বৃকতুল্য মানুষের পাপ বনাম অতুল্য কবিমানসের পাপ

প্রসূন মজুমদার

হে বিদগ্ধ পাঠক, আপনার অনুধাবনের প্রতি নিত্য ও নিষ্ঠ বিশ্বাস রেখে এই লেখার অবতারণা করলাম। আপনাকে বিদগ্ধ জেনেছি কারণ বিশেষভাবে দগ্ধ হন তিনিই যিনি তমসা বিদারক জ্ঞানরূপ অগ্নিকে তাঁর স্বীয় মানসে ধারণ করেন।তিনি দগ্ধ হন অর্থাৎ সত্যজ্ঞানা ন্বেষণে পোড়েন, পুড়ে শুদ্ধ হন। এই সেই অগ্নি যা পোড়ায় আবার আলোকিতও করে।অতঃপর একথাই ধরে নিতে হয় যে এনলাইটেনমৠ‡à¦¨à§à¦Ÿ বা à¦†à¦²à§‹à¦•à¦ªà§à¦°à¦¾à¦ªà à¦¤à¦¿à¦° জন্য মন ও বুদ্ধিকে দগ্ধ করতে হয়। তাই à¦†à¦²à§‹à¦•à¦ªà§à¦°à¦¾à¦ªà à¦¤à¦¿à¦° জ্বালাও কম নয়।

এখন কথা হল এই যে, বৃকতুল্য মানুষ অর্থাৎ সাধারণ্য কি জ্বলে না?তারাও জ্বলে, তারাও à¦ªà§‹à§œà§‡à¥¤à¦•à¦¿à¦¨à§à ¤ সে জ্বালা যতটা না চেতনার তার থেকে অনেক বেশি জঠরের।জঠরঠগ্নির জ্বালায় পুড়তে থাকা বৃক বা হায়নার মতো তারা জগৎ- চরাচরের স্থূল ক্ষুধানিবৠত্তিতে ব্যাপৃত। তাই তাদের ক্ষেত্রে যে নিয়ম খাটে, বিদগ্ধ কবিমানসের ক্ষেত্রে সেই একই নিয়ম খাটে না।

এই মুহূর্তে পাঠক, আপনি এই প্রশ্নে জারিত হবেন যে 'কবিমানস' বলতে আমরা ঠিক কী বুঝব? এই প্রশ্ন আমাদের এই সত্যপর যুগের ফেসবুক - আলোড়িত সংসারে বড়ই মূল্যবান। যেকোনো কলমচিই যদি কবি উপাধির যোগ্যতা দাবী করে বসেন তবে সমস্যা ঘনীভূত হতে বাধ্য। রাইটার্স বিল্ডিং-এ যারা কলম পেষেন সেই অফিসার থেকে কেরানিরা সকলেই যদি লেখক পদপ্রার্থৠহন তাহলে যে গোল বাঁধে আজ ফেসবুকে কবিতার মতো দেখতে নানাবিধ লেখা টাঙিয়ে দশ থেকে দশসহস্র লাইকপ্রাপৠà¦¤ কবিতা- চেষ্টক আমাদের ধারণায় সেই গোলই à¦¬à¦¾à¦à¦§à¦¿à§Ÿà§‡à¦›à§‡à ¨à¥¤ তবে এই সমস্যা আগেও ছিল, পরেও থাকবে তাই এখন এর নতুন রূপকে খুব বেশি ভয় না পেলেও আমাদের চলবে বলেই মনে হয়। আমরা কেবল এই লেখায় কবি বলতে কী বুঝব সেটা একটু স্পষ্ট করে নিই।

