মনে পড়ে জলসাঘর ছবির
বিশ্বম্ভর রায়কে।ভেঙে
পড়া জমিদারির
শেষলগ্নেও তিনি তার
বিশ্বাস ও অহংকার
আঁকড়ে থেকে এগিয়ে যান
ধ্বংসের
দিকে।জলসাঘরের সেই
বিখ্যাত দৃশ্যটিতে
তিনি যেখানে উঠতি বড়লোক
মহিম গাঙ্গুলির হাত তার
হাতের লাঠি দিয়ে টেনে
ধরেন,আর বলেন বখশিশ
দেবার প্রথম অধিকার
গৃহস্বামীর,তখন
ক্লাসিকাল সিনেমার এক
মুহূর্ত রচিত হয়
অগোচরে। বা
কাঞ্চনজঙ্ঘা সিনেমার
ইন্দ্রনাথ চৌধুরী,এক
পোড় খাওয়া শিল্পপতি যার
বিশ্বাস, মূল্যবোধ-এ
সপাটে আঘাত নেমে আসে এক
বাউন্ডুলে বেকার ছেলে
অশোকের(অরুণ
মুখোপাধ্যায়) হাত
ধরে।এইসব চরিত্রে
অসাধারণ অভিনয়ের জন্য
ছবি বিশ্বাস স্মরণীয়
হয়ে আছেন।কিন্তু কথা তা
নয়। বিনীত ভাবে জানাই
আমার এই সন্দর্ভ ছবি
বিশ্বাসের উদ্দেশ্যে
নয়, বরং তিলে তিলে
আমাদের সকল বিশ্বাসের
ছবি হয়ে যাওয়া নিয়ে এই
লেখাটি হয়ে উঠতে চায় এক
মনভারাতুর মনোলগ।
রাজ্যে আবার এসে গেছে
গণতন্ত্রের উৎসব।আর
আমাদের মনখারাপের
দিনের শুরু।একটা উৎসবে
এত প্রাণের বলি!শুনেছি
নেপালের মনস্কামনা
মন্দিরে পরবের দিনে এত
বলি হয় যে রক্তের কাদায়
থকথকে হয়ে ওঠে বহুদূর
পর্যন্ত মন্দির সংলগ্ন
পাহাড়ি পথ।এই
কর্দমলিপ্ত জীবনে আমরা
বেশ অভ্যস্ত হয়ে
উঠেছি।অথচ এমনটা তো
হওয়ার ছিল না।কংগ্রেস
ভেঙে অজয় মুখার্জির
বাংলাকংগ্রেস ও
বামেদের সঙ্গে মিলে
যুক্তফ্রন্ট সরকার ও
তার সকল ডামাডোল, নকশাল
আন্দোলনের সূচনা(ভুলে
গেলে চলবে না নকশালবাড়ি
গ্রামে যে গুলিচালনার
ঘটনা ঘটে, যে ঘটনা
সূত্রপাত ঘটায় এক
রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের,
সেই সময় পুলিশমন্ত্রী
জ্যোতি বসু।পরবর্তী
কালে এই ঘটনাটিকে যতই
অন্য আলোকে দেখার
চেষ্টা হোক না,ঐতিহাসিক
সত্যকে উপড়ে ফেলা যায়
না)।এই এক্সট্রিম
লেফটিস্টদের দমনে যেমন
কংগ্রেস ভয়ংকর ভূমিকা
নিয়েছিল,ভুমিকা
নিয়েছিল
সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের
সরকার,তেমনি তাতে
বামপন্থীদেরও ভূমিকা
ছিল।আমরা ভুলিনি
প্রমোদ দাশগুপ্তের সেই
বিষাক্ত উক্তি: পুলিশের
বন্দুকে কি নীরদ লাগানো
আছে? তারা নকশালদের
খুঁজে পায় না।কিন্তু
একথা অস্বীকার করা যায়
না,১৯৭৭-এ বামেরা যে
নিরঙ্কুশ
সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে
ক্ষমতায় এল,অর্থাৎ একটা
রাজ্য রাতারাতি সবুজ
থেকে লাল হয়ে গেল, তাতে
অন্যান্য কারণের সাথে
কাজ করেছে নকশাল
আন্দোলনের প্রতি
মানুষের
সহানুভূতি।তাত্ত্বিক
ভাবে সবটা না বুঝলেও
একদল মেধাবী ছেলে তাদের
মসৃণ ভবিষ্যৎকে
বিসর্জন দিয়ে
নিঃস্বার্থ ভাবে দেশ
গড়ার লক্ষ্যে যেভাবে
