ট্রাইবাল গ্রামের ডেনড্রন

সৌগত বালী



ছেলেকে বললাম একটু চা করবি বাবা দুপুর লুকিয়ে যাচ্ছে যে ।।। ছেলে বলল কি চা বাবা পাতা না গুটি ।।। আমি আর কি বলি গুটি চা বলি । ছেলে রান্নার ঘরে গিয়ে গুটি চাইল আর এখন বাইরে গাছে গাছে শুঁয়ো পোকারা বানাতে লেগে গেলো ।।। আমি ভাবলাম কিছু বেঠিক বলছি কি ।।। আবার মজার ব্যাপার বে ইংরাজিতে লিখলে উপসাগরের ঢেউ নাকে লাগছে ।।। কী আমোদ গন্ধ আমরা কি কতকাল বা গতকাল কোথাও কোনোদিন যেতে পারব ।।। কোথায় যেতে চাইছি ।।। প্রশ্ন করলাম ।।। গাছেরা অগুনিত গুটিতে ভরে গেছে ।।। ছেলে বলল এইসব গুটি যদি রেশমের হয় তাহলে আমাদের বাড়ীর পেছনটা দিয়ে একটা সিল্ক রুট তৈরী হতে পারে ।।।
এতো কথার আগে দেখে নেওয়া যাক টেক্সটের মাথার ওপর যে ছবিটা বসলো সেটা সোমনাথ বসুঠাকুর এর ।।। আরে লোকটা আসলে গদ্যকার ওঁর একটা বই 2002 সালে কিনে পড়তে গিয়ে দেখলুম কিছুই লিখতে শিখিনি ।।। বলতে বলতে সে হেসে উঠল ।।। সে সোমনাথ একটা অপর্যন্ত বিকেলে গুটি ভেঙে যাঁরা উড়ে যাচ্ছিল তাঁরা আমাদের কাঠামোবাদ ।।। ছেলে বলল বাবা তুমি কত আর মাটি লাগাবে আমরা বরং পাহাড়ে একটা ট্রাইবাল গ্রামে উড়ে যাই সেখানে অর্কিডের ডানায় একটা প্রজাপতি খুঁজে আসি ।।। আমি তো মথ মামথ ভালবাসি ।। অই ঝিঁ ডাকছে ওতো গুটি বাঁধার ডাক ।।। আর চা বাগানের পাশ দিয়ে রডোডেনড্রঠ¨ মেঘে পাইপ লাইন লাগিয়েছে ।।। সাঁ সাঁ করে জল ।।। একটা গোটা পাহাড়ে প্লামবিং চালু হয়ে যাচ্ছে ও কিউবিক কুয়াশা ।।।। আহ ।।। ছেলে বলল ধুস আমরা শেষ পঞ্চাশ দিনে শুধু ছাদ পর্যন্ত যেতে পারি আমাদের ছাদ চিলছাদ ভোঁ মেরে উপসাগরের দিকে চলে যাচ্ছে একটু একটু করে ।।। উপসাগরের কোনো ভালো মন্দ হয়না ।।। এদিনে বিকেল লুকিয়ে পড়লে খানিকটা সন্ধ্যা আসে সেও আপাত ক্ষণিক ।।। আমাদের ছাদের আকাশে ঝড়ের অন্তরীপ ।।। ছেলেকে বললাম জাহাজের পালটা নামিয়ে রাখ ।।। ছেলে বলল ঝড় শেষ হলে অনেকে RIP জানিয়ে যাবে অথবা অনেকেই আমরা RIP জানাতে পারব না । আমাদের অনেক দুঃখ গুলো এসো মোজার মধ্যে ভাপিয়ে রাখি ।।। আমি লক্ষ্য করছিলাম আকাশ ইতিমধ্যে অনেক কালো হয় । আমাদের চিল ছাদ থেকে দূরবীন নিয়ে নেমে আসছিল সোমনাথ দা ও তার অনস্তিত্ব বিষয়ক সাদা বেসিনে জল নোনতা ।। নোনতা তো কান্নাও হয় ।।। কান্না একটা সমুদ্র বটে আমাদের আর কোনো মহাসাগরের দিকে যাবো না ।।। আমাদের উপসাগরও খুব নোনতা ।।। ছেলে বলল দেখ বাবা ওই দূরে পঞ্চাশ দিনের নির্জন পেতে রাখা রেললাইন অও এক উপসাগর কি নোনতা ।।। আমরা কি এবার ঐ লাইনের ধারে তক্কে তক্কে থাকব একবার যদি কোনো একদিন আমরা একটা ট্রেনের নিচে নিজেদের পেতে দিতে পারি ! ! সেও এক নোনতা ।।খুব ।।।