'ব্রহ্ম মানে বৃহৎ - বিরাট অসীম চেতনা। আর বাক হল তার স্পন্দন, প্রকাশ, উচ্চারণ। দুয়ে মিলে একাকার, অদ্বৈত। প্রতি মানুষের অন্তরে তিনি নিহিত রয়েছেন।এই কবি, এই স্রষ্টা, এই ' ব্রহ্মী বাক'। তিনি যখন যার মধ্যে জেগে ওঠেন, তখন সে হয় কবি।'
গৌরী ধর্মপালের লেখা ' পুরোনোতুন বেদের কবিতা'র এই কবিভাবনাকৠ‡ সামনে রেখে আমরা কবিকে ব্রহ্ম অর্থাৎ বিরাট অসীম সত্যের অনু-বাদক হিসাবে সাব্যস্ত করলাম।অতঃঠªà¦° আমরা কবিতুল্যমঠনস এবং বৃকতুল্যমঠনুষের সামাজিক সম্পর্ককে বোঝার চেষ্টা করতে বৃত হব।
ইদানীং কয়েকটি বিশেষ ঘটনায় বৃকতুল্য সাধারণ মনুষ্য কবিমানসের পাপ- পুণ্য বিচারে অতিসক্রিয়ॠ¤ সেই সক্রিয়তা আমার মর্মমূলে বড়ই বিস্ময় জাগ্রত করেছে। একদা ঋষিতুল্য মনুষ্যের প্রতি সাধারণ্যেঠযে সসম্ভ্রম বিনতি ছিল কালক্ষয়ে তার পরিবর্তন ঘটে কবিতুল্য মানসের প্রতি সাধারণ্যেঠসসম্ভ্রম অমনোযোগ লক্ষিত হতো।আজ হঠাৎই সাধারণ জনগণ আর কবিতুল্য মানস উভয়ে সমাজমাধ্যম ে আবির্ভূত হওয়ায় কবি এবং সাধারণের সহাবস্থানৠপরস্পরের আসন ক্রমাগত অদলবদল হতে শুরু করেছে। এরই ফলে কবি, কবিপ্রায়,à¦•à ¬à¦¿à¦¤à§à¦²à§à¦¯, এবং অকবি সকলেই কবিমানসের তুল্যমূল্ঠবিচার করার অধিকার পেয়ে বসেছেন ভেবে নানাপ্রকাঠবৃকাস্ফালঠশুরু করেছেন। সেই আস্ফালন কাম্য হোক বা না হোক তাঁদের এমত বিচারবোধ থেকে পাপ- পুণ্যের বিচারপদ্ধত িকে একবার ঝালিয়ে নেবার আশু প্রয়োজন বোধ করছি।

পাপ কী, সে সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই আমাদের উচিৎ ধর্ম ও শাস্ত্রকে একটু ঘেঁটেঘুঁটৠ‡ বিশ্লেষণ করে দেখে নেওয়া। ধর্ম এক্ষেত্রে সর্বাগ্রগঠ¾à¦®à§€ কারণ পাপ সংক্রান্ত চিন্তা ধর্মের সঙ্গেই সম্পৃক্ত, আধুনিক আইনের সঙ্গে সাযুজ্যপূঠ্ণ নয়। আইন অপরাধ নিয়ে কাজ করে। অপরাধ হল তা-ই যা অপ অর্থাৎ খারাপভাবে রঞ্জিত à¦•à¦°à§‡à¥¤à¦•à¦¿à¦¨à§à¦¤à  সেই খারাপ- ভালোর বিচারব্যবস ্থা রাষ্ট্রনির ্মিত, তার সঙ্গে পাপের পরোক্ষ সম্পর্ক কেউ আবিষ্কার করলেও করতে পারেন তবে পাপের বোধ অপরাধ শব্দে প্রকাশ পায় না।পাপ শাস্ত্রোলৠলেখিত। তাই আসুন ধর্মবুদ্ধি তে পাপ কী সেটা ছোট্ট করে একবার মনে করে নিই।

বাহাই ধর্মমতে পাপ হল সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অনুভূতি। মানুষের ব্যক্তিমন এর বিচারক।যাঠে পাপী বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে সে নিজে যদি মনে করে যে পাপ সে করেনি এবং নিজের কাছে তার অপাপের বোধ যদি স্পষ্ট হয় তবে সে পাপী হতে পারে না।

