জলের খুলি ডুবে গেলে
ছিন্ন চিতার মতন পরে
থাকে অসাড় প্রতিবিম্ব।
আমি মিছেমিছি খুঁটে খাই
শীতার্ত অন্ধকার আর
বিপরিতমুখী অপেক্ষায়
জেগে থাকে উষ্ণ পাথর-
দ্রুতশ্বাস ঘুম।
অতৃপ্ত আত্মহত্যার
ভাঁজে পা ফেলে হেঁটে
আসে সঞ্চিত কাফন- থোকা
থোকা কালো নিঃশ্বাস।
যেখানে বন্দী হয়ে আছে
বর্ণহীন বাদুড়ের
চিৎকার, তীব্র শুশুকের
সাথে লেপটে থাকে জালের
স্বাক্ষর- মাঝখানে তার
প্রেতাত্মা।
পরিত্যাক্ত মৃত্যুর
মতন নিপাট ছায়া ছায়া
স্বাদ, যেভাবে দুইটি
পৃথক রুমের মাঝখানে
বন্দী হয়ে থাকে একটি
মনটোনাস জানালা।
দেখো, এইখানে জেগে থেকে
মৃতবৎ শালিকের মতন কেমন
হয়ে উঠি বিষাদের মন্থর
হনন!
নাভির জীবনচক্র
আনত বৃহন্নলার মতন জেগে
থাকা- হে, অশ্রাব্য
অন্ধকার
মৃত আলোয়ানের রঙ্গে
মুছে নিও অন্ধ
দিনপঞ্জি।
জোনাকির শীৎকারে নিভে
গেলে নির্লিপ্ত আতর,
ফুরিয়ে গেলে সকল
কুসুমিত জিজ্ঞাসা-
নখের ছায়া ভুলে পাড়ি
দিও অক্ষুণ্ণ বিষাদ।
দূরত্বের নামে তবু তুলে
রেখো অপহৃত অসুখ-
বঞ্চিত চিতার মতন কিছু
অবাধ উনুন।
আমি পুরনো মাছের আদলে
এসে দেখে যাবো
গ্রহণের অবসরে ভুলে
যাওয়া তীব্র নাভির
ঝিনুক।
ফণীমনসার আয়োজন
উনুনে চাপিয়ে দিয়ে
বিষের মাখন, করতলে এঁকে
যাই জালিয়াতি ফুল-
প্রতীক্ষারত বিলাপের
মতন। ওষ্ঠাগত নীলে
বুনেছি যে নিষিদ্ধ
বিভ্রম সে-ই তো তোমাদের
রক্তদ্রোন; পথের পাশে
ফুটে থাকা অভিভূত গহীন।
এখানে নির্মোহ অন্ধকার
গিলে খায় আষাঢ়ে শকুন
যেভাবে আনাড়ি শরীর গিলে
খায় অনাহূত রাত্রির
ডিম, গভীর রাশিফল
যেভাবে গিলে খায় ব্যর্থ
কামিজের শীত; একটি
কোলাহলের বিপরীতে
যেভাবে মুছে যায়
আচ্ছন্ন চিতার ঝিলিক।
এইসব নিদারুন বিষের
আড়ম্বরে ডুবে যেয়ে
বুঝেছি, মানুষ একা-
পৃথিবীর প্রবাহিত ঢালে,
পরিত্যক্ত পাথরের মতন
একা।
অতপর উলম্ব জীবনের
গ্রন্থি ছেড়ে সুস্মিত
শ্মশানের ঘাটে একে একে
ভীর করে রুগ্ন আতশ; বাড়ে
বিষাদের চন্দ্রবোড়া,
ঘাই মারে মৃত্যুর
কল্লোল। একদিন বিহ্বল
নাবিকের মতন এক উজ্জ্বল
চিতা এসে তুলে নিয়ে যায়
জীবনের এইসব নিগূঢ়
গন্ধম !