সোমনাথ দা খুব শেষমেশ বলে ফেললেন একবার ।।। দেখ ভাই তোর প্রশ্নটা জায়েস কেননা মনে করলে দেখা যাবে আমেরিকার ট্রাম্প বা ইংল্যান্ডৠ‡à¦° বরিস বা আমাদের মাননীয়া ও শ্রীমান প্রধানমন্ত ্রী কিংবা ইমরান খান স্বয়ং যাঁর ব্যাক্তিতৠব নিয়ে চর্চা হতো এক্কালে এখন এই যে হাস্যকর খোরাক অথচ কী ভীষণ বিপজ্জনক যেন সব ।।। আমরা এখন এই অসামান্য ফসলের লোভে চাষাবাসা নিয়ে দেখছি ।।। আসলে ক্রমান্বয়ৠমানুষ অবাস্তব ভালবেসে সরে গেছে বহুকাল ।।। ফলত আমাদের শিল্প বা ভার্চুয়াল বাস্তব ।। ফলত আমরা এখন রিয়ালিটিকৠফেস করতে পারছি না ।।। আমার ছেলে মাস্তুলে ঝড় থেমে গেছে দেখে চীনের দিকে ঘুরে যাচ্ছে জাহাজটা ।।।বললে বাবা তাহলে কি এই ডিজাস্টার একটা ডিটেনসন ক্যাম্প ।।। আমরা একদিন স্বপ্নই দেখেছি ।।।
এখন এই যে অনন্ত ডিটেনসন এ চলে গেছি আমরা । গোটা পৃথিবীটা ।।। এখন ঘোর রাতে উঠে দেখেছি বৌ আলাদা থাকতে ভালোবাসে ।।। আমি অনেক কাঁদলাম ।।।বৌ বলল বেটা ছেলেদের এসব মানায় না ।।। তাছাড়া পন্য হিসেবে পুরুষেরা এতোদিন বয়ে ছিলো এবার তো নিকটে বন্দর আনলোড করে ফিরে যাও সীমান্ত বরাবর ।।। জাহাজটা এখন প্রশান্ত মহাসাগরের টানে ঝোঁক বাড়াচ্ছে ।।। ছেলে বলল আমরা বরং পাহাড়ের গায়ে কোনো একদিন ট্রাইবাল গ্রাম চলে যাই ।।। ওখানে রঙ্গিত নদী ।।। আমাদের সারাদিন পাড়ে ফেঁদে রাখুক ।।। আমাদের সোনালি রোদের লোভে যে লোকটা আত্মহত্যা করল তারতো অসীম লালসা ছিল বাবা । আমরা বরং একটা নদী তলপেতে করে আজীবন ধরে রাখি ।।। ইদানিং চীনে বিচ্ছেদের সংখ্যা বাড়ছে ।।। লাশেদের ব্যবচ্ছেদ দেখে দেখে আমরা সিমিলিয়েসঠের দিকে চলে যাচ্ছি ।।। এখন প্রায় ভোরের দিক আজও শুনশান রাস্তা ।।। কি বার কত তারিখ ।।। ইচ্ছে করছে না আর গাঢ় হোক আরেকটা রাত ।।। এসো আমরা আমাদের সন্তানদের চামড়া সরিয়ে কেটে যে যার মতো ভাগ করে নিই ।।। খানিক পরে মশলাদার ঝাঁজ বরিস হার্ড ইমিউনিটির জোরে বেঁচে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে ।।। প্রশান্ত দা বলছে ইন্দিরা গান্ধীর সময়ে চাষীদের নিয়মিত টাকা দেওয়া শুরু হয়েছিলো ।।। রান্নার গন্ধে অনেক কান্না থাকে এক্কেরারে রেললাইনের মতো ।।। নোনতা ।।।খুব ।।
সোমনাথ দা বলল অনেকদিন কোথাও যাওয়া হয় নি ।।। দুটো বারান্দা বা চিলছাদে যাবার টিকিট বুক করে দে ঘুরে আসি ।।। আর তখন তো প্রজাপতি ভেঙে সিল্করুট ।।। সিল্করুট ভেঙে গুটি ।।। ছেলে বলল কি চা গুটি না পাতা ।।। শুনশান রাস্তা রোদ পড়ছে পাতাদের...

চিত্রঋণঃ সোমনাথ বসু ঠাকুর