সইবাস
নিঃসঙ্গতা আমার সই।
কালো আর ক্লান্তিমান।
তাকে নিয়ে ডেরা গহিন
গুহায়-ডিহাং পাহাড়েতে,
সেইখানে আমাদের বাস।
পাশে মনু নদী বয় সই সই
বাসাত নিয়ে। বাতাস
কন্যার সখি হয়, তিনি
হাহাকার। রাতে আসেন
হাতের বালা নিয়ে। দুই
সখি প্রেমালাপ সারারাত
পাশে আমি জবুথবু একা
একা বই কম্পন আর
পিঁচুটি নিয়ে।
২
দেহের ভেতর শুয়ে
থাকি-গহিন পরবাসে এ
কঠিন দুঃখদিনে
আত্মীয়রা কই? তারা ছিল
বাতাস বাসনা
বিদ্যুৎরেখা, জলের
ওপারে সাড়ে সাত’শ ভাই।
আজ আর কেউ নাই, অজীণ
কুর্তা, স্তিমিত লণ্ঠন
আর পঞ্চভাই।
পাশার চালে হেলেদুলে
গহিন বনে দ্যাখ বনবাসে
যাই।
বাঁচা
পড়ে আছি দূরে, নিঃসঙ্গ
অনাথ বালক।
অথচ ছিলাম ডানার নিচে,
খুচুমুচু
উষ্ণ সারাবেলা, আজ ঝড় ও
ঝঞ্ঝার দিনে
পথে পড়ে থাকি, আহত চড়ই।
পালক খচিত ডানা দিয়ে
এসেছিলাম এই শহরে,
ক্রমে
তীব্র হল্লা ও তাপে
পুড়েছে পালক
খসে পড়েছে ডানা, আজ খঞ্জ
ও ভিখিরীদের ভীড়ে
ঘুরি ডানাহীন, একা
একা।
দুষ্টু বালকেরা কাছে
পেলে তামাশায় মাতে।
কেন তবে এই মিথ্যে ওড়া
শিখিয়ে ছিলে
শিখিয়ে ছিলে ডানার নিচে
বাঁচা
আজ ডানাহীন বাঁচি অনাথ
এই নগরে।
নিঃসঙ্গ যাত্রা
গৃহে প্রবেশের আগে ছাদে
কিছুক্ষণ বসেছিল।
নিঃসঙ্গ পানির ট্যাংক,
সিঁড়িঘর চুপি চুপি
দেখেছে
কেউ কাউকে কিছু বলেনি।
সিঁড়ির লোহার গেট সেও
দিয়েছে মেলে ডানা।
কালো বিড়ালের মতো এসেছে
যে কাঠের দরোজায়।
দরোজা, কাঠের দরোজা কী
তাকে বান্ধবী ভেবেছিল?
দরোজার সাথেও হয়ত হয়েছে
কিছু অস্পষ্ট আলাপ।
প্রবল জ্বরের মুখে ভেজা
কাপড়ের প্রলেপ দিতে
দিতে
ক্লান্ত স্ত্রী
ঘুমিয়েছিলেন পাশে
আমি গরম জ্বর হাতে তাকে
ছুঁয়ে জেগে আছি
তার অপেক্ষায়।
সে যখন ঘরে এলো, আর আমাকে
ছুঁলো
আশ্চর্য কেউ কিছু জানলো
না।
মৃত্যু, একাকী হীমশীতল
মধ্যরাতে।