বহুদিন হয়েছে এখন আর
কষ্ট হয় না। প্রথম
প্রথম মনে পড়তো। কষ্ট
হতো। সারাদিন ভাগ করে
নিতে চাইতাম মনে পড়ার
ক্লান্তি। তোমাকে কাছে
রাখার ক্লান্তি ক্রমশ
বাড়তে বাড়তে একদিন
ধোঁয়া ওঠা শীতের
তীব্রতা দিয়ে বেরিয়ে
এসেছি ঘর থেকে। বারের
হালকা সোনালি জানালার
শুভ সংখ্যা দুই। তাই
টেনশন কমাতে খেয়ে
নিয়েছি জীবন। এত খিদে
আমার , নিজেকে দেখেই
অবাক হচ্ছিলাম। তারপর
রাত বাড়তে হেঁটে চলে
গেছি ছবির মতো। বহুদিন
হয়েছে এখন আর কষ্ট হয়
না। তুমি এখন বিশেষ
কিছু মুহূর্তের মানে
হয়েছো। একটা বিদ্যুৎ
চমকে আকাশ ফুঁড়ে বেরিয়ে
আসতেই দেখেছিলাম চোখের
পলক পড়েনি তোমার। আমি
হাঁ হয়ে দেখেছিলাম
কিভাবে গোটা একটা
মিথ্যা তুমি চুপচাপ
বেড়ে দিলে ছাদের
মাটিতে। জানো এমন
ঠান্ডা গরম মেশানো রাতে
আমি হড়কে গিয়ে মুখ
থুবড়ে পড়তেই অন্ধকার
নেমে আসে চোখে। আমি
দেখি তুমি বলছো কাউকে,
চাঁদের আলোর মধ্যে একটা
সাইকেল তোমার গাড়ির
সঙ্গে চলছে তো চলছেই।
কয়েকটা কুকুর ছেঁকে
ধরেছে তোমাকে।
শ্মশানের লোমশ সেই
দাঁতগুলো নড়লেই খেয়ে
নেবে মধুপর্ক। বাবা
কানা উঁচু থালাতে ভাতের
মাঝখানে ভরে নিচ্ছেন
গরম ঘিলু। তুমি ধীরে
ধীরে উঠে এসে আমাকে
একটা দরজা, জানালা,
চারটে দেওয়াল দিলে।
ছাউনিটা দিলে না। চোখে
মুখে জল পড়তেই বুঝতে
পারি ঈশ্বর আমাকে আর
কোনোদিন ফিরে আসতে
বলবেন না নদীতে। কাছে
ডেকে নেওয়ার সময় নষ্ট
তাঁর কাছে ভুল ছিল। আমি
ছাউনিহীন ঘরের মধ্যে
শুধু লালচে করে ভেজে
রাখা আকাশ দেখি। আমার
উঠে বসতে ব্যথা করে।
একা ফিরতে ভয় করে। তবু
বহুদিন হলেও আমার আর
কষ্ট হয় না। শরীরটা
খালি টেনে টেনে এনে
বসাই। কারা যেন ফিসফিস
করে, কানে আসে। একজন
মানুষ হিসেবে আমার আর
ব্যথা করেনা, হয়তো
করেনা কিন্ত সময়টা
যুদ্ধ করে ...
বার বার
ছবি ঋণঃ অর্ণব বসু