আব্রাহামিঠধর্মবিশ্বা সও এই কথারই প্রায় প্রতিধ্বনি করে বলে যে পাপ করেছো কিনা তা নিজের মনকে জিজ্ঞাসা কর। কারণ সেখানে ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরোধিতাই পাপ।আবার সেমেটিক বিশ্বাসে মানুষ অরিজিনাল সিন বা আদিপাপের সন্তান।অরৠথাৎ মানবজীবন পাপের ফল। সুতরাং সকল মানুষই পাপী আর সকলেই সেই আদি পাপমোচনে রত। এতদসত্ত্বৠও ইসলাম ধর্মে পঞ্চাশরকম পাপের কথা বলা হয়। সেখানে মনুষ্যহত্য া আর দাড়ি কেটে ফেলা এই দুই পাপই সমমাত্রার। এখন এই দুই পাপকে একাসনে বসানো যুক্তিযুকৠà¦¤ কিনা তা আপনার বিবেচ্য।

বৌদ্ধ ধর্মেও পাপবিচারে à¦†à¦¤à§à¦®à¦¬à§‹à¦§à¦•à§‡à ¦‡ গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে সেখানেও জীবনাচরণজঠিত বেশ কিছু বিধিনিষেধ আছে।সেই নিষেধ পাপের সমার্থক যতটা তার থেকে আধুনিক রাষ্ট্রে অপরাধের সমধর্মী বেশি।

এবার আসি সনাতনী ধর্মের কথায়। এই কথাই এই লেখায় বহুলভাবে স্মর্তব্য কারণ পাপ - পুণ্যের বিচারে ব্যাপৃত
বঙ্গ তনয়- তনয়া এখন মনুসংহিতা আর যাজ্ঞবল্কৠয সংহিতার ধারায় চরিত্রদোষ বিচার করতে সমুদ্যত। অতঃপর আসুন দেখা যাক যাজ্ঞবল্কৠয তাঁর স্মৃতিতে মহাপাতক, উপপাতক আর অনুপাতক সম্পর্কে কী বলছেন।

যাজ্ঞবল্কৠà¦¯ এবং মনু উভয়ের বার্তা অনুসারে প্রথম এবং প্রধান মহাপাতক হল ব্রাহ্মণহত ্যা। কারণ ব্রাহ্মণ হলেন ব্রহ্মজ্ঞা নী। ব্রহ্ম অর্থাৎ পরমকে যিনি উপলব্ধি করেন এবং সাধারণ্যে প্রকাশ করার প্রয়াস পান তাঁকে হত্যা বা বধ করা নিকৃষ্টতম পাপ। এখন প্রশ্ন হল ব্রাহ্মণ কে? মনু এবং যাজ্ঞবল্কৠয দুজনেই বেদজ্ঞ। বেদ মতে ব্রাহ্মণ হলেন তাঁরাই যারা ব্রহ্মজ্ঞা ন লাভ করেন। সেই মতে অধ্যাপনারঠগুরুরাই হলেন ব্রাহ্মণ। আর ব্রাহ্মণ কবিরা। কবি অর্থে বেদে সৃজনীশক্তঠ¿à¦¸à¦®à§à¦ªà¦¨à§à¦¨ শিল্পীদের সকলকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে। অর্থাৎ কবিমানসের বধ নিকৃষ্টতম পাপ। মহাপাতক তাঁরাও যারা মহাপাতকের সংস্পর্শে থাকেন। এখন প্রশ্ন হল মানসের বধ কীভাবে বিচার্য? এই সূত্রে আমরা একবার বেদব্যাস রচিত মহাভারতের কথা স্মরণ করতে পারি। সেখানে গাণ্ডীবকে অপমান করায় জ্যেষ্ঠভ্ঠাতা যুধিষ্ঠিরৠর প্রতি অস্ত্রধারঠকরতে যখন উদ্যত হলেন অর্জুন, তখন কৃষ্ণ অর্জুনকে শান্ত হতে অনুরোধ à¦•à¦°à¦²à§‡à¦¨à¥¤à¦…à¦°à§à œà§à¦¨ জানালেন যে তিনি এই প্রতিজ্ঞাব দ্ধ যে তাঁর গাণ্ডীবকে অপমান যে করবে তিনি সেই ব্যক্তির প্রাণনাশ করবেন। তাই প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে হলে তাঁকে বধ করতেই হবে অপমানকারী যুধিষ্ঠিরঠে। তখন কৃষ্ণ বললেন,হত্যঠ¾ না করেও বধ করা সম্ভব। মানীকে সর্বসমক্ষৠঅপমান করা আর মানীকে বধ করা সমান। অর্থাৎ শাস্ত্রমতৠসম্মাননীয় ব্যক্তির মাননাশ করা হল তাঁকে জীবিতাবস্ঠায় বধ করা বা হত্যা করা।

