যাদবপুর
বিশ্ববিদ্যালয়,
সেপ্টেম্বর, ২০১৪:
"ডানপিটেরা আজও
ভালবাসতে পারে"
অর্ক চট্টোপাধ্যায়
যাদবপুরের প্রাক্তনী
হিসেবেই শুধু লিখছি না,
লিখছি ছাত্র হিসেবে,
শিক্ষক হিসেবে, লিখছি
সময়টাকে কামড়ে ধরা আমার
বন্ধুদের জন্য যারা
শরতের কলকাতা থেকে
বসন্তের অস্ট্রেলিয়ায়
আমায় মিছিল মিছিল
উত্তেজনা পাঠাচ্ছে।
তাদের সংহতিতেই রইলো এই
লেখা। রোলকল যেখানে
কলরব হয়ে যায়!
লাঠির মুখে গানের সুর
নয়, এবার যাদবপুর দেখলো
কিভাবে গানের সুর লাঠির
মুখ নিয়ে আসে।
ছাত্র-ছাত্রীদের গান
ভেঙে দিল বহিরাগত পুলিশ
ও গুন্ডা বাহিনীর
তান্ডব। কিন্তু
যাদবপুর শুধু দেখেনি,
দেখিয়েওছে।
বিশে সেপ্টেম্বরের
বৃষ্টিস্নাত মিছিল
দেখিয়েছে যে রাজনীতি
মানে শুধু রাষ্ট্রের
ক্ষমতা প্রদর্শন নয়,
রাজনীতি মানে জনতার সব
কিছু থামিয়ে দেবার
স্পিরিটও বটে। সেই
জনতাকে লিড করেছে
ছাত্রছাত্রীরা,
বিভিন্ন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
থেকে। তাদের কোনো দলীয়
ঝান্ডার দরকার পড়েনি,
পড়বেও না। কারণ মে ১৯৬৮
থেকে সেপ্টেম্বর
২০১৪--স্বতস্ফুর্ত
প্রতিবাদের এক নিজস্ব
রাজনীতি রয়েছে। তাতে
কোনো দল বা সংগঠন লাগে
না।
দেশে নেই বলে যেতে
পারিনি কিন্তু একা
হেঁটেছি অনেকের
মিছিলে। মনে মনে তো
বটেই, পায়ে পায়েও। চোখ
ছিলো টিভিতে, মিছিলে
হন্টনরত বন্ধুদের সাথে
ফোনে কথা বলেছি এবং আর
কিছু করতে না পারায়
ফেসবুকে ক্রমাগত
স্লোগান তুলে গেছি।
কিন্তু 'বৃষ্টিমুখে'রা
পেরেছে।
আন্দোলন চলছে এবং তার
গতিপথ এই মুহূর্তে
অনুমেয় নয়। সেক্সুয়াল
সিকিওরিটির যে প্রশ্ন
থেকে এর সূত্রপাত তা
ছাড়িয়ে আন্দোলন এখন
অন্য মাত্রা পেয়েছে।
উপাচার্য পুলিশ ডেকে
আলো নিভিয়ে যে নাটকীয়
মহামুহূর্তে
ছাত্রছাত্রী পেটালেন
তাতে স্বাভাবিকভাবেই
যৌন হয়রানির প্রশ্নটা
ধামাচাপা না পড়লেও
খানিকটা ওভাররিটন হয়ে
গ্যাছে। কিন্তু কুড়ি
তারিখ আমরা শহর দাপিয়ে
যে মহাকলোরবের মিছিল
দেখলাম তাতে ছাত্রীদের
বিপুল অংশগ্রহণ ও
সাংবাদিকদের কাছে
তাদের প্রতিক্রিয়া বলে
দিচ্ছে অনেকে কিন্তু
সেই প্রশ্নটা মাথায়
রেখেই মিছিলে হাঁটতে
এসেছিলো।
সাংগঠনিক রাজনীতি ও
দলতন্ত্রের বহিরাগত
হয়ে পশ্চিমবঙ্গের
রাজনীতির যে নতুন বাঁক
এই অপশাসন এবং
অতিশাসনের বিকল্পহীন
পরিস্থিতিতে অবশ্য
