সিরাতুল
মুস্তাকিম
ও গো সংগ্রাম, তুমি কার?
কেনো তুমি হেঁটে হেঁটে
আসো না কো দুয়ারে আমার!
এখন তো মাঝরাত, দুনিয়া
আন্ধার
এই নাকি মিলনের শ্রেষ্ঠ
সময়?
তবে কেন ভয়?
ওদিকে যেও না ওরা ডান
ওদিকে যেও না ওরা বাম
মাঝপথে আসো তুমি,
সরু আল ধরে আসো ছেড়ে
দিয়ে গ্রাম
সিরাতুল মুস্তাকিমে ও
গো শ্রেণী সংগ্রাম
ফেলে দাও কোল থেকে
দুধের সন্তান
না দোহানো গরুর মতন
গোঙাতে গোঙাতে আসো,
জমে থাকা দুধের ব্যথায়
ফাটুক ওলান
শহরে প্লাবন হোক, বান
হোক বান
বিপ্লব দীর্ঘায়ু হোক,
সাবধানে দু’পা ফেলে
মৃতের শহরে আসো
শীতাতপ শবাধার আমার
মোকাম
লাশ পেটে বসে আছে এ শহর,
হিমঘর
শতাব্দীর ঝিকিমিকি
স্যানাটোরিয়াম!
গোরখোদকের গান
(৩ এপ্রিল, ২০১৮
আফগানিস্তানের
কুন্দুস প্রদেশে বিমান
হামলায় নির্মম
হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়
শতাধিক কোরানে-হাফেজ
শিশু । তারা এবং
যুদ্ধের বলি জগতের সকল
প্রান্তের সকল শিশুর
কাছে
ক্ষমাপ্রার্থনাপূর্বক
)
পাহাড়ি এতিমখানা থেকে
ভেসে আসে ক্বেরাতের
সুর,
এ বিকাল, ম্লান গোধূলি
এতো কেন লাল খুনিয়া!
সাবান-গরমজলে ধোয়া
সমবেত শিশুদের লাশ
ছু্ঁয়ে গেলো তাপিত
বাতাস,
এ মুর্দা রাখবো কোথায়?
নদীতে পাতার ছায়া দোলে
পাতার আড়ালে হুদহুদ,
কার নামে ডাকো মুনিয়া
কার নামে দোয়া ও দরুদ!
আমার লহুর লালে লাল
জগতের রূহানি কোরান
গীতা ত্রিপিটক বাইবেল
মানবের পুঁথি ও পুরাণ
মাটিতে নেবে না, না
পানি
এ লাশ কী নেবে এ পাথর?
কোন গোরখোদকের হাতে
দিবো এই শিশুকে কবর!
তোমার কাফন তবে রাত,
ডুবে যাও দিন, বোজো চোখ;
সীসার মতন ঢেলে দেই
দুই চোখে হাবিয়া দোজখ।
নিগড়
এতোটা সহজ নয়
এ গভীর বন্দর,
স্রোত ভরা তাপদাহ
পাকে পাকে জ্বর
শ্যাওলার পাটাতন
ক্ষার, নুনের দ্রবণ।
আঁখি-পল্লবে ছাওয়া
এ চামুণ্ডার চোখ,
পারো তো নোঙর করো
গহীন আরণ্যক।
এখানে বালুর নিচে
জন্মযোনির কাছে
কতো মাতৃকাছিম—
এসে লুকিয়েছে ডিম।
এ শুধু পাতালমুখী—
নামে জল-কলকল;
অহে ব্যাধ, ঝাঁপ দাও
খোলো গাছের বাকল
জলের আহার তুমি
এই জলেই বিহার
হারাবে পেশল স্রোতে
মাংস-মজ্জা হাড়
অগ্নিচক্ষু এই
চামুণ্ডায় নমঃ
ত্রিকালে তলিয়ে যাও
হে নিগড়— ক্ষম ক্ষম।