জলরংয়ের গভীরে
ডলফিন-১৪ জুন, ২০১৫
বৃত্তবন্দী-
নাভিশ্বাসে কর্দমাক্ত
নাভিমূল দেখি- খুঁজি
ম্যানগ্রোভ
একটা চিত্রল হরিণ
সেখানেই ফিরে আসার
কথা-
আমি এবং সে, এক ঝাক পাখির
ভেতর নিজেদের শৈশব
খুঁজি-
অনবরত শব্দ করে যাওয়া
আমি এবং সে, বিপন্ন নদীর
মতো তাকিয়ে থাকি
উদীয়মান সুর্যের দিকে-
দৃষ্টি বিভ্রমে জানি,
কোথাও 'গ্রহণ- কোথাও
কম্পমান হতে থাকা
আমাদের বাসভূমে
টানাপোড়ন; ক্রমশ
বাতাসে দুষ্টু পালক
ওড়ে- মতান্তরে আমাদের
শব যাত্রার
কালে ভিন্ন এক নদীর কথা-
অথচ প্রতিদিন
প্রাতঃরাশে
একটা কুসুম দেখেই
বলেছি- তাকে, আমাদের
পশ্চিমে
এখনো সবুজ অর্কিড বেড়ে
ওঠে- মিথোলোজির মতো
কলহের ভেতর
রঙ্গন- অথবা কৃষ্ণচূড়ার
মতো করে বিকেলে অবসর-
শেষে
মলাটের ভেতর গল্প লেখা
হয়-
আমি এবং সে, ঘুম ঘুম চোখে
বলি- অগভীর রাত্রি এলে,
অপেক্ষায় থাকি- ফিরে
আসবে চন্দ্রমল্লিকা-
আমাদের বারান্দায়-
একটা রঙিন পাখি উড়বে-
উড়তে উড়তে নেমে আসবে
ঝালরময় পর্দায়-
প্রজাপতি হবে- হয়তো
বিপন্ন নদীর বুকে ভেসে
বেড়াবে ডলফিন-
একটা রূপকথার মতো করে,
আমি এবং সে,
ধীরে ধীরে হাঁটবো, কথা
বলবো-
কথা বলতে বলতে হয়তো
একদিন নিজেরাই
জলরং
এঁকে
নেবো-
নির্ঘুম রাতের
ধারাপাত- ১৫ সেপ্টেম্বর
২০১৪
১
নির্ঘুম রাত;অথচ বেসুরো
হয়ে আছে সেই গ্রামোফোন
বৃষ্টির ছলকায় শুনি
বিস্তর আলাপ-
কারা কারা যেন পত্র পাঠ
শেষে বাড়ি ফেরে,
কোথাও কোন ঘরে কেউ
ভাবে-
একাকী তার; পুরোটাই
একাকী রাত
অনুভবে- নেই কিছূ, না আছে
তুমুল বৃষ্টিপাত-
২
নির্ঘাত তেমনি আমার
কষেরুকা,
নচেৎ
পুরো দস্তাবেজ শেষে
এখনো আমার বিষাদ;
বিরহ গলে গলে ক্ষীনতর
হয়ে যাবে
আমার সমস্ত ধারা পাত-
জেনো,
তেমনি তুমুল হট্টগোল
থেকে অদৃশ্য
হবো যেখানে থেমেছে
ভিনগ্রহের কক্ষপথ-
৩
অত:পর মিঁহি সুতোর টানে
সর্বস্ব ভূলন্ঠিত হলো
এবং
কালো পালকে ছেয়ে গেলো
অশরীরী সব-
বসন্তে বৃষ্টি এবং
আমি – ১৮ ফেব্রুয়ারী
২০১৪
১
বসন্তে এভাবে বৃষ্টি,
দমকা হাওয়াহীন কবিতা
খুলে ফেলি অবগুণ্ঠন এবং
দারুণ এক চা-
বলি- দুরে সরে যাচ্ছে,
যাচ্ছে তো পরিচিত
বারান্দা
একটা চড়ুই রোজ উড়ে বসতো-
কখনো দুটো,
একদিন তো অনেকগুলো, সভা
ছিলো বোধ হয়-
আজ নেই বৃষ্টিতে ভিজতে
গেছে বোধ হয়
বৃষ্টি শেষে পলাশ ঝরবে,
ঝরতে ঝরতে মনে হয়
অলিন্দের কোন এক শিরায়
ডুবে গেছে পথ-
বসন্তে এভাবে বৃষ্টি,
এক আধটু ছায়া ছায়া
খুলে ফেলি বর্ষাতি- এবং
ভিজতে ভিজতে শিষ দেই
- দ্যাখছি রঙ্গিন
বিষন্নতায় কীভাবে বদলে
যায় অনুভূতি
২
আমি বোধ হয় খুব ভালো
আছি,
নতুবা পশ্চিম দেয়ালে
ক্ষত দেখতে দেখতে-
এক আধটু খসে যাওয়া-
সুরকি আর বালু
জীবনে এমনি বহু, অথচ আমি
ভালো আছি-
খুব ভালো হয়- এমনি
মৃদুলয়ে
গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে
যাওয়া
এর পর এপিটাফের জন্য
তার বলা কোন কথা-
খুঁজতে খুঁজতে-
আদ্দিকালের সেই পুরোনো
সিলিং ফ্যান
ঘুরতে দেখে-
নিজেকেই নিজে বলা-
আমি বোধ হয় ভালো আছি,
সরীসৃপের মত যাপনে-
৩
নষ্টালজিক হবে না একদম,
বলেছি বহুবার-
জেনে রেখো, সাঁকোটা
পেরোলেই
একটা ঋণাত্মক সংখ্যা
ছোঁবে আমাদের-
ছোঁবে তো;
প্রায়শই ধুম লেগে
যাওয়া আড্ডায় নষ্ট কিছু
স্বপ্ন,
ডানা মেলে- অনেক
অপেক্ষায় কেউ কেউ
গুণতে গুণতে ক্লান্ত
হয়, আমরা পেছনে তাকাই
জানে সে তবুও
বৃশ্চিক হয়ে পড়া আমাদের
শাস্ত্রে কোন কথা নয়-
নষ্ট হয়ে যাওয়া নয়; তবুও
নষ্টালজিক একটা সংখ্যা
বটে-
বলেছি তো, তোমাকে এবং
তাকেও-
ঋণাত্মক হয়তো, পেছনে
সরে যাওয়া নয়-