“উফফ! কি লাগছে রে তোকে।
ঠিক সেই পাহাড়টার মত।”
“কোন পাহাড় আবার ?” “আরে!
সেই যে ভালো পাহাড়, যাকে
তোর্ষা খুব ভালবাসে।”
“সব তোর্ষারাই তো
পাহাড়কে ভালবাসে, খালি
একা তোর্ষা কেন?” “কই না
তো। তোর হয়েছে মেয়েদের
সম্বন্ধে খালি বাজে
ধারণা। মেয়েরা কি
হেলাফেলা নাকি? না
মানুষ না? এইজন্যেই তো
তোর কপালে মেয়ে জুটছে
না” “ভাল হয়েছে। জুটলে
তো তোর মতন হত।” “আমার
মতন হত মানে?” “ওই যে
রাতদিন খালি চলেছিস
পাহাড়। স্বপ্ন দেখিস
পাহাড়কে। পাহাড়ে
ছেলেরা যায় জানিস না?”
“কি? পাহাড়ে খালি
ছেলেরা যায়? সত্যি তুই
না! তুই খুব ব্যাকডেটেড
আছিস। পেপার-টেপার পড়িস
না নাকি? ফেসবুকে
স্ট্যাটাস দেখে জানিস
সব?” “তুই তো খুব পড়িস।
এত পড়ে তোর কি হয়েছে
শুনি?
সাইক্রিয়াট্রিস্ট
দেখা, নয়ত পরে যাকে বিয়ে
করবি সে পস্তাবে। খালি
ছেলেদের মত পাহাড় আর
পাহাড়। মেয়ে হয়েছিস।
কোথায় খালি নদী নদী
করবি তা না!”'
“আন্ডারএস্টিমেট করিস
না তো। ছেলেরাই যত জানে
পাহাড়ের কথা। পৃ্থিবীর
সবচেয়ে বড় পাহড়ের নাম
বল দেখি?” “আচ্ছা আমাকে
চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে?
তুই জানিস পৃথিবীর
সবচেয়ে বড় পাহাড়ের
নাম?” “আমি জানি বলেই
তোকে বলছি। তুইই তো
বললি, মেয়েরা নাকি শুধু
নদী নদী করার কথা, তাই
তোকেই প্রশ্নটা
করলাম।” “দাঁড়া বলছি,
আল্পস পর্বত।” “একদম হয়
নি, কেন হয় নি বলব না।
তবে জেনে রাখ শুধু,
পৃথিবীর সবচেয়ে বড়
পাহাড়ের নাম হল হিমালয়।
এবার তুই ভেবে বল,
মেয়েরাও ‘পাহাড়, পাহাড়’
কেন করে। যত বাজে কথা,
মেয়েরা পাহাড়ে চড়ে নি!
যাক গে, এবার বল তো দেখি
কোন পাহাড় নড়া চড়া করে
না?” “এ আবার কেমন
প্রশ্ন, কোনো পাহাড়ই
নড়াচড়া করে না।” “এইবার
হাসালি। সত্যি হাসালি!
সব পাহাড় যায়গা চেঞ্জ
করে, একমাত্র হিমালয়
ছাড়া। তাই হিমালয়
সবচেয়ে বড় পাহাড়। আর
আমার পছন্দ সেই
হিমালয়কে যে যুগ যুগ
ধরে নিজের
স্ট্যামিনাকে ধরে
রেখেছে। আরও ভেবে দেখ
হিমালয় বা আল্পস বা
কৈলাশ, এরা পাহাড় হলেও
চরিত্র বা বৈশিষ্ট্যে
একে অন্যের থেকে
আলাদা।” “তুই আসলে কি
বলতে চাইছিস আমি কিন্তু
কিছু বুঝতে পারছি না।”
“বলতে চাইছি আমার
হিমালয়কেই ভাল লাগে,
তাই তো সে শ্রেষ্ঠ
পাহাড়। তুই যেমন বললি
ছেলেরা পাহাড় করবে
খালি। এই পাহাড়দের মত
ছেলেদেরও চরিত্র
আলাদা। আর এই পাহাড়দের
জন্যই তো নদীরা সব সময়
রিনরিন করে বয়ে যায়
পাহাড়ের গা বেয়ে। পাহাড়
শুধু স্তম্ভ, নদীর বুক
ভেঙ্গে চৌচির করে দেয়
যখন ইচ্ছে হয়। আর তার
বয়ে চলার শব্দে ঘুম
ভাঙ্গে ভোরের সূর্যের।
রাতের চাঁদ শোনায় গান।”
“তুই সত্যি বড্ড
ভালবাসিস পাহাড়।” “যাক,
এইবার বুঝতে পারলি
তাহলে। জানিস তো, আমার
খুব সাধ এমন একটা
ছেলেকে বিয়ে করব তার
মেরুদন্ডটা হবে ঠিক
পাহাড়ের মত সোজা।
সকালের সূর্যর আলোয় সে
হবে উদ্ভাসিত। রাতের
জ্যোৎস্নায় সে স্নান
করবে। আমার
ভাবনা-চিন্তাকে,
ভাললাগাকে সমাদর করবে।
ঠিক যেমন করে হিমালয়
গঙ্গাকে। তাই তো নদীরা
অত লাস্যময়ী। চল না,
ঝগড়াঝাঁটি না করে তুই
হিমালয় হ, আর আমি গঙ্গা
হই। তুই মাঝে মাঝে সাহস
যোগাবি আমাকে কুলকুল
করে বয়ে চলবার জন্য।”
“ঠিক আছে, তাই হবে। আমি
তোকে আগলেও রাখব দেখিস।
কেউ তোকে ডিঙ্গোতে
পারবে না। আর এই গান
গেয়ে সবাইকে জানাবো
“জিস দেশ মে গঙ্গা বহতি
হ্যায়...জিস দেশমে গঙ্গা
বহতি হ্যায়” “সব
পাহাড়গুলো এমনি হলেই
দেখ আর কোনও ঝামেলা
থাকে না। তবুও কেন যে
এমন হয় না সবাই!”