এবার ভাবুন , কোনও অধ্যাপক বা কবিকে যদি ভরা সভায় সর্বসমক্ষৠঅপমান করা হয় তাহলে তাকে কি বধ করা হয় না? অতএব অধ্যাপক/ কবির সম্মানহানি মনু এবং যাজ্ঞবল্কৠয সংহিতা অনুযায়ী সবথেকে বড় পাপ। সেই পাপ যে করে তার সমর্থনকারৠরাও মহাপাতক। এরপরে আপনি যদি কবিকে ব্যাভিচারৠর অভিযোগে সর্বসমক্ষৠঅপমান করেন তাহলে আপনারই মতে আপনি মহাপাতক। কবি পাতক কিনা তা এরপরে বিবেচ্য। এখন দেখে নিই ব্যাভিচার কী ধরনের পাপ। মনু এবং যাজ্ঞবল্কৠয এই ব্যাভিচারঠে অনুপাতক অর্থাৎ খুচরো পাপ বলেছেন। সাধারণ কেউও যদি ব্যাভিচার করে তাহলে সে খুচরো পাপ করবে। কিন্তু ব্রাহ্মণহত ্যার মতোই সুরাপান শাস্ত্রমতৠমহাপাতকের কর্ম। অর্থাৎ আপনি প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যৠ‡ মদ্যপান করতে করতে মহানন্দে অন্যের পাপের বিচার করছেন ভালো। কিন্তু মশাই, আপনারই বিচারে আপনি সুরাপানহেঠু মহাপাতক। সুরাপান সংক্রান্ত বিধি কৌটিল্য দিয়েছেন বটে এবং সেখানে তিনি রাজাদেশমতৠসুরাপানে বৈধতাও দিয়েছেন তবে কৌটিল্য মতে পাপের বিচার à¦¨à§‡à¦‡à¥¤à¦¸à§‡à¦–à¦¾à¦¨à §‡ অপরাধের বিচারপদ্ধত ি লিখিত আছে। পাপ নিয়ে কথা বলার সময় আরও একটা বিষয় আমাদের অবগত থাকা দরকার যে পরনিন্দাও পাতকের কাজ। সুতরাং পরনিন্দার পাপ না করে আপনার বিচারে যিনি পাতক তাঁকে পরিহার করাই শ্রেয় নয় কি? এখানেই প্রশ্ন হল যে আপনার বিচারে কবি পাপী হতে পারেন কিনা। এবার আসুন আমরা একটু সেই বিচারপদ্ধত ির পদ্ধতিগত বিচার করে নিই।

আপনি বা আমি যখনই কবিকে বিচার করতে যাই তখনই তাঁর সঙ্গে আমাদের একটা সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এখন দেখুন সম্পর্ক ব্যাপারটা ঠিক কেমন? এই সম্পর্ক হল দুই বিন্দুর মধ্যে আকর্ষন এবং বিকর্ষণ / আকর্ষণ বা বিকর্ষণ।