প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে,
সেখানে দিশারী হয়ে উঠছে
যাদবপুর।
রাজনীতির অর্থ যে
ঘটমানতার মধ্য দিয়ে
নতুন নতুন সত্যের অবয়ব
নির্মাণ, রাজনীতির
নব-উন্মেষ যে অচলায়তন
দাবী করছে তার জাগরী
হয়ে উঠছে যাদবপুর।
এই ইউনিভার্সিটির
ইতিহাস বলছে,
প্রতিবাদের ভাষা এই
এলাকার ইতিহাসের
মজ্জাগত; অনেকদিনের
অনেক উচ্ছেদ,
স্থানান্তর এবং
লড়াইয়ের
ইতিহাস।যাদবপুর
প্রেসিডেন্সী কলেজ,
অধুনা
বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই
বরাবর বিরোধী
কণ্ঠস্বরের স্বাক্ষর
বহন করেছে এবং আমি
নিশ্চিত শাসকদলের এই
চূড়ান্ত
নিয়ন্ত্রণনীতি রুখে
দিতে যাদবপুর এবারেও
সক্ষম হবে।
২০০৫ এর সি পি এম
শাসনকালে ক্যাম্পাসে
পুলিশী অত্যাচারের
মধ্যে দিয়ে জন্ম হয়েছিল
ফ্যাসের। আর এই ফ্যাসই
অনতিবিলম্বে আর্টস
ফ্যাকাল্টির এস এফ
আইয়ের দূর্গ ভাঙতে
সক্ষম হয়। এবার যাদবপুর
বিশ্ববিদ্যালয়ের
গণআন্দোলন আরো
ব্যাপকতর আকার নিয়েছে
এবং আশা করবো তা এবারও
এক নতুন উন্মেষরেখা
টেনে দেবে
রাষ্ট্রক্ষমতার ওপর।
তবে যৌন নিরাপত্তার যে
প্রশ্ন এই আন্দোলনের
গোড়ায় রয়েছে তা যেন এই
আন্দোলনের দুর্বলতা না
হয়ে এর শক্তি হয়ে ওঠে।
শেষ কয়েক বছরে
পশ্চিমবঙ্গের মানুষরা
গণতন্ত্রকে
গুন্ডাতন্ত্র হয়ে উঠতে
দেখেছে। যেমন এখন
বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্বপুলিশবিদ্যালয়
হয়ে উঠতে চাইছে! যৌন
নিরাপত্তার শরীর
ক্রমেই বিবস্ত্র হয়ে
পড়েছে।
এই আন্দোলনের মূলে
ক্যাম্পাস
ডেমোক্রেসির যে বিষয়টা
রয়েছে সেখানে 'গুড
গভর্নেন্স' মানে যতটা
যৌন নিরাপত্তা ততটাই
ছাত্রছাত্রীদের
স্বাধীনতা (এক্ষেত্রে
পুলিশ ও গুন্ডাদের হাতে
প্রহৃত না হবার
স্বাধীনতা)ও বটে। এই
আন্দোলন যত তার শিকড়কে
স্মরণে রেখে এগোতে
পারবে ততই মঙ্গল। এই
প্রসঙ্গে কিচ্ছু
বিক্ষিপ্ত চিন্তা যা
মাথায় আসছে তা কয়েকটা
পয়েন্টের আকারে লেখার
চেষ্টা করছি।
১. যৌন হয়রানি এবং
ক্রমবর্দ্ধমান
ধর্ষণসম্ভাবনার
পরিমন্ডলে বিবেকবাণী
হয়ে ওঠা স্বঘোষিত নৈতিক
কান্ডারী এবং
অভিভাবকদের যে
মরালিজ্ম এবং
গার্ডিয়ানশিপ চোখে
পড়ছে তা এক্ষেত্রে
যাদবপুরের মেয়েটিকে
যারা হয়রানি করেছে
তাদের রিজনিংয়ের থেকে
খুব একটা আলাদা নয়।
পাবলিক ডিসপ্লে অফ
আফেকশন হলে হয়রানি, কম
জামাকাপড় পরলে রেপ!
