চিনের গ্রামাঞ্চলে লকডাউনঃ রাও জিনহুই-এর কবিতা

অনিমিখ পাত্র



কবি পরিচিতিঃ রাও জিনহুই-এর জন্ম ১৯৮৩, মধ্য চিনের হুবেই প্রদেশে। সে দেশের ভারী ইন্ডাস্ট্ঠিময় দক্ষিণ অংশে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। তিনি নিজেকে বলেন চাইনিজ সমাজের ‘নিম্নতম অংশ’-এর লোক। তাঁর কথায়, সময় সময় তিনি যা যা প্রত্যক্ষ করেন আর তা থেকে যে আবেগ তার মধ্যে তৈরি হয় তাকেই তিনি শব্দের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা করে থাকেন।

প্রাক্‌ক ¦¥à¦¨à¦ƒ
এই কবি হলেন একজন প্রবাসী শ্রমিক। তিনি চিনের গ্রামাঞ্চঠথেকে আসছেন বটে, কিন্তু বছরের অধিকাংশ সময় তিনি শহরে কায়িক শ্রমিক হিশেবে কাটান। চান্দ্র নববর্ষ (যেটাকে পশ্চিমে ভুলভাবে চাইনিজ নতুন বছর বলে চিহ্নিত করা হয়) এবছর পড়েছিল ২৫ জানুয়ারি এবং এটা সেইসব দুর্লভ সুযোগের একটা যখন এই প্রবাসী শ্রমিকেরা তাদের আদিভূমিতে পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবার জন্য ফিরে যেতে পারেন। এবছর এই চিরাচরিত উৎসবটির সঙ্গে মহামারীর ছড়িয়ে পড়ার সময়কাল মিলে যায়। সাধারণত লোকেরা এক সপ্তাহ এই উৎসবে বাড়িতে কাটায়, একে বলে ‘সোনালি সপ্তাহ’। ২০ জানুয়ারি ন্যাশনাল এমার্জেন্ঠি এবং ২৩ শে হুবেই প্রদেশে লকডাউন ঘোষণা হয়, উহান শহরটি এই প্রদেশেই অবস্থিত। ২৩ শে তে প্রথমে এক সপ্তাহ তারপর অনির্দিষ্ঠকালের জন্য ছুটি বর্ধিত হয়। অনেক শ্রমিকই মার্চের মাঝামাঝির আগে শহরে ফিরে যেতে পারেননি। এই ঘটনাগুলি মনে রাখা প্রয়োজন। কারণ কবিতাগুলিঠ¤à§‡ স্পষ্টভাবৠদুটো উপাদানের পরস্পরছেদ দেখা যাবে, অর্থাৎ গ্রামাঞ্চঠে প্রবাসী শ্রমিকদের ফিরে আসা (তাদের অনেকেরই জন্মভূমি), স্মৃতিমেদৠরতা ও রোমন্থনসহॠএবং ভাইরাসের প্রকোপ। দুটি উপাদানই কবির সৃজনশীলতাঠদ্বারা সংশ্লেষিত ও সংমিশ্রিত হয়েছে। তৈরি করেছে এক মৌলিক ও মুগ্ধতাপ্ঠদানকারী কবিতার অভিজ্ঞতা।
-ফেদেরিকৠা পিচেরনি


অস্থায়ী শ্রমিক
বারোতম মাসের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে
আমি মসৃণ করি আর মুড়ে নিই
সারা বছরের তিক্ততাগুঠ²à¦¿
নিঃশব্দে আমি তাকে রেখে দিই হৃদয়ে আমার
এককোণায় লুকিয়ে
ধোপদুরস্ত জামাকাপড়েঠ° সঙ্গে
আমি পালটে নিই সেই একইরকম পুরনো ইউনিফর্মটঠ¾
আমি টেনে নিয়ে যাই যে স্যুটকেস
তা আটকে যায় শহরের ভাঙা টুকরোয়
চারিদিকে ছড়িয়ে আছে
আনন্দ
যা আমি বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি
উদ্বিগ্ন হয়ে অপেক্ষা করছে
পরবর্তী প্রস্থান।

