখে
প্রভাতী সংবাদপত্র
চলেছে সাইকেল ভ্রমণে ঘর
ও বাড়ির দিকে, কেটলি
থেকে ঢালা চায়ের কাপ
থেকে উড়ে যাচ্ছে ধোঁয়া,
ধর তুমি বেরুলে
দ্রূততায় অফিস বা কলেজ,
ধর টেবিল আর টেবিল,
চেয়ার ছড়িয়ে আছে যেভাবে
ছড়িয়ে থাকে
ব্রহ্মাণ্ড। ধর দুপুর
মুড়ি চিবোচ্ছে সাথে
বাদাম, আর পেঁয়াজ,
লঙ্কা। ধর আলো কমে আসছে
বিকেল ফিরে চলেছে ঘর,
আলো নিভে এলো, পৃথিবীর
বাতাসে স্নিগ্ধতা
স্পর্শ করছে। জুতো
ক্লান্ত হয়ে বেয়ে উঠছে
সিঁড়ি, ড্রয়িংরুম, আলো,
বনসাই পৃথিবীতে রাত
চেপে বসছে জমাট অন্ধকার
নিয়ে ... তিনি হয়ত
অন্ধকার - ব্যথাগুলো
পাশাপাশি গোল হয়ে বসা,
আঘাতের স্বরলিপি
অনুচ্চার, হয়ে পূর্ণ
আক… চেয়ে দেখ সে আকাশে
একটা একটা করে তারা
ফুটছে, ওরা আলো দেখাবে,
পথ চেনাবে। কিছুটা
আঁধার নিয়ে তিনিও তোমার
মত উদাস হবেন, যেভাবে
কবিতা, তিনি তো কবিতাও।
প্রকৃত অন্ধকার থেকে
আলোক যাত্রার সে পথে
তিনিই প্রথম ফুল বিছিয়ে
দিলেন, জল দিলেন
পিপাসায়,আর কষ্ট... আসলে
ধারণ করার কষ্টওতো
প্রভূত। তবু তিনি আলোও,
নইলে কি করে আঁধার কেটে
ফিকে লাল, গোলাপী, কমলা
হয়ে আবার ভোর এলো, গাছের
পাতায় যেই না শিশির এসে
পড়ল, শিখলাম আলোর
প্রতিফলন,হ্যাঁ
প্রতিসরণও। রুপো চিক
চিক করছে। তিনিই জল,
আধারে বদলে গিয়ে ঠিক
মানিয়ে নিচ্ছেন, মানাতে
হয় আদতে। তিনিই আলোর
কৌণিক অবস্থানের
সংজ্ঞা নিরুপণ করলেন।
কাটা ঘুড়ি থেকে উড়ন্ত
পোস্টবক্স তার ইশারায়
পেলব হল, হাতে নিয়ে দেখ
এক ফোঁটা অশ্রু,রেখা
ছুঁয়ে রেখাহীন দিগন্তে
বিলীন।
পর্বতের কাছে তিনি যেতে
পারেননি তাই পর্বত
এসেছিলো, তাঁর কাছে,
সমুদ্র ও। আকাশ তিনি
আছেন তাই, আবৃত করল
তোমায় আমায়,নইলে কত সে
আলট্রাভায়োলেট, ঝড়
ঝাপটার মুখে খড় কুটোর
মত ডুবেই যেতাম।
ভাগ্যিস তিনি ছিলেন।
আষাড়ের নীলাভ আকাশ থেকে
অশ্রু ঝরে পড়ল আমাদের
তুচ্ছ রুক্ষ
ত্বকে,তিনিও স্পর্শ করে
বললেন- চরৈবতি। আর অমনি
ট্রেন ছুটছে,বাস- ঝাঁকে
ঝাঁকে গতিময়তা এটমিক
বমবার্ট্মেন্ট হবার
আগের দ্রুততায়... তার আগে
অবধি তো সময় স্থির, কিছু
ঘটবে, আশঙ্কা...তিনি আছেন
এই আশ্বাস বাক্যে এমিবা
থেকে প্রাণের বিবর্তনে
মধুময় হয়ে উঠলো এই
নৈর্বক্তিক পৃথিবী।
বোবা পৃথিবী ক্রন্দনরত
অবস্থায় উচ্চারণ করলো-
‘মা’। দেখো মিছিল করে
এগিয়ে চলেছে আমাদের
স্বরবর্ণরা, ওই দূর
থেকে তিনি হাত তুলে
বরাভয় দিচ্ছেন, আলো
ক্রমে আসিতেছে, আলো
ক্রমে ...আলো...
আমি যদি দুষ্টুমি করে
চাঁপার গাছে চাঁপা হয়ে
ফুটি,
ভোরের বেলা, মা গো ,
ডালের ’পরে
কচি পাতায় করি
লুটোপুটি-
তবে তুমি আমার কাছে
হারো-
তখন কি, মা, চিনতে আমায়
পারো?
তুমি ডাকো ‘ খোকা কোথায়
ওরে’,
আমি শুধু হাসি চুপটি
করে।
আসলে এর উল্টোটাই ঘটে
থাকে,তবু তিনি হার, তিনি
জিত তিনি এক অখন্ড
ব্রহ্মাণ্ড হয়ে একটু
একটু করে সাজিয়ে
দিচ্ছেন আমাদের
বাসযোগ্যতা, মা’র হাত
ধরে হাঁটতে শুরু করলাম।
আজ একুশে ফেব্রুয়ারি।
মাতৃভাষা দিবস। ঐহিক
মায়ের ভাষাকে সামনে
রেখে স্মরণ করবে মা
থেকে ‘মা’-ভৈ - নির্ভয় পথ
চলার সূচনালগ্নে
প্রণাম এ পৃথিবীর সকল
মাকে। কারণ প্রসূতিসদন
থেকে অন্তিমযাত্রা
সড়কের একমাত্র লাইট
হাউস তিনিই।মা।