অনন্তের মাঠের ’পরে
স্বপ্নবুড়ির ঘর। রোজ
সকালে অনন্ত দেখে সেই
ঘরের আঁতুর থেকে
বেরিয়ে, খুদে খুদে
স্বপ্নগুলো, বুড়ির চরকা
থেকে এক-একটি আইকেরাস’র
ডানা পিঠে লাগিয়ে উড়তে
চেষ্টা করছে। অনন্তর
হাসি পায়, হেসেও ফেলে।
করুণার দৃষ্টিতে
স্বপ্নগুলোকে দেখতে
থাকে।
বেশিক্ষন এক জায়গায়
অনন্ত স্থির থাকতে পারে
না। এটা প্রকৃতির নিয়ম,
ঈশ্বরের নিয়ম। খুদে
স্বপ্নেরা অনন্তকে
ভালবাসে, ছোট্ট ডানা
মেলে তার কাছে পৌঁছাতে
চায়, উড়তে থাকে তার
দিকে। পাশাপাশি উড়ে
বেড়ায়। অনন্তের সাথে
তাদের একটাই তফাৎ -
অনন্তের ডানা ঈশ্বরের
দান, আর তাদের ডানা
মানুষের। ঈশ্বর
উড়ুক্কু মানুষ পছন্দ
করেন না। তারাও সেই
আইকেরাসের মতই মুখ
থুবড়ে পড়ে মাটিতে।
অনন্তের কষ্ট হয়, সে ঠিক
করে একদিন এই মুমূর্ষু
স্বপ্নদের ডানা দেবে,
তার নিজের মতই
শক্তিশালী ডানা।
অনন্ত তাদের ডানা –
নিজের ডানা – দিয়েছিল।
চোখের সাম্নেই ডানাওলা
স্বপ্নগুলো উড়তে উড়তে
কোথায় যেন চলে গেল,
অনন্ত তাদের নাগাল পেল
না।
স্বপ্নের পেছনে চলতে
চলতে অনন্ত এসে পৌঁছায়
এক আজব পৃথিবীতে। দেখে
তার ডানার জোরে
স্বপ্নবুড়ি হয়েছে
অর্থবুড়ি, তার ঘর হয়েছে
কারখানা, স্বপ্নেরা
হয়েছে যন্ত্র, তাদের
পিঠে ধারালো, রুক্ষ
যান্ত্রিক পাখা।
অনন্তের সাম্নেই ধ্বংস
হল সেই পৃথিবী। লুপ্ত
হল অনন্তের সব করুণা।
দৃঢ় সে রক্তাক্ত
মরুভূমির ওপর দিয়ে
হেঁটে গেল নতুন এক
পৃথিবীর খোঁজে,
স্বপ্নবুড়ির খোঁজে,
স্বপ্নের খোঁজে...