শ্বাপদ
মুখে মুখোশ লাগিয়ে
গর্তের ভেতর সেঁধিয়ে
বেশ আছি।
এ পোড়ামুখ আর দেখাতে
হয় না কাউকেই।
আমিও কিচ্ছুটি দেখি না
অবশ্য।
সকালের আলো ফুটলে
পাখিদের শব্দ,
দুপুরবেলা আশপাশের
বাড়ি থেকে বাসনকোসনের
শব্দ,
বিকেলে চায়ের কাপের
শব্দ আর সন্ধেবেলা
শাঁখের আওয়াজ
পেরিয়ে
রাতে কেবল শ্বাপদের
চলাফেরার শব্দ পাই---
চারপায়ে চলাফেরার,
গর্ত থেকে বেরিয়ে আসার
সেই তো আদর্শ সময়।
গড়ের অঙ্ক
অঙ্ক কষতে কষতে
এক্কেবারে বিরক্তি ধরে
গেছে
যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগ
অব্দি বেশ ছিল
কিন্তু যেই না গড় বের
করবার নেশাটা
পেয়ে বসল আমায়---
সবকিছু সমানভাবে
সবার মধ্যে ভাগ করে
দেওয়ার কথাটা
মাথায় পাকাপাকি
জায়গা করে নিতে শুরু
করল,
সবার তা ঠিক সহ্য হল
না।
আসলে ভালো অঙ্ক করতে
মেধার পাশাপাশি
তেলের শিশি আর মশলার
কৌটোর হিসেবও জরুরি;
আর সেসব থাকলে
গড়ের অঙ্ক না শেখাই
ভালো।
বারুদ
আমাকে বারুদ দাও
ছিন্নভিন্ন করে দিই
সব--
এ কোন দুর্ভাগা দেশ!
গলিত শবের রঙ মেখে
হাড়িকাঠে গলা দিয়ে
ছাগমুণ্ড সেজে থাকা
রোজ।
কখন যে ডাক আসে!
মাঝে মাঝে দানাপানি
পেয়ে
শুয়ে বসে স্বপ্ন দেখা,
আকাল পেরিয়ে যাব
ভাবা--
ভেবে ভেবে সবশেষে মুণ্ড
ধড়ে ভাগাভাগি হয়ে
সেই-- সেই শেষমেশ শব হয়ে
চুপ হয়ে যাওয়া।
শরীরে পচন ধরে গলে
যাওয়া সব সমারোহ
আরো আরো দিকে দিকে
শবেদের ডাক দিয়ে আনে।
তার চেয়ে এই ভালো
মুহূর্ত সময় নিই
আমাকে বারুদ দাও
ছিন্নভিন্ন করে দিই সব।