.A→<→<→<→<→⠆’<→→<→.B

এবার ধরা যাক আমি বা আপনি অর্থাৎ একজন সাধারণ ব্যক্তি A বিন্দুতে অবস্থান করছেন আর কবি রয়েছেন Bবিন্দুতে। এবার যদি কবি অর্থাৎ B বিন্দুর কোনো বিচ্যুতি ঘটে তবে A ও B উভয় বিন্দুতেই তার প্রভাব পড়বে। ব্যাপারটা অনেকটা এমন হবে যে A ও B উভয়েই একটু বিচ্যুত হয়ে নতুন C ও D অবস্থানে আসবে?
D
/
A B
/
C
এবারে C অবস্থান থেকে আমরা D কে বিচার করতে যাব কীভাবে? কারণ তা করতে গেলে আগে তো আমাদের নিজের বিচ্যুতিটা মাপতে হবে। কিন্তু একেবারে বিজ্ঞান - দর্শনের প্রতর্কমতৠএকই নির্দেশতনৠত্রে একটি বিন্দুতে বসে সেই বিন্দুকে অনুপুঙ্খ বিচার করা সম্ভব নয়। সেই হিসেবে আমরা নিজের বিচ্যুতিকৠমাপতে পারি একমাত্র নিজের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে,কিন্তু আফশোষ হল এই যে সাধারণ জনমন এইজন্যেই সাধারণ যে সে অন্যের চোখে নিজেকে দেখতে শেখে না। অতঃপর সাধারণের বিচারপ্রকৠরিয়ায় নিজের বিচ্যুতি বা এক্ষেত্রে C অবস্থানে তার সরে আসার ব্যাপারটা সে অনুভবই করতে পারবে না।তাই কবিকে সে নিজের পূর্বের অবস্থান থেকেই মাপতে যাবে এবং তার বিচার ত্রুটিপূরৠণ হবে। অপরপক্ষে কবি এই জন্যেই কবি যে তিনি সীমার মাঝে অসীমকে, আমার মাঝে তোমার প্রকাশকে অনুভব করতে পারেন।তাই যিনি কবি তিনি সাধারণের এই ব্যর্থ প্রয়াস পরিমাপ করতে পারবেন। মূলত এই ত্রুটি থাকে বলেই মনু বা যাজ্ঞবল্কৠয - এর মতো বেদজ্ঞ সাধারণকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে কবিকে বা
ব্রহ্মজ্ঞা নীকে সাধারণের সীমাবদ্ধ জ্ঞান দিয়ে বিশ্লেষণ করতে যাওয়া মহাপাতকী। অতঃপর হে পাঠক, আমরা কি কবিকে নিরন্তর অপ্রসিদ্ধ আক্রমণ ও রক্তাক্ত করার পাপ থেকে বিরত থাকতে পারি না?

এই প্রশ্ন জিইয়ে রেখেই এবারে আসি কবির পাপ প্রসঙ্গে। কবির কি তবে কোনো পাপই নেই? তিনি কি পাপের ঊর্ধ্বে? তা তো নয়। তবে কী তাঁর পাপ?

শাস্ত্রমতৠযখন কোনো ব্যক্তি ধর্ম থেকে বিচ্যুত হন তখনই তিনি মহাপাতক হন।এই ধর্ম শব্দের উৎপত্তি ধৃ ধাতু থেকে। ধৃ ধাতুর অর্থ ধারণ করা। অর্থাৎ কবিকে যা ধারণ করে আছে সেই চরিত্রবৈশি ষ্ট থেকে বিচ্যুতিই কবির পাপ।

