আজকাল গঙ্গা ধরে গেলেই
মনে হয় কিছু জীবিত
থাকার ব্যবসা শুরু
করবো। না, আসলে এই সময়
বেঁচে আছি এটাই বোধহয়
অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক।
তাও না বেঁচে আছি কেন!
মরে গেলেই বা কী আর হবে?
এটাই ভাবতে ভাবতে
পুরোনো এক বন্ধুর ফোন
নম্বরটা খুঁজতে থাকি।
সেই বহু বছর আগে কথা
হয়ে ছিল। এখন কেমন আছে!
না আসলে, এই সময় তেমন
করে কেউ ভালো নেই। সবাই
সবার দূরত্ব বজায়
রাখছে। আসলে এই
দূরত্বটা ছিল। কিন্তু
টের পাইনি। যেভাবে
গঙ্গা নদীর বয়স বেড়ে
গেছে। কারখানার গা
বেয়ে বেড়ে ওঠা গাছ
কিছুটা দূরে গিয়ে হাই
তুলছে। ওরা সবাই ঘুমিয়ে
আছে। কারণ ওদের ঘুমোতে
বলেছে নেতা আর
মালিকেরা। তাই খিদে
চাপা দিয়ে গঙ্গা জলে
ওইসব পাঁচিল,
যন্ত্রপাতি, শব্দ, আর ওই
কাজের লোকগুলোর পেট
ভরবে না। সেই কথা গঙ্গা
জানে। কিন্তু কোথায় যেন
ছিলাম... আজকাল কিছুই যেন
মনে রাখতে পারি না!
বিকেলে সাইকেল চালিয়ে
এই সিঁড়িতে বসি। ভয়ে
ভয়ে মুখোশ খুলে
সিগারেট ধরাই। হাতে
বেঁচে থাকার তিন ফোঁটা
জীবন দিই। ধোঁয়া উড়তে
থাকে। অবসরের পাড়
ঘেঁষে। যেখানে পাখিরাও
অবিকল আমার মতন। না আমি
নিজেকে পাখি ভাবতেই
পারি! এই চুপচাপ বসে
থাকতে থাকতে অনেক কিছু
মনে হয়। কেমন যেন
নিজেকেই নিজে খুঁজতে
থাকি!
ছোটবেলায় স্কুলের
বন্ধুদের মাঝে মধ্যে
রোল নম্বর ধরে ডাকতাম।
তেরো রোল নম্বর ছিল
আমার ভালো বন্ধু।
পাঁচিল টপকে সোনালীতে
প্রথম সিনেমা। ঘেঁষের
মাঠে গড়াগড়ি খাওয়া।
বাড়িতে উত্তাল ক্যাল।
এখন আর এইসব পারি না।
বয়স হয়েছে। এখন ঠিক
ওমনি হতে পারবো না! এই
দুদিন ছাড়া পেয়ে আরও
যেন ম্যাদামারা হয়ে
গেছি।
বহু দিন পর এলাম। আগে
থেকেই ভেবে আসি
সিঁড়িতে বসে কাকে কাকে
ফোন করবো! কেউ যদি ফোন
করে তাহলে ফোন ছাড়তে
চাই না। যাতে আমাকে
সবাই খুব ব্যস্ত ভাবে!
কিন্তু আজকে কেউ তেমন
ফোন করছে না। ওপারে
একটা চুল্লি আছে। এখন
এই চুল্লিতে মরাটা বেশ
ভালো ব্যাপার। নাহলে
অ্যসিড দিয়ে পুড়িয়ে
ফেলা হবে। সেটা ভাবতেই
বেশ খারাপ লাগছে।
এবার একটা বিড়ি ধরাই।
পাশের ছেলেটা আর
মেয়েটা মনে হয় আমাকে
দেখছে। না কি আমি ওদের
দেখছি ঠিক বুঝতে পারছি
না! সবাই সবার দিকে
তাকিয়ে দৃশ্য দেখছে।
কিন্তু মুখোমুখি কেউ
নেই। নাহ্, বিড়িটা
ধরাই। কানের কাছে বিড়ি
ঘসার শব্দ বেশ পছন্দের।
একটা মিউজিক আছে। যদি
একটু চা খাওয়া যেত!
চায়ে কী তিন ফোঁটা
দিলে হবে? কাউকে ফোন করে
জানবো! শালা খিস্তি
মারবে। না থাক, বাড়ি
গিয়েই খাবো। বিড়ির
মধ্যে একটা ব্যাপার
আছে। ছোটবেলায় শুনে
ছিলাম বিড়ি হল অভিমানী
প্রেমিকা! যে ঠিকঠাক
চুমু না খেলে নিভে
যায়...
না কিন্তু রোল নম্বর
তেরো বন্ধুর নামটা যেন
কি? মোবাইল ঘাঁটছি
কিন্তু নামটা! তেরো
নামে তো আর সেফ করা নেই।
আচ্ছা ফোন নম্বরটা মনে
থাকতে পারে! দেখি
একবার... নাহলে ভুল হবে।
একটা কুকুর অনেকক্ষণ
ধরে আমার দিকে তাকিয়ে
আছে। যেন আমাকে দেখেই
দাঁত কেলিয়ে যাচ্ছে।
লেজ নাড়ছে না।
শুধুমাত্র মুখ
ভ্যাঙাচ্ছে। এতে ঝাঁট
জ্বলে যাওয়ার কিছু
নেই! কিন্তু কুকুরটা তো
আমাকে চেনে না! তাহলে
আমাকে দেখে এত মারাচ্ছে
কেন? বানচোদ বিড়িটা
সেই নিভে যাচ্ছে।
হ্যাঁ, কিন্তু তেরো
নম্বর... একটা ডায়াল করে
দেখি। তারপর বাড়ি
গিয়ে না হয় পুরোনো
খাতার পেছনে খুঁজে
দেখবো। ওর বাড়ি তো
সবেদাবাগানে। কী যেন
নাম! দেখি একবার কল করে।
আমার ছোট ফোনটায়
বাঁড়া কে কল করছে...??