প্রাণ দিল তা দাগ রেখে
গেল সাধারণ মানুষের
মনে।এছাড়া ৭৪-এ ইন্দিরা
গান্ধীর জরুরি
অবস্থা,জয়প্রকাশ
নারায়ণের নেতৃত্বে
দেশব্যাপী এর বিরুদ্ধে
আন্দোলন—এসবের
প্রভাবও ছিল। বামেদের
প্রথম দশবছরে দেশ গড়ার,
মানুষের জন্য কাজ করার
এক বিপুল উন্মাদনা দেখা
যায়। ভূমিসস্কার
বামশাসনের
সর্বশ্রেষ্ঠ
কাজ।জ্যোতি বসুই
সর্বশ্রেষ্ঠ বামনেতা।
বামদলগুলিকে সংসদীয়
রাজনীতিতে নিয়ে আসার
পিছনে তার
গুরুত্বপূর্ণ অবদান
ছিল।নানা ভাষাভাষী,
বহুত্ববাদী, অহিংসার
বীজতলা ভারতের মাটিতে
যে সশস্ত্র বিপ্লব
সম্ভব নয়,তা তিনি
বুঝেছিলেন। সবাইকে
নিয়ে চলার ক্ষমতা
রাখতেন।১১টি দল নিয়ে
দীর্ঘদিন সরকার চালানো
সহজ কাজ নয়।কিন্তু
সংসদীয় রাজনীতিতে এলেও
বামেদের গঠন কাঠামোর
মধ্যেই রয়েছে একদলীয়
শাসন ব্যবস্থার প্রতি
ঝোঁক।এছাড়া
সমাজতান্ত্রিক
ব্যবস্থার লক্ষ্যে
সংসদীয় গণতন্ত্রকে
ব্যবহার—এরকম ভাবনাকে
লালন করার জন্যই
পশ্চিমবঙ্গে
দীর্ঘদিনের বামশাসনে
এই প্যারাডাইমটি
প্রতিষ্ঠিত হয়—এলাকার
দখল যার ভোটও
তার।মানুষের
বিচক্ষণতার ওপর নির্ভর
করে যে ভোট,যে কারণে
প্রয়োজন মানুষের
সাংস্কৃতিক চেতনার
বিকাশ—যা ছিল একসময়
বামেদের ঘোষিত
লক্ষ্য,তা থেকে
সম্পূর্ণ উল্টোদিকে
হেঁটে—জোর যার মুলুক
তার—এই সহজসিদ্ধ পথেই
বামশাসনের অভিমুখ
প্রতিষ্ঠিত হয়।যার
মূল্য আজও আমাদের
চোকাতে হচ্ছে।সারা
ভারতের থেকে
পশ্চিমবঙ্গের ভোটের
মেকানিজম আলাদা।এই
মেকানিজম বুঝতে
নির্বাচন কমিশনের দম
লেগে যায়।শত চেষ্টাতেও
থামাতে পারে না
মৃত্যুমিছিল।এই
বাংলায় জাতিগত
হানাহানি হয় না।ধর্মীয়
হানাহানি হয় না।কিন্তু
রাজনীতি আমাদের
ধর্ম।তার জন্য প্রাণ
যায় শয়েশয়ে মানুষের।
পাঁচ বছরের শিশুরও তাতে
রেহাই নেই।বামশাসনের
শেষ দশবছর অবক্ষয়ের
কাল।সংসদীয় রাজনীতির
আর পাঁচটা পার্টির থেকে
বামদলগুলির আর কোনো
পার্থক্যই থাকে না।যে
কোনো মূল্যে ক্ষমতা ধরে
রাখা,দুর্নীতি,
যোগ্যতার চেয়ে দলীয়
আনুগত্যকে অধিক মূল্য
দেওয়া,সন্ত্রাস—এই
সবকিছুই ঘুণপোকার মত
কুড়ে কুড়ে খায় দলীয়
আদর্শ, মূল্যবোধ।তার
পরিণতি ব্যাপক
গণআন্দোলন।সিঙ্গুর,
নন্দীগ্রাম ইন্ধন
জুগিয়েছিল
মাত্র।জমিটি প্রস্তুত
হয়েই ছিল।এরই ফলশ্রুতি
২০১১-এর পরিবর্তন।এই
পরিবর্তন যত না তৃণমূল
সরকারকে আনার জন্য,তার
চেয়ে অনেক বেশি ছিল
বামসরকারকে দূর করার
জন্য।মমতা
ব্যানার্জির সব দোষ
ত্রুটিকে উপেক্ষা করে
মানুষ তার মধ্যে খুঁজে
পেয়েছিল একটা
রেজিমেন্টেড পার্টিকে
উপড়ে ফেলার লড়াকু
মেজাজ।অনেকে বলেন মমতা
বামেদের যোগ্যতম
ছাত্রী—কথাটিকে ভুল