থ্রি কোয়াটার পরে
বিপ্লব? ছি ছি!
২. হোককলরব নিয়ে গেল গেল
রব যারা করছেন বা
যাদবপুরকে মদ গাঁজার
ঠেক বলছেন তারা হয়ত
প্রতিবাদের নেশাটাকে
একটু খাটো করে দেখছেন।
সেটা মদ গাঁজার থেকে
কোনো অংশে কম নয় আর
আপত্তিটা হয়ত
অব্যক্তভাবে তাকে
নিয়েও। মদ গাঁজা কতোটা
ঘুম পাড়ায় আর কতটা
জাগিয়ে রাখে এই অতীব
জটিল প্রশ্ন যদি সরিয়েও
রাখা হয়, প্রায় একইভাবে
এক্ষেত্রেও চিন্তিত
অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠান
কিম্বা
রাষ্ট্রযন্ত্রের মতই
নিয়ন্ত্রণের কার্ড
খেলছেন।
৩. যৌন অবদমন যত বাড়ছে,
যত বাড়ছে নৈতিক
দ্বিচারিতা, ততই বাড়ছে
রক্ষনশীল দাদাগিরি,
দিদিগিরি। অন্যরা কেন
আমার থেকে বেশি এনজয়
করবে--এই প্রশ্নের
সেডিজম থেকে যে মরাল
গার্ডিয়ানশিপ জন্ম
নিচ্ছে, তার লজিক বলছে,
পুলিশ বসিয়ে মেয়েদের
সুরক্ষা বজায় রাখতে
হবে। অথচ এই 'পুরুষ'
পুলিশ নিজেই এসে
মেয়েদের সম্মানহানি
করছে।
৪. ক্যাম্পাসে
প্রকাশ্যে ভালোবাসলে
যৌন হয়রানি সহ্য করতে
হবে! তাই যাদবপুরের এই
আন্দোলন যৌন
রক্ষনশীলতার
বিরূদ্ধেও আন্দোলন। এই
আন্দোলন ভালোবাসার
স্বাধীনতার আন্দোলন,
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে
ব্যারিকেড করার
অভিযান। আর এই ভালবাসা
পাল্টে ফেলার
ইচ্ছাযাপন থেকে খুব
একটা দূরে নয়।
৫. আমাদের রাজ্যে
স্বতস্ফূর্ত
গণআন্দোলনের দলীয় এবং
কায়েমী স্বার্থে
হাইজ্যাকড হয়ে যাবার
দীর্ঘ ইতিহাসের
প্রেক্ষিতে
নাট্যব্যক্তিত্ব
কৌশিক সেনের বক্তব্য
জরুরী। এই আন্দোলন যেন
মুখ্যত
ছাত্রছাত্রীরাই করে।
বাইরে থেকে সমর্থন করা
ছাড়া সিভিল সোসাইটির এই
আন্দোলনের
প্রতিনিধিত্ব করার
দরকার নেই। এই আন্দোলন
সবার হলেও
প্রাথমিকভাবে
ছাত্রছাত্রীদের, আগে
ক্যাম্পাস বদলের, তারপর
সিস্টেম বদলের। এই
অগ্রাধিকারের
জায়গাগুলো পরিষ্কার
থাকলে শুধু সততা বজায়
থাকে তাই নয়, আন্দোলনের
বিভিন্ন এবং বিচিত্র
প্রবাহ তথা
সম্প্রসারণগুলোও
নিজস্ব ছন্দ পেতে পারে।
আবার হাইজ্যাকড হবার বা
মার্কড হয়ে যাবার ভয়ে
এই ধরণের স্বতস্ফূর্ত
ছাত্র আন্দোলনে অংশ না
নেওয়া বা সমর্থন না
জানানো আমাদের
সেল্ফ-ডিফেন্স ছাড়া
বিশেষ কিছু হবে না।
ফেসবুকে এ প্রসঙ্গে
গায়িকা মৌসুমী ভৌমিকের
কথাগুলো স্মরণ করছি:
Was I being drawn into something--even me, a greying parent
of an adult son--was I being drawn into something for the
gains of others? Well, I don't think so. And I won't say
this of the hundreds of young people I was walking with
either. And surely not about the thousands upon thousands
who marched in the rain today. As I won't say this of those
who marched to protest the killings in Nandigram, even
though it is from within that movement that those who rule
today arose. They appropriated that movement. Perhaps
someone will appropriate this one too. The Basirhat win of
the BJP scares me. But even that will not diminish the
beauty of this moment of resistance. Struggles live longer
than these gains (and losses)--we have to believe in this
dream. Otherwise how to go on?
