হওয়ায় একটা পোড়া গন্ধ
ভেসে আসছে।কিছু একটা
পুড়ছে।কি পুড়ছে?কেন
পুড়ছে?কেউ কি পোড়াচ্ছে
নাকি নিজে নিজেই পুড়ে
যাচ্ছে?
'ভাবছি এবার ঘুরে
দাঁড়ানোই ভালো।এত কাল
ধরে এত কালো মেখেছি
দু'হাতে...'
ঘুরে দাঁড়াবার অবসরে
হাত সেঁকছে আগুন।উজাড়
করা আমার সবটুকু কালো
এখন পোড়া ছাই হয়ে নদীর
নীল গর্ভজলের
অন্ধকারে...।দূরে অনেক
দূরে সেতুগুলো
ভাঙ্গছে,আমি টের
পাই।ভেঙ্গে যাওয়া ঐ
সেতুগুলো আর পুড়ে যাওয়া
একটা ভুল জন্মের
একলাযাপন।সাদাকালো
কয়েকটা ছবি ছায়ার মতো
আমার সঙ্গে হেঁটে চলে
পাশাপাশি।ঐ ছবিগুলোর
ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে
রেখেছি আমার রংচটা
জন্মদিন,কেক, মোমবাতি
এবং কিছু পুরোনো
হাততালি।
কাঁচামাংস ও বাসি ফুলের
গায়ে মাছি উড়ছে।সব
মৃত্যু তো জানেনা
গণতন্ত্রের
রাজনীতি।সিগারেট
পুড়তে পুড়তে রাত ছোটো
হয়ে আসে।শুধু
রক্ত-মাংস-হাড়-মজ্জার
পোড়া গন্ধ জেগে থাকে
ভোর-ঘুমের অঘোরে।
সানফ্লাওয়ারে আদর
বুনছে রোদের
মোটিফ।দুপুর দীঘল
হলে,কিছুকিছু কথাও
কাহিনি হয়।যেমন চানঘরে
কখনো গান হয়ে ওঠে,কোনো
কোনো বাতিল স্বরলিপি।
চানের পর চুল শুকোনোর
আছিলায় চিলচাদে
উঠে,গায়ে আগুন দিয়েছিল
যে মেয়েটি, তার সেলফোনে
একটাই মিসড কল...ছাদের
দরজায় ভেতর থেকে শিকল
তোলার আগে,মেয়েটি কি
পিছন ফিরে সিঁড়ির দিকে
একবার তাকিয়েছিল?
কাফেতে বিকেল গড়িয়ে
সন্ধে
নামলে,সাইবারজোনে
প্যাস্টেল শেডের
ছবিগুলো ঘন হয়ে
আসে।ছেলেটি মাউস ক্লিক
করতেই সব ছবি ব্ল্যাক
এন্ড হোয়াইট।অথচ এখানে
বৃষ্টির শব্দ
ব্যাকগ্রাউন্ডে
ব্যবহারের কথা ছিল...!
আসলে কেউ কথা রাখেনি।আর
তাই তার ছবি ও মহীনের
ধূসর ঘোড়াগুলো,বৃষ্টি
খুঁজতে খুঁজতে ধর্মতলা
কলেজস্ট্রিট ছুঁয়ে
খালাসিটোলা...লাস্ট
মেসেজটা সে আর পড়েনি
কোনোদিন।
'পুরানা সামান' ভেবে
ফেলে দেওয়া সেইসব ছবি
আমাকে আমার পোড়াজন্মের
ঠিকানা ফেরৎ দেয়।
কুয়াসামাখা ভোর লেগে
থাকে চায়ের ভাঁড়ে, গরম
আদরে।অন্ধকার
ট্রামলাইনে ফেলে আসা
আমার অজ্ঞাতবাসের
দিনলিপি আর রক্তের গভীর
থেকে উঠে আসা একটা পোড়া
গন্ধ...
এভাবেই আমি,রেবা ও
বিজন--আমাদের নিজস্ব,
মানে আলাদা আলাদা ভাবে
পুড়ে যাওয়ার গল্পগুলো
কিভাবে যেন আস্তে আস্তে
একসাথে... কোনো লজিক
নেই,তবু আশ্চর্যভাবে
একই গল্পের ফেরতাই
টেনে... প্রত্যেকটা
গল্পই কিন্তু
আলাদাভাবে পুড়ে
যাওয়ারই গল্প।অথচ বিজন,
রেবা এবং আমি--আমরা কেউ
কাউকে চিনতাম না।শুধু
পুড়ে যাবার
সাদৃশ্যটুকু ছাড়া
আমাদের তো আর কোনো মিলই
নেই,ছিলও না কখনো।তবু
আমরা আমাদের মতো করে
পুড়তে পুড়তে...
না সবাই নয়।আমি,রেবা,
বিজনের মতো কেউ কেউ একা
একা পুড়ে যাই,পুড়ে
যায়।আর সেইসব পোড়া
গল্পের ছাই দিনের পর
দিন বৃষ্টি নামার
অপেক্ষায়...