মণি
দিন শেষে দরজার কাছে এ
বাড়িতে কেউ ফেরেনি।
পিয়ানোর দাগ জুড়ে দাবা
খেলে চলেছেন
আন্তোনিও।
খুব কী শীত মস্কোতে আজ ?
তাপমাত্রার কখনো জ্বর
হয়নি বলে এত সহজে বাজছে
মোজার্ট অথবা বেঠোফেন।
হা হা হাওয়া জুড়ে
বারান্দায় ছড়ানো মড়ার
হাড়গোড়। হিং, ক্রিং ছট
আর সমস্ত হাড় চলে যাবে,
শহরের দালালদের কাছে।
মা বাজার থেকে নিয়ে
আসছেন খাবার। মস্কোর
হাঁটু ডোবা বরফে খাবার
ছড়ানো আলুথালু।
মালবাজারের হেমন্ত
নিয়ে আকাশে তাকিয়ে
হাতজোড় করে পাহাড়।
বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি...
দু চারটে আলো জোড়া
শান্ত চোখ বন্ধ করে
তাকিয়ে আছে মায়ের দিকে।
মা যখন জলের দিকে হেলে
যান তখন আমি জানি দু হাত
বাড়ানো এই নদী ছাড়া আর
কিচ্ছু নেই আমাদের। ঘর
থেকে ঘরে ফিরে এই
অন্ধকার পাহাড়ের ধারে
বসে হঠাৎ মনে হয় ফেরার
ট্রেনে ফেলে আসতে হবে
খানিকটা অবাক হওয়া।
হেমন্তের গন্ধ চেপে
বসছে বারান্দায়। বরফে
ঢাকা মস্কো এখন গাইছে ,
'আজি নূতন রতনে, ভূষণে
যতনে, প্রকৃতি সতী রে
সাজিয়ে দাও'।
মন খারাপ হলে মাথা
টিপটিপ করে ওঠে। একসময়
অনুভূতির থরথর করে
কেঁপে ওঠা ঠোঁটে জল
গড়াতো। বড়ো হয়ে যেতে
এখন জিজ্ঞেস করি , রাগ
করে আছো আমার উপর ?
তারপর বাজার থেকে ফেরার
পথে আবার দেখা হয়
শ্যামলীর সঙ্গে। আবারো
সে বলে ওঠে , কতদিন কথা
হয় না, আজ বিকেলে আসবো
একবার। টিপটিপ করা
মাথার কাছে যে কোনো
শুরু এসে বসলেই দেখি
হেমন্ত নামছে , সাবধানে
ধাপ পেরিয়ে।
একটু ভালবাসা পেলে
অধিকার ভেবে নেবার ভুল
করে ফেলে যে সমস্ত
বোকারা তারা একসময়
কুয়াশা হয়ে যায়।