বলে মনে হয় না।কারণ
মানুষের বিচক্ষণতার
প্রতি আস্থা স্থাপনের
পরিবর্তে,এলাকার দখল
তথা বিরোধীশূন্য
অবস্থা তৈরি
করা,বুদ্ধিজীবীদের
নানা উপঢৌকন দিয়ে নিজের
দলের প্রতি অনুগত
রাখা,প্রশাসনের
নানাস্তরের
দলীয়করণ—এসবই মমতা
বামেদের থেকে সুনিপুণ
ভাবে আয়ত্ত করে
নেয়।শুধু বামেদের
কাজেকর্মে যে
শিক্ষাদীক্ষা,বুদ্ধিম
্তার পালিশটি ছিল—যাতে
মানুষকে সত্যটা বুঝতে
লেগে যেত এক যুগ,এখানে
তা ছিল
অনুপস্থিত।সোজাসাপটা
ও স্থূল। ফলে মানুষের
বোধের আয়ত্তে,দৃষ্টির
সীমানায় প্রকট।
আজ যে বিজেপির উত্থান
এর পিছনে কংগ্রেস সহ
অন্যান্য দলগুলির
মুসলিম সমাজের প্রতি
একপেশে দৃষ্টিভঙ্গিকে
পুরোপুরি অস্বীকার করা
যায় না।যে কোনো
শুভবুদ্ধিসম্পন্ন,শক্
িশালী দেশই তার
সংখ্যালঘুদের আগলে
রাখে।এতেই একটা দেশ ও
জাতির সবলতা প্রকাশ
পায়। কিন্তু সস্তা ভোট
ব্যাঙ্কের রাজনীতির
জন্য সকল দোষত্রুটিতে
চোখ বন্ধ রাখা কোনো দেশ
ও জাতিকে সবল করতে পারে
না।একটা লঘু উদাহরণ
দিয়ে বিষয়টি খোলসা
করি:ট্রাফিক আইন কঠোর
হওয়া মানুষের
স্বার্থেই ভীষণ জরুরী,এ
নিয়ে বলার কিছু
নেই।কিন্তু যখন দেখি
পার্কসার্কাস মোড়ে
লুঙ্গি পরে এক বাইকে
চারজন মাথায় হেলমেট
ছাড়াই ট্রাফিক
সার্জেনের সামনে দিয়ে
সগর্বে চলে যায় আর
সার্জেন মুখ ঘুরিয়ে
নিয়ে মানরক্ষা
করেন।তখন গ্লানি বোধ হয়
নিজের দেশের প্রতি,
জাতির প্রতি।আমি
নিশ্চিত জানি আমার
শিক্ষিত মুসলিম
বন্ধুটিরও একই গ্লানি
অনুভূত হয়েছিল।সব
ক্রিয়ারই প্রতিক্রিয়া
থাকে।আমাদের দেশে
বিজেপির উত্থানও এরকমই
উল্টো রিয়েকশান।স্পেস
যদি তৈরি হয়, সেই স্পেস
ব্যবহার করে নিজের আখের
গোছানো,তথা নিরঙ্কুশ
ক্ষমতা দখল—এই সুযোগ তো
যে কেউ গ্রহণ করবেই।আজ
পশ্চিমবঙ্গের একই
অবস্থা।দীর্ঘ
কমিউনিস্ট শাসনে আশা
করা গিয়েছিল জাতপাতহীন
সমাজব্যবস্থা স্থাপিত
হবে যেখানে ধর্ম গৌণ
হয়ে আসবে।পুরোপুরি না
হলেও জাতপাতহীন
সমাজব্যবস্থা স্থাপনে
বামেরা অনেকখানি
সফল।কিন্তু ধর্মের
প্রশ্নে বিশেষত মুসলিম
ধর্মের প্রশ্নে তারা
পক্ষপাতদুষ্টতার
পরিচয়
দিয়েছে।কমিউনিস্ট
শাসনে উল্টোটাই কাম্য
ছিল।দীর্ঘ শাসনে সে
সুযোগও ছিল। কিন্তু
ক্ষমতা ধরে রাখতে সবাই
নিরাপদ খেলাই পছন্দ
করে।যদিও এতে তার গায়েও
সাম্প্রদায়িকতার
লেবেল সেঁটে
যায়।ক্ষমতায় এসেই মমতা
বামেদের ভোটব্যাংক,
সংখ্যালঘুদের নিজের
দিকে টেনে নিতে
চক্ষুলজ্জাহীন ভাবে
ইমাম,মুয়াজ্জিনদের
ভাতা চালু
করে।ইমাম,মুয়াজ্জিনদে
ভাতা বা সাম্প্রতিক
কালে পুরোহিতদের ভাতা
একটা ধর্মনিরপেক্ষ
দেশকে যে অনেকখানি
পিছনে টেনে নিয়ে
যায়—একথা কে ভাববে?
