বিশ্বাস অনেকটা
গোলাশের মতো। গোলাশ হলো
গিয়ে মশলাবিহীন মাংসের
ঝোল। হ্যাঁ বিশ্বাস
সেরকম সাদামাটা খানা।
এইবার একে পরিবেশনে আছে
নানাবিধ কায়দা। রুটি
জড়িয়ে যারা ঝোল খেয়ে
নিতে পারে হাতে
বিন্দুমাত্র হলুদ না
লাগিয়ে তারা জানেন
ফলাফল এক আজব চিজ। এ
দুনিয়াতে দিন কে দিন সে
নিজের ডানা উড়িয়ে
হাসিঠাট্টা, খোরাক
করে। কখনো কোনো মশগুল
প্রেমিকা দেখেছেন?
প্রকৃতি যেমন রঙ খেলে
অপরাহ্ন নামে, সেরকম।
বলেই যায়, তারপর জানো
আমাদের ঘরের এক ধারে
জানালায় রাখব তোমার
কলমদানি আর দোয়াত। এই
যে খাট, পাশে থাকবে হাতে
আঁকা বেতের ছাওয়া ঘেরা
লন্ঠন। রান্নাঘরে আমি
ডিম মশলা দিয়ে রাঁধব,
পেঁয়াজ, আদা, রসুন ঠেসে,
লাল আলু দিয়ে। তুমি
ভাববে, বাহ মাংস কই পেলো
আমার জুঁই, টগর। আচ্ছা
টগর ডেকো বুঝলে। ঘরে
যেন গাছগন্ধ জুড়ে
থাকবে। ছেলেটি বিশ্বাস
করে হয়তো। অথবা চুল ধরে
পাকায় দু পা ফাঁক করে
হতাশ আবেশে।
আবার ধরো গে রুষাদি
আমাদের পাড়ার। টো টো
চড়ে যাচ্ছিল স্কুলে
গুটি গুটি। বাস এসে
ধাক্কা দিল। তারপর সবাই
দেখছে রাস্তা ভর্তি
মাংস। এদিকে দিদিভাই
বলছে, বেঁচে আছি এই কী নয়
অনেক। কাকে যে বিশ্বাস
করাতে চায় জানিনা,
নিজেকে? পারে কী? এদিকে
ডাক্তারবাবু বলছে পা তো
ছয় সেমি ছোট। না না
ডাক্তারবাবু, ছুটে ছুটে
চাকরি করি আমি,
বাচ্চারা স্কুলে পি টি
করে। পা ঠিক করুন যেমন
করে হোক। মা বিশ্বাস
কদাচন...
তুমি জেলেদের জালে হাত
দিয়েছো, তবেই বুঝবে।
নাক রেখে চিনবে মাছ
আসলে জল আয়না হয়ে যায়। এ
আয়নায় নিজেকে দেখবে
তুমি। গোলাপি সে আয়না
কী ইলিশের বাগান। আদম
ইভ সাক্ষী রেখে তুমি
ওদের জল থেকে তুলে
স্ত্রী ধন ভেবে নিয়ে
এসো বিবাহে আমাদের।
কবুল করো প্রেম, কবুল
করো বিরহ, কবুল করো
জল্লাদ এই ফাঁকতালে
বিশ্বাস ভেঙে স্বামী
স্ত্রী হয়ে যাবার।
বিশ্বাস ভাঙা যেদিন
শুরু সেখানেই শুরু
বিবাহের।
একজন পাগলির সামনে বসে
ক্রমাগত পেন্সিল ঘষে
টেবিলে বার বার তাকে
শুধাই, বলো না আমি শুধুই
রক্ত, হাড়। আমার বোধের
জাগরণ নেই বুঝি। এদিকে
পুরনো গির্জার উঁচু
খাঁচা শিখব দেখে পাগলটা
চুপ করে থাকতে বলে। আমি
তাকে বলি তুমি তো বেশ
কথা বলো। সে বলে আমার
স্বামী আমাকে
ভালবাসতো। তবে তিনি রোজ
ঘুরে আসতেন
প্রেমিকাদের কাছ থেকে।
বিশ্বাস তাহলে কী
আরেকটু ঘন, স্টেকের ঘন
ক্রিম হতেই পারে। আমি
তার মাথায় বসালাম
কুঠার। তিনি আমার দিকে
গোলাশের পাতলা ভেসে
থাকা মাংসের টুকরোর
মতোই তাকিয়ে ছিলেন। আমি
তাকে ভালোবেসেছি। আমি
তো স্ত্রী তাই এখনো
পুরুষমেঘ কাটাতে
পারিনি।
আমার এক কাকু, নাম তার
মাইকেল। বিয়ে থা করেনি
অথচ বিবাহ নিয়ে তাঁর
অগাধ জ্ঞান। আজকাল
মিল্ক কেক বানাতে
বানাতে আমার পাতে বেড়ে
দেন ঝাল ঝাল টমেটো পোড়া,
কাচকি মাছের টক।
বিয়েটা না সেরে কাকু
রান্নাঘরে মা কে দেখেন।
রোজ উনুনে নারকোল দুধ
জল, মাছ ভরতা চাঁছা
এসবের ফাঁকে আমাদের
মাইকেল কাকু দেখতো একটা
প্লেন। মাথার উপর দিয়ে
ভুস ভুস করে এগিয়ে
যাচ্ছে। আর বিশ্বাস
ফেলে সবাই ছুটছে
কালাপানি ভরে নিতে ছোট
কাপে। এক ঢোকে খতম সব
ছাতিমছোরা নিয়ম
শ্বাসের কাচ। ভাঙলে
সেলাই করো, জোড়া তবু
লাগে কোনভাবে।