মিথ্যার
দ্বিপাক্ষিক
চুক্তি
জোছনার ডাক বাঘের মতন
জেনে, সন্তর্পনে গয়না
নদীর কাছাকাছি
পৌঁছেছিলাম।
ভূতগ্রস্ত,
শিকার-তন্ময়, অল্পেই
মাতাল হওয়া সেই উদ্যত
আলোর থাবার কাছে থমকে
থাকে স্রোত। তার চড়ায়
দু দেশের জলবন্টন
চুক্তির দফারফা করে
জলের মধ্যে মিশে রয়েছে
আর্সেনিক সন্ত্রাস।
আমি তার নীল স্বাদ পান
করতে করতে করতল থেকে
গড়িয়ে যেতে দিই। মাঝে
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের
ধারাবাহিক ব্যর্থতা
ঘাই মেরে যায়। বিধুর হয়
সীমান্ত বাণিজ্য।
জলবিভাজনের কাছে
প্রস্তরবৎ দাঁড়িয়ে
যাবজ্জীবনের পণ্যবাহী
পোত। জল বয়ে আসে কিন্তু
তাতে রুপোলী শস্য আসে
না। নিষেধাজ্ঞার
ঘেরাটোপে হাসফাঁস করে
প্রেম। অথচ, ওপারের
পানের বরজের উপর মেঘ
জমলে এ পারের কংক্রিট
হৃদয়ে বৃষ্টি পড়ত।
বিশুদ্ধ অশ্রু রোজ মিশে
যেত মায়ের শৈশবের সেই
গয়না নদীতে। বালির
মধ্যে স্মৃতির কঙ্কাল
চিকচিক করে। পাথরের
ফাটলে দেশভাগের
মানচিত্র ফুটে উঠতে
থাকে রোজ
কাশ্মীর কি কলি
উদ্যত বেয়নেটের মত
ঝলসাচ্ছে ঝিলমের জল,
রোদের রুক্ষতা কিছু
বেড়ে গেছে শাসনের
তাপে,
সামনেই ঝুঁকে পড়া জিরো
ব্রিজ
সশস্ত্র পোস্ট গুনে
গুনে বাড়ি ফেরে বিষন্ন
শহর।
ঝিলমের কোনও দায় নেই,
মানুষের মত তার
কাঁটাতার নেই
সে ইতিহাস বহতা কিশোরীর
মত
সীমান্তে বেপরোয়া,
ঘোরতর যুদ্ধ রাতেও
সে অনায়াসে ভেঙেছে
চুড়ি, আর
তার শব্দ, শরীরে নিয়ে
বয়ে গেছে দূরে
যেখানে নীলম নামে তার
পরিচয় প্রখ্যাত!
এই নদীর পারে কাঠের ছোট
বড় সমবায়,
গোলাঘরে কাঠচাপা হয়ে
আছে লাভা
যে কোনও সময়ে ফেটে যাবে
বটফলের মত,
---- এ কার দেশ ? এ কোন
সন্ত্রাস তরাজু?
পশরা বোঝাই নৌকা এসে
মখমলি শিকারায়
ধাক্কা মারে, জল
বাণিজ্যের এ এক প্রাচীন
নিয়ম।
পর্যটন মুখর সুদিন ছিল
আগে,
আখরোট ছিল, কেশর, রঙিন
পাথর, এলাচ, নবীনা গহনা,
সে সব স্মৃতির জল কেটে
কাওয়া চা-এর
কেটলি-বাহিত নৌকা নিয়ে
এগিয়ে আসেন গুলাম,
তিনিই নাম নেন
মহম্মদের
তাঁর তিনকূল গিয়েছে,
আর কার যে কার কতো কূল
ভাসবে ঝিলমে ?
সাইরেন বেজে গেছে আগে,
কার্ফুর পোশাক পরে
নামছে কুয়াশা,
শুধু কুয়াশাই নয়, এই
গোটা কবিতাটিকেই
অস্বীকার করে
ঝিলমের পাশের বেঞ্চে,
বেয়নেটকে মাছির মত
সরিয়ে দিয়ে, বসে আছে
চিরন্তন ডেনিম
যুবক-যুবতী
তাদের সংলগ্ন আঙুল থেকে
পায়রা উড়ছে,
ঝিলম ওদের দেখছে
নীলম ওদের দেখছে
আর লজ্জা পাচ্ছে খুব…
মেক ইট লার্জ
১
ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে একে
একে
নেমে যাচ্ছে বিষন্ন
জোকারেরা,
শেষ হল শীতের ছুটি আর
ক্রশকাঁটার স্নেহ
সার্কাসের তাঁবু ছেড়ে
চলে যাচ্ছে ময়দান,
নিস্তব্ধ উইকেটের
পিছনে একলা কিপার
অপেক্ষা করে আছে
পরবর্তী ক্রিসমাসের
জন্য
২
একটি সিগারেটের কাছে সব
তাপ
স্বীকার করে যাব, এখন এই
বিয়োগ বেলায়,
তামাকগন্ধী বাতাসের
থেকে হাওয়া উড়ে এলে
গোপনে সারবো স্মৃতি
আচমন! স্বাদের প্রমাদ
ঘটে গেলে, ত্রাস
গুরুভার বিষন্ন
রাত-ঘড়িটির
কাছে নিকোটিন দন্ডিত,
দাঁড়াবো আবার