এক গ্রামের দেওয়ালে একটা পুরনো স্লোগান
“দশ হাজার বছর!”
শেষকালে সেটা হয়ে দাঁড়াল কেবলমাত্র এক পরম মহিমায়
মানবতার এক আকাঙ্খা
কিন্তু যারা বেঁচে থাকতে সফল হল
আর এড়িয়ে যেতে পারল-
বার্ধক্য
অশক্ততা
অসুখ
মৃত্যু
যারা একসময় à¦šà§‡à¦à¦šà¦¿à§Ÿà§‡à¦›à¦¿à ² “দশ হাজার বছর!”
যখন তারা সারিবদ্ধভা বে মার্চ করে ভক্তিভরে পেরিয়ে যেত
তারা এখন সেই “দশ হাজার বছর”কেই অনুসরণ করে চলে গেছে
কেবল একটা ছোপধরা দেওয়াল
এখনও গতদিনের দাগ ধরে আছে
তাদের সময়ে টকটকে লাল, আর এখন শুয়োরের রক্তের মতো লাল

স্লোগানটা “দশ হাজার বছর”
স্পষ্ট, ঠিক তখন যেমন ছিল।


** এই অভিবাদনটিঠে ‘লং লিভ’ বা â€˜à¦¦à§€à¦°à§à¦˜à¦œà§€à¦¬à ¿ হোক’ বলেও অনুবাদ করা যায়, কিন্তু à¦†à¦•à§à¦·à¦°à¦¿à¦•à¦­à¦¾à ¬à§‡ এর মানে ‘দশ হাজার বছর’। ঐতিহাসিকভঠবে এটি ছিল সম্রাটকে ভক্তিভরে অভিবাদন। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ থেকেই এটা অনেকটা জনপ্রিয় মানে’র দিকে ঝুঁকে যায় এবং স্লোগান হিশেবে গণ à¦†à¦¨à§à¦¦à§‹à¦²à¦¨à¦—à§à ²à¦¿à¦¤à§‡ ব্যবহৃত হয়। সাংস্কৃতিঠ• বিপ্লবের সময় (১৯৬৬-১৯৭৬) এই কথাগুলি ভিতরের ও বাইরের দেওয়ালে বড়ো বড়ো লাল অক্ষরে লেখা থাকতো, চেয়ারম্যাঠমাও জেদং এবং চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির à¦‰à¦¦à§à¦¦à§‡à¦¶à§à¦¯à§‡à ‡ এই অভিবাদন জানানো হতো। এমনকি আজও à¦—à§à¦°à¦¾à¦®à§‡à¦—à¦žà§à œà§‡ আর কিছু শহুরে এলাকায় এই স্লোগান দেখতে পাওয়া যায়, যদিও সেই লেখা সময়ের সঙ্গে ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে।


à¦—à§à¦°à¦¾à¦®à¦¾à¦žà§à šà¦²à§‡ মহামারী থেকে পালিয়ে
এক গ্রাম্য রাস্তায়
একটা বুড়ো ষাঁড় ফিরে আসছে ধীরেসুস্থৠ‡
মাঝখানে কোনো মাস্কের বাধা ছাড়াই
সে উদ্দেশ্যহৠ€à¦¨à¦­à¦¾à¦¬à§‡ চিবোচ্ছে
সময়ের অবসন্নভাব
সূর্যাস্তৠর সময় ফায়ারপ্লেঠের ধোঁয়া
সতর্কতামূঠ²à¦• আগুনের মতো
জন্ম দেয়
এক সুপ্রাচীন ইশারার
সূর্য উঠছে যেমন সে চিরকাল ওঠে
ফুল ফুটছে যেমন তারা ফুটত আগেও
এবং পাহাড় ও নদী
এবং সুরা ও কবিতা
তুলনাহীন এখানকার ভূ-প্রকৃতি* জার্নিটা বেড়ে যেতে থাকা ছাড়া
আমি তেমন কোনো
অনিয়ম লক্ষ্য করিনি
এক মা ও তার ছেলের হইচই
আমাদের প্রতিবেশীঠ°à¦¾, মারামারি করছে
বাজিপটকা ছুঁড়ছে
অনবধানবশত
খানখান করে দিচ্ছে গ্রামাঞ্চঠের নৈঃশব্দ

*লাইনটি ১৯৩৪-এ মাও জেদঙের লেখা ল্যান্ডস্ঠেপ কবিতা থেকে উদ্ধৃত।



মূল চাইনিজ থেকে ইতালিয়ানঃ ফেদেরিকো পিচেরনি
ইতালিয়ান থেকে ইংরাজিঃ পিনা পিক্কোলো
ইংরাজি থেকে বাংলাঃ অনিমিখ পাত্র
*â€™à¦¦à§à¦¨à¦¿à§Ÿà¦¾à¦¦à¦¾à °à¦¿â€™à¦° বন্ধুজার্ন াল ‘দ্য ড্রিমিং মেশিন’ এর সৌজন্যে ও অনুমতিক্রঠ®à§‡ এই অনুবাদপ্রঠল্প।*