৬. বিশ্ববিদ্যালয় যদি
সত্যিই বিদ্যার আলয়কে
একটি বিশ্বের দিকে
চালিত করতে পারে, তবে
সেখানে 'ইউনি' নয়, দেখা
দেবে 'মাল্টিভার্স', যার
অগ্রণী মাল্টিটিউডকে
আমরা এই আন্দোলনের
সম্মুখপথে দেখতে
পাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়
উপাচার্য যখন সরাসরি
পুলিশ অর্থাৎ RSA (Repressive State
Apparatus) কে দিয়ে
ছাত্রছাত্রীদের
সম্মানহানি ও নিগ্রহ
করেন তখন
বিশ্ববিদ্যালয়
পরিসরটির সমস্ত
স্বয়ংক্রিয়তা চলে গিয়ে
তার সাথে অন্য
রাষ্ট্রাধীন
স্থানগুলির ভেদরেখা
মুছে যায়। রাষ্ট্রের
বিশ্ববিদ্যালয়কে
দেওয়া স্বাধিকারের
প্রতিশ্রুতি এভাবে
রাষ্ট্র নিজেই ভঙ্গ
করে। মানবেন্দ্র
বন্দ্যোপাধ্যায় ও
শিবাজী
বন্দ্যোপাধ্যায়
লিখেছেন:-
"বিশ্ববিদ্যালয়ের
মতন প্রতিষ্ঠানের
স্বাধিকার রয়েছে;
রাষ্ট্রের দেওয়া
এ-প্রতিশ্রুতি
রাষ্ট্রেরই দমন-কলকে
কাজে লাগিয়ে ভঙ্গ করা
হল, বিশ্ববিদ্যালয়ের
স্বাধিকার-রক্ষা যাঁর
অন্যতম দায়িত্ব, তাঁরই
প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়!
এক রকম বেনজির এ ঘটনা;
নিন্দার উপযুক্ত ভাষা
এখনও আমাদের রপ্ত
নয়।"
৭. সমস্ত
প্রতিস্পর্দ্ধী ঘটনাই
রাষ্ট্রক্ষমতার
প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে
তার চূড়ান্ত সীমা
চিনিয়ে দিতে সাহায্য
করে। তার আগে অব্দি হয়ত
রাষ্ট্র এবং নাগরিক
উভয়ই রাষ্ট্রের
ক্ষমতাকে অসীম ভেবে
ন্যায়। হোককলরব আবার
দেখিয়ে দিয়েছে
রাষ্ট্রক্ষমতার এক
নতুন আগ্রাসী কিন্তু
চূড়ান্ত উর্দ্ধসীমা।
৮. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
শাসক ও বিরোধী দলের
রাজনীতি বন্ধ হলেও
ছাত্রছাত্রীদের
নিজস্ব চিন্তাচেতনার
উন্মোচনী রাজনীতি কখনো
বন্ধ হতে পারে না।
প্রকৃত শিক্ষা
ছাত্রছাত্রীদের
প্রশ্ন তুলতে শেখায়,
ডমিনান্ট ইডিওলজির
বিরোধিতা করতে শেখায়।
এই দ্বন্দ্বশিক্ষা
ছাত্রছাত্রীদের শুধু
দায় নয়, তাদের শিক্ষাও
বটে। 'স্টুডেন্ট'
শব্দের ইতিহাসেও এই
প্রাক্সিসের ছাপ
স্পষ্ট। শব্দটির শিকড়
রয়েছে ল্যাটিন
'স্টুডিয়াম' শব্দে, যার
অর্থ হল 'painstaking application.'