যখন যোগ্য,ঈপ্সিত,
সুদৃঢ়মূল পার্টিই
হৃদয়বিদারক হয়ে ওঠে,
তখন অর্বাচীন
ইস্যুভিত্তিক পার্টির
কাছে কতটা আশা রাখতে
পারে মানুষ। বিজেপির
মূল কিন্তু গভীরে
প্রোথিত।রাষ্ট্রীয়
স্বয়ংসেবক সংঘের
দ্বারা পরিচালিত
রেজিমেন্টেড পার্টি
বিজেপি।তাদের এক বিশেষ
উদ্দেশ্য আছে।ভারতের
বহুত্ববাদী চরিত্রকে
দূরে সরিয়ে এক হিন্দু
নেশন গঠনের লক্ষ্য
তাদের।সেখানে
সংখ্যালঘুরাও থাকবে
সেই হিন্দু নেশনের
প্যারাডাইমকে অনুসরণ
করেই।সেইজন্য তাদের
প্রয়োজন নিরঙ্কুশ
সংখ্যাগরিষ্ঠতা।আর এই
সংখ্যাগরিষ্ঠতা না
পাওয়া পর্যন্ত তারা
সবরকম আপোষে রাজি: যেমন
উত্তরপূর্বাঞ্চলের
রাজ্যগুলিতে গোমাংস
খাওয়া নিয়ে তাদের কোনো
আপত্তি নেই।কিন্তু
কাঙ্ক্ষিত
সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই
তারা তাদের লক্ষ্য
পূরণে তৎপর হয়ে
উঠবে।এখন যেমন
সর্বভারতীয়
প্রেক্ষাপটে তাদের
তৎপরতা ভীষণরকম চোখে
পড়ছে।পশ্চিমবঙ্গের
বর্তমান ভোটে তাদের
হাতিয়ার নরম
হিন্দুত্ব।কারণ
পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে
এখনও উগ্র হিন্দুত্বের
জায়গা নেই।কিন্তু
নিরঙ্কুশ
সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে
তারা তাদের
লক্ষ্যপূরণে তৎপর
হবেই।কিন্তু যে
হিন্দুত্বের নামে
জাতপাত নির্বিশেষে
সবাই বিজেপির হয়ে গলা
ফাটাচ্ছে সেখানে
সত্যিই কি নিম্নবর্ণের/
দলিতদের কোনো
সম্মানজনক জায়গা আছে?
