হাত বাড়ালে ও কারো হাত
ধরিনা । ভীড়ের মধ্যে
একা একা ঘুরি , গটগট ।
তোমার জলে প্রতিদিন
দেখি সূর্যের আলমোড়া
ভাঙার গল্প ।ধূসর
দুপুরে খা-খা আকাশে
গাঙচিলের ডানা খসা
বিষাদ পতন ।তবুও বিকেলে
পাখির মা-গন্ধে ম-ম
বাসায় ফেরা !
ঘুমপাড়ানি গান থেকে উঠে
কখন না বলেই চাঁদের
দেশে ছাউনি ফেললো মা ।
আমি পথে প্রান্তরে ,
কাদা-মাটিতে , বাদী-
বিসম্বাদী রঙে নাকানি
চোবানি । মা খুঁজে ঘেমে
নেয়ে একাক্কার ! অভিমান
টালমাটাল ঘায়ে ঘায়ে ।আর
হায়রে কপাল ! চোখ তুলে
ওপরপানে তাকাতেই , "
মধুর আমার মায়ের হাসি /
চাঁদের মুখে ঝরে ....."
ওমনি চোখ ভরে সমুদ্র
জলতরঙ্গ বাজাতে লাগলো ।
গলা দিয়ে দলা পাকানো
লাভা জেহাদী হয়ে উঠলো
।ঠোঁট ফোলালাম । "
জানো, ক-ত্তোদিন তোমার
আঁচলের গন্ধ পাইনি !
তোমার দুই স্তনের বকুল
শয্যা আর অমৃত ঝরনার
অভাবে মরে গেল কিশলয় ? ওই
টানা দুচোখের শীতল, আহা !
মন আনন্দ আনন্দ ছায়ো ! "
আকুল হই অশ্রুর অঝোরে ,
" মাগো, আমি বড় ছায়াহীন
। "
মা শীতের ওম হয়ে ঘন হলো
পাশটিতে ।মিটিমিটি
হাসতে লাগলো ।চমকে দেখি
চাঁদ গলছে । গলে গলে ঝ'রে
নদী হয়ে ভাসছে । সাথে
মা-ও ! তখন-ই ম্যাজিকের
মত বদলাতে লাগলো
পারিপার্শ্বিক
।চারিদিকে সামগান আর
পারিজাতের মৃদুল সৌরভ !
" বাংলার মাটি বাংলার
জল / বাংলার বায়ু বাংলার
ফল.....", পৃথিবী জুড়ে
একুশে বসন্তের মাতাল
আলোড়ন ......
শায়র , তুমি আমার
ছেলেবেলার আত্মিক
বন্ধন ।তোমাতেই আমার
তাবৎ সমর্পন । আমার
গোপন গাছ-গাছালি , পাখ-
পাখালি, 'স্বপ্নোঁ কী
গলি'-র বে-জুবান সাক্ষী
তুমি ! অঘটন কথা বলি ,
একদিন কিছু
স্বতঃস্ফূর্ত রঙিন
পাখি আকাশে উড়ালে মশগুল
। ঠোঁটে তাদের রঙমশাল ।
আমার চোখেও দৃষ্টিসুখ
!
হঠাৎ পাখির ঠোঁট খসে
একটা মশাল আমায় দাহ্য
দিল ।ভয় পেয়ে কঁকিয়ে
উঠলাম । হাপুস কাঁদতে
লাগলাম ' মা-মা ' বলে ।
পুড়তে লাগলাম বুকপোড়া
প্রদীপের সলতের মতোই
দাউদাউ । যতো অস্থির হই ,
পুড়ি , মা ততোই স্মিত
হাসিতে ভরিয়ে তোলে
দশদিক । ফিসফিসিয়ে বলে ,
" কাঁদ সোনা , এভাবেই
কাঁদ ! উজাড় কান্না না
কাঁদলে , উপুড় ভালবাসা
না ঢাললে আমি তো ধরা দেব
না...."
মা ছাড়া আমি ভীষণ অসহায় !
মা কে আমার চাই- ই....তাই
দহন দিয়ে আকাশ
আঁকলাম...." নীলাকাশ
".....প্রদীপ গড়ি আর সলতে
পাকাই ....মাকে খুঁজে
পেলে দীপান্বিতার উৎসব
দেব....প্রতি মুহূর্তে
একমুখী আয়োজন......মায়ের
উদ্দেশ্যে রঙ্গোলী
সাজাই.....
জানি , খোঁজা এক আজন্ম
ক্রন্দন ! সমব্যথী ,
তোমার জলে ঢালি দু
ফোঁটা মা-খোঁজা নিবিড়
অশ্রু । হাত ধরো বন্ধু ।
শ্রাবণে প্লাবিত হ'য়ো ,
পুকুরের বন্ধন ছিঁড়ে
সুদূর নদীমুখী । আমরা
অনন্ত দুঃখ বুকে এসো , মা
খুঁজি । কেঁদে কেঁদে ।
ভালবেসে । পাগলের মতো
আত্মভোলা ভাবাবেগে.....
পবিত্র মন্ত্রের মতো
উদ্ভাসিত উচ্চারণ করি ,
" আ মরি বাংলা
ভাষা..."