তাহলে কবির ধর্ম কি? কবির ধর্ম কবিতার সাধনা। পরম সত্যের উপলব্ধি। যেখানে মনুষ্যবিচা র পৌঁছতে পারে না সেই অনাদি অস্তিত্বেঠ° সঙ্গে মন এবং বাকের à¦¸à¦‚à¦¯à§‹à¦—à¦¸à¦¾à¦§à¦¨à ¤ কবি কখনোই রাষ্ট্রনির ্মিত à¦¸à¦¤à§à¦¯à¦—à§à¦²à§‹à¦•à ‡ সত্যজ্ঞান করবেন না। তিনি জানেন যে রাষ্ট্রের আরোপিত বিধিবদ্ধ সত্য আসলে মিথ্যা। সেই মিথ্যার আকৃতিকে যদি তিনি বিকৃত না করে দেখতে চান তাহলেই তাঁর স্বধর্ম থেকে তিনি বিচ্যুত হবেন অর্থাৎ পাপ করবেন। অতএব আমার মতো হে সাধারণ্য কবি আমাদের কাছে সাক্ষাৎ এক বিপত্তি। কারণ তিনি আমাদের গড়ে তোলা মিথ্যার সত্যজগৎকে ভেঙে দেন। আমাদের চেনা পথে তিনি চলেন না। আমাদের নির্মিত সত্যকে মিথ্যা প্রমাণ করার দুর্গম পথে তাঁর যাত্রা তাই আমরা তাঁর পথ অবরুদ্ধ করতে চাই। ক্ষমতা প্রয়োগ করে,হ্যাঁ বন্ধু,আমরাঠ‡ ক্ষমতার অপব্যবহার করে কবির উপর দণ্ডাজ্ঞা জারি করে তাঁকে তাঁর সাধনা থেকে বিচ্যুত করতে চাই কেবল এই ভয়ে যে তাঁকে বশীভূত না করতে পারলে তিনি আমাদের সকল অপকর্মকে নগ্ন করে দেবেন। কবি নিজে নিজেকেই নগ্নভাবে সত্যের সামনে আবিষ্কার করেন তাই তাঁকে আর নগ্ন করে আনন্দ পাওয়ার অশাস্ত্রীৠŸ উদ্যোগ না নিলেই সমাজের তথা আমাদের à¦®à¦™à§à¦—à¦²à¥¤à¦•à¦¾à¦°à £ কবির প্রদর্শিত পথই আমাদের পাথেয় হওয়া উচিৎ। তাই কবিকে নিরুপদ্রবৠতাঁর সাধনা করতে দেওয়া আপাতভাবে বিপজ্জনক মনে হলেও আখেরে আমাদেরই যে লাভ এই বোধ আমাদের থাকা উচিৎ। মুশকিল হল আমরা কবি বলতে অনেকসময়েই ছন্দ ও অন্ত্যমিল - মালিকদের বুঝি। অথবা à¦…à¦²à¦‚à¦•à¦¾à¦°à¦¸à¦®à§ƒà ¦à§à¦§ কিছু কবিতার মতো বাক্যের স্রষ্টাকে কবিজ্ঞানে বিভ্রান্ত হই। এখন কথা হলো যারা এই কবিতার সাধনায় রত তারাই কি কবি? না, তারাও বেশিরভাগই কবি নয়।তারা কবি হয়ে উঠতে চায়। কবি হয়ে ওঠার দুর্মর সাধনা করে চলাই তাদের কাজ,তপস্যাॠ¤ তাদের তপস্যার নানাস্তরে নানাসিদ্ধি র ছটা আমরা তাদের লেখায় অনুভব করি। অবহেলা,à¦¬à¦¿à¦¦à à¦°à§‚à¦ª, দারিদ্র্য, বিচ্ছিন্নঠার মতো কষ্ট সহ্য করেও তাদের দুর্দমনীয় সাধনাকে অনুভবী মন স্পর্শ করতে পারে। যারা পারে না তারা তাদের মাপতে বসে।অপরাধ করে না বটে তবে পাপ করে। যিনি কবিতার সাধক তিনি এইসমস্ত নিচুস্তরেঠসমালোচনাকৠ‡ গায়ে মাখেন না। কারণ নকল, ভণ্ড এই রাষ্ট্রতাড় িত বাস্তবতার অন্তর্নিহঠত সত্যই তাঁর খোঁজ। তিনি পরমকে প্রাপ্ত হন না, তবে পরমের দিকে নিরন্তর যাত্রা করেন আর তমসা থেকে আলোর দিকে এগিয়ে চলেন। ব্যর্থ হন বলেই আবারও সাধনায় প্রবৃত্ত হন। আবারও ভাষায় ধরতে চান à¦…à¦¬à§à¦¯à¦•à§à¦¤à¦•à§‡à ¥¤ সেই কাজে,সেই সাধনায় তুচ্ছ এই ন্যায় - অপরাধের সাজানো সভ্যতা তাঁর কাছে মাটির খুরির মতো ভঙ্গুর। কঠিন তাঁর পথ,কঠোরতর তাঁর ব্রত। সমস্ত অমৃত আর সকল গরল তাঁর ভক্ষ্য, তাঁর পেয়। তিনি স্বতোশ্চলॠতুচ্ছ আমাদের ন্যায়নীতিঠবিচার তাঁকে রুদ্ধ করতে পারে না। যদি করে তবেই তিনি ধর্মচ্যুত, তিনি পাতক। এ ছাড়া কবির পাপ নেই, পুণ্য নেই। তিনি একই দেহে দেবদূত এবং যমদূত। অন্ধকারকে হত্যা করে তিনি আনবেন আলো। সেই আলো যা অপাপবিদ্ধ পরমের ছটায় প্রোজ্জ্বঠ।