সীমা-না
আমার দ্যাশের মেয়া,
ইছামতি-পারের কড়ই
গাছের গোড়ায় একলা—
এইর’ম দুপুরে মনে লয়
কেউয়া যদি হইয়া গেলে,
ভুইলা যামু ঠোঁটের
চিড়বিড়
কিড়াটারে? খালি একটা
ছবি দেখা: নিজে
সে-তসবির
যদিও, নদীও উল্টা,
কুসুম-কুসুম হাওয়া, সই,
বুকে হুহু আইসা ঢোকে,
চোখে দেখি, পা-দুইটা
তৎপর
মাটি ছোঁয় না
গ্যাসবেলুন, কিন্তু আমি
উড়িও না, ঐ
পজিশনে জইমা হিরা : একটা
নামে লেখা চরাচর—
বানান জানে না বইলা,
মেয়াটারে চইলা যাইতে
হয়।
পলাতকা ছায়া
নীরবে ভাসছে ঘুড়ির মতো
একলা চিল
মুচিবিলাই। তুমি হাসছ
লাটাই-হাতে,
ও ননিচোর, দেয়ালায় আলা
মাগরিবের
তামাটে মুখ। বিছানায়
এসো, বাস্তুসাপ,
আমি এখন তোমাকেই গা’ব,
মঞ্জুদা,
যে-তুমি যুদ্ধে শহিদ
কোনো শামসাদের
দ্বিতীয় পুত্র, তোমার
মাতা নির্মলা—
সাবিনা নাম নিয়ে তাও
ছিল অন্ত্যজ
পিতা-শ্বশুর দু’কুলেই।
অহো, চার ছেলে
কত-ঘাটের খেল জল… শেষে
এই মড়ার
খাটিয়াতেই হ’ল ঠাঁই।
আমি ভাই পেলাম।
নাকি গো বন্ধু? দোসর না
সোদর? আমার
আমি দ্বিগুণ হ’ল, ফাটল
বোমার ফাটা
যেন একাত্তুরে… হায় রে,
এতিমখানায়।
মেয়েরা
কলকল বেরিয়ে আসছে স্কুল
থেকে ইউনিফর্মাল
তাদের গল্পের কোন শেষ
নাই, শুরু নাই, শুধু—
দ্যাখ্ ঐ বান্দরটারে
কেমন কেলায়ে আছে দাঁত!
ঝট্ ক’রে দুলে যায়
পনিটেলগুলি—
বান্দরটা শওকত,
আমাদের।
দু’বেলা টহল তার
লক্ষ্মীবাজারের
বড়রাস্তা— দুই-দুইটা
বালিকা-বিদ্যালয়ের
কাভারেজ। কারো-কি
চিরকুট পেল কোনোদিন
আঁকাবাঁকা রঙিন হাতের?
কাঁপাকাঁপা রঙিন
বুকের?
কবিতা বনিতা লতা— ওরফে
মাল।
সারওয়ার কইছিল কবে
আরেফিন ভাইয়েরে একবার:
আপনেগো ক্লাসটা-তো,
মিয়া, মালে-মালারণ্য।
সুবর্ণা (মোস্তফা) আপা
সে-ক্লাসে পড়তেন।
সংবেশন
(সাহা-কে)
প্রগাঢ়? গভীর? তরঙ্গিত,
তবু স্থির—
জীবন-মৃত্যুর
মহামিলন-গোধূলি!
মলমলের আঙুলের স্নিগ্ধ
জ’মে থাকা
পাপড়িতে শিশির-জ্বলা
আলোর শিউলি।
এই মুখ— অই মুখ— এই
মুখোমুখি—
দৃষ্টি, দৃশ্য ও
দ্রষ্টার এ-একীভবন,
সরে ধীরে আকাশের আনীল
মশারি—
প্রকাশ— ততটা ব্যক্ত,
যতটা গোপন।
দ্রিঘাংচুর
চোঙা
মরা, শুকনা পাতায়
রাস্তা ভরা,
বিরক্তিকর কচরমচর;
ভিড়ও
বেজায়— বড়দিনের বাজার।
কে যায়
ক্রাচে চইড়ে, ক্যান-যে
এরা বাঁচে
খোদাই জানে, সরকারও
রাম-ভোদাই,
পালে, পয়সা দিয়া,
পঙ্গুপালে।
একটা মাতাল টলতে-টলতে
ব্যাগটা
পথে ফেলেই পেরিয়ে গেল,
ওতে
বালও নাইক্কা! নেংটি এই
মাতালও
তালে বিড়াল— ব্যাগও
ছিঁড়া; তালেব,
খারাপ কারে কয় দেখবি?
খাড়া!
চীনা ধুমসি
কুত্তা-হাতে ছিনা
উঁচা কইরে হাঁটতেছে
নাক-বোঁচা
সাদা-চামড়া পাইলে যে-সব
গাধা
পারে লেংটি খুইলে নাচে;
বারেক
বুকে তাকাই, তারপরে যাই
ঢুকে
রাতের পাবে, বাপের
আস্কারাতে।