কবি পরিচিতি:
[মুনাওয়ার রানা ভারতের
উর্দুভাষী আধুনিক কবি।
উত্তর প্রদেশের
রায়বেরিলিতে জন্ম তার
১৯৫২ সালে। কলকাতায়
বসবাস করেন।
গজল রচয়িতা মুনাওয়ারের
ভাষায় হিন্দি ও আওয়াধি
শব্দের প্রয়োগ বেশি,
আরবি ও ফারসি শব্দ
এড়িয়ে চলেন তিনি। এই
কারণে তার রচনা ভারতে
বেশ জনপ্রিয়। তার
অধিকাংশ শেরের
কেন্দ্রীয় বিষয় মা। এটি
তার কবিতার একটি
উল্লেখযোগ্য
বৈশিষ্ট্য।
২০১৪ সালে তিনি সাহিত্য
অকাদেমি পুরস্কার লাভ
করেন। কিন্তু পরের বছর
বিহার আইন পরিষদ
নির্বাচন নিয়ে সিভিল
সোসাইটি একটিভিস্টদের
আন্দোলনের সময়
পুরস্কারটি ফিরিয়ে
দেন। তিনি আর কখনও
সরকারি পুরস্কার গ্রহণ
করবেন না বলেও ঘোষণা
দেন।
মা বিষয়ক তার বিখ্যাত
দ্বিপদীগুচ্ছ
রূপান্তর করেছেন সৈয়দ
তারিক।]
১
মুখে তার কোনো বাজে কথা
নাই,
শুধু মা-ই রাগ করে না
আমার উপর কোনোদিন।
২
এভাবে আমার সব অপরাধ
ধুয়ে-মুছে দেয় :
যখন আমার উপরে খুব রাগ
হয়, সে কেঁদে ফেলে।
৩
আমার মা বেঁচে আছে, আমার
খারাপ কিছু ঘটতেই পারে
না,
যখন আমি বাড়ির বাইরে
যাই, তার দোয়া আমার সাথে
যায়।
৪
কাঁদতে কাঁদতে আমি
চোখের পানি মুছেছিলাম,
মা বহুকাল ধরে তার কাপড়
আর ধোয় নাই।
৫
যখনই দুঃখের ঝড় বয়, ও
রানা,
মায়ের ভালোবাসা আমাকে
বাহুতে জড়িয়ে নেয়।
৬
কেউ ঘর পেল, কেউ দোকান
পেল,
আমি বাড়ির ছোট ছেলে,
ভাগে পেলাম মাকে।
৭
ওহে অন্ধকার, দেখ তোমার
মুখ কালো হয়ে গেল,
মা চোখ খুলল আর সারা
বাড়ি আলোকিত হয়ে উঠল।
৮
ইচ্ছা করে, আবার
ফেরেশতা হয়ে যাই,
শিশুকালের মতো মাকে
আবার জড়িয়ে ধরি।
৯
আমার ভালো কাজের হিসাব
করার দরকার নাই,
মায়ের সম্পর্কে আমি যা
লিখেছি সেটাই যথেষ্ট।
১০
দুর্ঘটনা থোকে নিজেকে
বাঁচাবার জন্য
ও মা, তোমার দোয়া আমি
সাথে নিয়ে যাই।
১১
সারাদিন কঠোর পরিশ্রম
করে শরীর ব্যথা করছিল,
তখন আমাকে দেখল মা আর সব
ক্লান্তি ভুলে গেল।
১২
মাইলের পর মাইল ভ্রমণ
করে মায়ের দোয়া,
যখন তার ছেলে অন্য দেশে
যায়।
১৩
কাল রাতে আমি প্রেম
বিষয়ক সব বই ছিঁড়ে
ফেলেছি,
কেবল একটি কাগজের উপর
'মা' শব্দটা এখনও
রয়েছে।
১৪
মায়ের সামনে অমন
খোলামেলা কখনও কেঁদো
না,
ফাউন্ডেশন থাকলে অত
জলীয়তা ভালো নয়।
১৫
এই ঋণ কখনও আমি শোধ করতে
পারি না,
যতক্ষণ আমি বাড়ি না
ফিরি, আমার মা দোয়া
করতেই থাকে।
১৬
তার চোখে আমি আজান
দেখেছি,
বেহেশত আমি দেখিনি,
কিন্তু আমার মাকে
দেখেছি।
#