প্রত্যেকটা ভাসানের এক
একটা নিজস্ব ঘাট থাকে,
বিদায়ের সময় অস্তমিত
সূর্যের করুণ লাল রঙে
ভিজে যায় তার সিঁড়ি।
প্রতিমা ভেসে যায়, আমি
জলের দিকে চেয়ে থাকি।
এই যে ছেড়ে যাওয়া,
প্রত্যেকবার কেড়ে
নেওয়া জলটুকু নিমেষে
জলের ভিতর ডুবে যায়,
যেভাবে মায়ের মুখের ওপর
শেষবারের মত আগুন ছুঁয়ে
দেয় সন্তান। ঘি মাখা
শরীরে এঁটে বসে পিঁপড়ে,
প্রতিমা ঘোরানো হয়,
সাতবার! বিদায়ের যৌথ
কান্নায় নদীর জল একটু
একটু করে এগিয়ে আসে
মিছিলের মত। জোয়ারের
শব্দে ভেঙে যায়
সন্ন্যাসীর মৌনতা, বটের
ঝুড়ির মত গোটা শরীর
থেকে নেমে আসছে
অনির্বেদ পাপ। বিদায়,
স্পর্শ করো। মায়ার কৌটো
থেকে কে যেন সরিয়ে
নিচ্ছে সমস্ত সিঁদুর।
মুছে যাচ্ছে সিঁথির রং,
সংসারের হলুদ স্বপ্ন।
জল আর পরবর্তী জলের মত
সহজ নেই, শরীরের ভাঙনে
ভেসে ওঠে কাঠামো। টুকরো
টুকরো খসে পড়ে হাত,পা,
সাদা মুখ।
উদ্ধারকার্যে নামে না
কেউ, যেন ভেঙে যাওয়া
মাটির প্রদীপ, জোড়া
লাগবে না আর কোনোদিন৷
ধোঁয়া ওঠে দূরে, ছাই
ঘেঁটে কুড়িয়ে আনা নাভির
কুন্ডলীর মত। পাশের
গুমটিতে মদের ঠেক, কেউ
কেউ ঢুকে পড়ে
শ্মশানফেরত। ভেতরে
নদীর ঢেউ, অশালীন
হাওয়ায় চোখে ঠেকে যায়
প্রতিমার অবসাদ।
তিরতির কেঁপে ওঠে বুক,
জলের দিকে তাকাই, কানে
কানে কে যেনো বলে ওঠে,
আসছে বছর....
ছবি - অর্ণব বসু