চিবুক নামিয়ে নিয়ো
সন্ধ্যার আগে
চিবুক নামিয়ে নিয়ো
সন্ধ্যার আগে
নেংটি পরিয়ে
আমাকে ফেলে এসো লবণের
দ্বীপে
আলখেল্লার আগে, তীলকের
আগে
সাদা হাতে উপহার এনেছিল
কেউ
বহুকাল তাকে আর স্মরণে
না আনি
তাকে আর ভালোই না বাসি
যুগ যুগ
হাড়ে-মজ্জায় লেপা
গুপ্ত-ঘাতক
আমাকে রেখো তবু
আহারে-বিহারে
রাক্ষসমণ্ডলে তবু জেনো
আমাকেই পাবে
সমস্ত ক্ষতমুখ
বিষাদ-কাতর
সমস্ত শুশ্রুষা নেমে
গেছে বদ্ধভূমিতে
ছেড়ে দাও, পৃথিবী কলহ
থেকে বাঁচে
ছেড়ে দাও, পৃথিবী আমার
থেকে বাঁচে
শিরায় ধাবিত যত
কাকুতি-মিনতি
আমাকে মুড়ে দিও আরকে,
আদরে
আমাকে রেখে এসো লবণের
দ্বীপে
নেংটি পরিয়ে
চিবুক নামিয়ে নিয়ো
সন্ধ্যার আগে!
লাবণ্য
এই খণ্ড শরীর,
চেরা উরু নিয়ে
কত দূর যেতে পারো তুমি
সকলের শাণিত কুঠার
মৃত সব প্রখর রসনা
পেরিয়ে যেতে চাওয়া চাই
তা-ই তুমি গেলে
তোমাকে সেধে সুবাতাস
চলে গেছে শীতের দেশে
ধু ধু মনে পড়া গান
তার খোঁজে গেছে গতকাল
কেউ তো ফেরে নি
ফিরিয়ে আনতে আমি
তড়িঘড়ি গিয়েছি সেখানে
তোমার পিছেই শুধু
পাহারায় থাকছে না কেউ
এক হাতে স্মৃতি
এক হাতে অপেক্ষা নিয়ে
প্রসারিত দুই বাহু,
দেখো
মাঝপথে অচেনা ড্রাগন
মাঝপথে অজানা সমাধি
জল ছেড়ে এসেছি এখানে
প্রিয়তম মাটির শাসনে
মাটি তার কদর জেনেছে
সমাধির সমীহ জেনেছে
দূরত্ব বলে যায় কথা
লাবণ্য, তাকে গ্রহণ
করেছে!
যখন স্বরূপে আসতে
আসতে
অফ শোল্ডার গাউন ভেসে
বেড়ায় বাতাসে
ঠেসে পুর দেয়া মাংশল
কাঁধ
সুন্দরের ভাঁজ
পরিপাটি
ঘিয়া-সাদার নির্লিপ্ত
ঘের
বাহুল্য ছেঁটেমেটে
হতে পারে আমি আমাকেই
দেখি
হতে পারে ছোরা হাতে
তাকেই দেখি
মরা ইঁদুর ভেজে দু নলা
ভাত মুখে
ছুট দিল সাঁতাল-ছেলে
ঘর ছেড়ে ‘ত্রাণ ত্রাণ’
বলে
পিছে উড়ে চলি
হুমড়ি খেয়ে পড়ি তো পড়ি,
একেবারে বমনে রমণে
মাংশের পুর ঘুরে ঘুরে
যায়
অফ শোল্ডার গাউন,
চোরা-দেশে
কে তুমি বেড়াচ্ছ ঘুরে,
বলো
বাকির খাতায় লেখাচ্ছ
নাম
নাকি অভুক্ত স্বপ্নে
আমাকেই দেখলাম
আমার শূন্য প্রায়
পকেটে
চাল-তেল জমে চট চট
শরীর ঝকঝকে, মন ভেজা
চপচপ
‘ত্রাণ ত্রাণ’ বলে দৌড়ে
পালাই
‘মুখোশ মুখোশ‘ বলে দৌড়ে
পালাই
আমার দিকে ফিরে চোখ
টেপে যে
রোদ্দুর তার সমান উর্বর
আহা জীবন, মৃত্যুর মত সে
কত সুন্দর
যখন স্বরূপে আসতে আসতে
রণক্লান্ত সে!