পরীক্ষার খাতায় এতো এতো
শব্দার্থ লিখি,
পূর্ণমান ১০ পেতে এতো
এতো শব্দার্থ শিখি,
জপতে জপতে গলায় রক্ত
তুলি, তবুও কিছু কিছু
আউট শব্দ হঠাৎ
করেইআমাদেরকে ঘুমহীন
করে নাগালের বাইরে
থাকে। আমরা এসবের মানে
উদ্ধারে অপারগ হই। জনৈক
অভিজ্ঞ হেডমাস্টারও
তখন আমাদেরকে তেমন
সাহায্যকরতে পারেন না।
রাত নাই, দিন নাই, নতুন
নতুন শব্দের ঘোরে আমারা
মজে থাকি।
এই সব আউট শব্দ কেনো এতো
ঘোরলাগা দেয়!
হঠাৎ করেই দুই দুইটি
শব্দ আমরা আবিষ্কার
করি, আর নিষিদ্ধ শব্দ
দুটি আমাদেরকে পুলকিত
করে, কুহক জাগায়, আউলা
করে রাখে। আমরা ভাবি,
আরভাবতে ভাবতে কুহক
ছড়াই। আগ্রহ জমাই।
কুসুমবাগে-কল্পনায় বই
দেখতে যাই, আর গাঁদা
গোলাপ রজনীগন্ধ্যা
বেলিফুল মোড়া বিছানায়
নায়কনায়িকাজড়াজড়ি করে,
গান গায়, আর একটু কাৎ
হতেই কাট হয়ে যায়। আমরা
বিভ্রমে জড়াই। আউট বইয়ে
মজে থাকি। বন্ধুরা মিলে
ফিসফাস করি। বাসররাত,
ফুলশয্যার রাতে ঘুরপাক
খাই। মধুচন্দ্রিমা,
হানিমুনে ঘোরগ্রস্থ
হই। প্রেম নয়, বিবাহ
যোগ্য না-হয়েই,
শব্দার্থ না-বুঝেই
একেবারে সরাসরি আমরা
মজে থাকিবিবাহে, মজে
থাকি বাসররাত ও
ফুলশয্যার রাতে।
কেনো এতো বিনাশী কুহক
জমা থাকে শব্দের ভিতর!
২
এক ভোরে শুনতে পাই
অমুকের বেটি পেট
লাগাইছে। আবারও আমরা
নতুন শব্দের প্যাঁচে
পড়ি। টাসকি খাই। প্রচল
ধারণা দিয়ে কিছুতেই
কোনো কুলকিনারাকরতে
পারি না। শুনি আর
বেবুতা হই। নয়া শব্দ
আমাদের মাঝে কুহক
জাগায়। সাত গ্রামের ডাক
সুন্দরী সেতারাবুকে
আমরা শুধু আড়চোখে দেখি।
তারগুনগুন করা গান শুনে
গোপনে গোপনে প্রেমিক
হয়ে উঠি। টোল পড়া ধবধবে
গাল, কাজল আঁকা বিনাশী
চোখ, আর ঢেউ খেলানো
বুকের টানে মেকুর
হয়েঅষ্টপ্রহর মিঁউ
মিঁউ করি। সেতারাবুর
কাঁচভাঙ্গা হাসির টানে,
মেঘলা চোখের বিদ্যুৎ
বাণে, ছাপা শাড়ির ভাঁজে
ভাঁজে রূপের কলস উপুড়
হয়ে পড়ে।
আমরারূপগ্রস্থ হই,
দেহগ্রস্থ হই।
আর আমরা আবিষ্কার করি,
লজিং মাস্টারের সাথে
নিশীতরাতে ঘাটপাড়ে,
খালপাড়ে, টুঙ্গিঘরে,
জামতলায়, আমতলায়
অভিসারে গিয়ে আমাদের
সেতারাবুরচিকন ধবধবে
পেট মনু নদীর নতুন চরের
মতো জেগে উঠছে। সল্টু
লোকদের শব্দের মানে
খোলাসা হলে আমরাও কি
তবে সেতারাবুর জন্য
ভিনগাঁয়ের
লজিংমাস্টার হতে চাই?