৯. শিক্ষকের শিক্ষাদান
এবং তৎপার্শবর্তী
ভূমিকাও অবশ্য
বিবেচ্য। শিক্ষকের
সাথে ছাত্রছাত্রীদের
সম্পর্ক এখানে
গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্ববিদ্যালয় যেমন
মেরুদন্ডহীন দলদাস
তৈরির কারখানা নয়, তেমন
সেখানে শিক্ষাদানের
দায়িত্বে যারা থাকেন
তাদের শুধু নিরপেক্ষ
নয়, এক প্ররোচনামূলক
ভূমিকাও রয়েছে। ' 'হীরক
রাজার দেশে'র
স্কুলশিক্ষক যখন তার
ছাত্রদের নিয়ে খোলা
প্রান্তর চিরে ছুটে
চলেছেন দড়ি টেনে রাজাকে
খান খান করতে, তখন
শিক্ষকের বৈপ্লবিক
ভূমিকার সেই আইকনিক
ইমেজ হোককলরবের টোটেম
হয়ে উঠেছে।
১০. বিশের মিছিলে আমরা
গান শুনেছি, নাচ দেখেছি,
দেখেছি নাটক। এখন
ক্যাম্পাস জুড়ে চোখে
পড়ছে নতুন নতুন কবিতা,
স্লোগান ও গ্রাফিত্তি।
মুভমেন্টটিকে ধরে
রেখেছে বাংলাদেশের
গায়ক অর্ণবের জনপ্রিয়
একটি গান, যার প্রথম
দুটি শব্দ 'হোককলরব' এই
আন্দোলনের অন্যতম সেরা
বীজমন্ত্র। হোককলরব
অন্দোলনের এই
বহুমাত্রিক
নান্দনিকতা তার
সৃজনী-ভাবনার দ্যোতক।
১১. কয়েকবছর আগের
সিসিটিভি বসানোর
চেষ্টা থেকে শুরু করে
এখন বাধ্যতামূলক
পরিচয়পত্র এবং
ক্যাম্পাসে পুলিশ
পিকেটিং করে যেভাবে
যাদবপুর ক্যাম্পাসকে
প্রত্যক্ষ
নিয়ন্ত্রণের আইন
কানুনের আওতায় আনা
হচ্ছে তাতে জিল
দিলিউজের একেবারে
শেষজীবনের খুবই ছোট
কিন্তু অত্যন্ত
প্রভাবশালী একটি লেখা
'Postscript on the Societies of Control' এর কথা
মনে পড়ছে যেখানে মিশেল
ফুকোর অষ্টাদশ এবং
উনবিংশ শতকের
'ডিসিপ্লিনারি সোসাইটি'
থেকে দিলিউজ বিশ শতকের
'কন্ট্রোল সোসাইটি'র
একটা চালচিত্র তুলে
ধরছেন। দিলিউজীয়
'কন্ট্রোল সোসাইটি'তে
কোনো কিছুই কখনো শেষ হয়
না! কাফকার সুত্র ধরে
তিনি একে এই
সমাজ-কাঠামোর 'limitless postponements'
বলে চিহ্নিত করেন।
নিয়ন্ত্রণ যদি ক্রমশ
বিলম্বিত হতে থাকে,
প্রতিরোধও একইভাবে
বিলম্বিত হতে থাকবে,
কিন্তু শেষ হবে না
কখনো। নিয়ন্ত্রণ যত
ফিরে আসবে, প্রতিরোধও
নতুন মাউথ অর্গান নিয়ে
পথ রুখে দাঁড়াবে।
তখন বারো মাসই বৃষ্টি
পড়বে। ছাতা মাথায় মিছিল
হবে। আর ছাতার সাথেই
হবে ভালোবাসা।