সোজাসাপটা উত্তর:
নেই।হিন্দুধর্মের যা
কিছু ভাল, যা কিছু আলো
তার বিপ্রতীপে
তুল্যমূল্য অন্ধকার
হিসেবে রয়েছে এর
বর্ণাশ্রম
প্রথা।হাজার বছরের
লাঞ্ছনা, শোষণ,
পশ্চাৎগামীতার পর ভাবা
গিয়েছিল ভারতবর্ষের
অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে
ধর্মাচরণ ব্যক্তির
নিজস্ব নিভৃত বিষয়ে
পরিণত হওয়ার মাধ্যমে
সামাজিক সম্মান
নির্ধারিত হবে একজন
ব্যক্তির
শিক্ষাদীক্ষা,যোগ্যতা
ও গুণের ভিত্তিতে।তার
জন্ম বা বংশপরিচয়ের
ভিত্তিতে নয়। বিজেপি
হিন্দুধর্মের
সংস্কারসাধন চায় না।
তারা হিন্দুধর্মের
ব্রাহ্মণ্যবাদী
কাঠামোকেই প্রতিষ্ঠিত
করতে চায়।যা
উচ্চবর্ণের
আধিপত্যকেই
প্রতিষ্ঠিত
করবে।মুশকিল হল,
সুবিধেজনক অবস্থানে
থাকলে বেশিরভাগ মানুষই
আধিপত্যবাদী।তাই যখন
বিদ্বেষ সংখ্যালঘুদের
প্রতি, আমি নিজে দলিত
হলেও এক ভয়ংকর
উন্মাদনায় আমি নিজেও
সেই বিদ্বেষের
শরিক।কিন্তু একটি তীর
যে আমার জন্যও রাখা
আছে,তা বেমালুম ভুলে
যাচ্ছি বা ভাবতে চাইছি
না।খুব গভীরভাবে দেখলে
দেখা যাবে এই যে মুসলিম
বিদ্বেষ তা উচ্চবর্ণের
মানুষের মধ্যে যে
পরিমাণে লক্ষনীয়,
নিম্নবর্ণের মানুষের
মধ্যে তা নেই।ভারতের
মুসলিম জনগোষ্ঠীর খুব
সামান্য অংশই বিদেশ
থেকে আগত।এই বিপুল
জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর
অংশই ধর্মান্তরিত
নিম্নবর্ণীয়
হিন্দু।ইসলামি শাসকের
চাপে কিছু
ধর্মান্তরকরণ
ঘটেছে।কিন্তু
নিজধর্মের দ্বারা
লাঞ্ছিত, শোষিত,
অত্যাচারিত
নিম্নবর্ণীয় হিন্দুরা
জীবন-জীবিকার
স্বার্থে,ন্যূনতম
সম্মানের সাথে বেঁচে
থাকার স্বার্থে সুফি
পীর ফকিরদের প্রেমের
বাণীতে আকৃষ্ট
হয়ে,ইসলামের সাম্যের
বাণীতে আকৃষ্ট হয়ে দলে
দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ
করেছে।এই যে
নিম্নবর্ণীয়রা
উচ্চবর্ণীয়দের
আধিপত্যকে কলা দেখিয়ে
ইসলামের মধ্যে তাদের
সম্মানজনক অস্তিত্ব
খুঁজে পেল,তা
উচ্চবর্ণীয়রা নিশ্চই
খুশি মনে মেনে নিতে
পারিনি।তাই আজও দেখি
আমাদের দেশের
মুসলিমদের প্রতি
উচ্চবর্ণীয়দের মধ্যে
এক তীব্র বিদ্বেষ।এরাই
কিন্তু সৌদি আরবে কোনো
শেখের বাড়ি গেলে
সেখানকার বিলাসব্যসন
দেখে গলে জল হয়ে
যাবে।তার মানে বিদ্বেষ
মুসলিম ধর্মের প্রতি তত
নয় ,যতটা ভারতীয় মুসলিম
অর্থাৎ ধর্মান্তরিত
নিম্নবর্ণীয়
হিন্দুদের প্রতি।
যেসকল নিম্নবর্ণীয়
হিন্দুরা হিন্দুধর্ম
ছেড়ে নানা গৌণধর্ম তৈরি
করেছিল—যেমন
মতুয়া,কর্তাভজা,সাহেবধ
ী ইত্যাদি, আজ যখন
দেখি,তাদের গায়ে এখনও
সেঁটে আছে নিচুজাতের
লেবেল,তখন মনে হয় যারা
হিন্দুধর্ম ছেড়ে ইসলাম
গ্রহণ করেছিল তাদের
সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল।
কোথাও পড়েছিলাম
একবিংশ শতাব্দীতে
ভারতবর্ষে তিন শোষিত
জাতির উত্থান
ঘটবে—দলিত,মহিলা ও
মুসলিম। তা ন্যায্য ও
অভিপ্রেত মনে
হয়েছিল।আজ বিজেপির
বাড়বাড়ন্ত ও
ঢক্কানিনাদের সঙ্গে
সঙ্গেই এই
ভবিষ্যৎবাণীটির মুখ
থুবড়ে পড়ার আশঙ্কায় দিন
কাটাচ্ছি।পাঠক
বিজেপির হয়ে গলা ফাটানো
বা বিজেপিকে ভোট দেবার
আগে আপনিও একবার গভীরে
গিয়ে ভাবুন।ভেবে দেখুন
বিজেপি দেশের ভয়ংকরতম
শত্রু কি না।অতঃকিম