আজকালকার রাতগুলো কেমন
শুনশান। শুধু রাত কেন,
দিনের বেলায়ও মানুষের
চলাফেরা অনেক কমে গেছে
এই এলাকায়। চারপাশটা
একদম অপরিচিত লাগে।
নবাবালি আজকাল খুব
ধন্দে পড়ে যায়, পথ ভুলে
অন্য কোথাও চলে এসেছে
নাকি সে! কিন্তু না তো,
এই তো সেই একই পাড়া,
ঘরবাড়ি, একই পথঘাট,
নারকেল, তেঁতুল গাছ,
কারেন্টের পিলারগুলো
মায় ঝুমকি, বস, সাদ্দাম
পর্যন্ত আছে আশেপাশে।
নবাবালি তাই নিশ্চিন্ত
হয়ে গা ঝাড়া দেয়, না সে
আসলে সেই একই পাড়ায় আছে
কেবল কী এক মন্ত্রবলে এ
পাড়ার মানুষগুলোর জীবন
হঠাৎ করে বদলে গেছে।
রাস্তার বাতিগুলো কেমন
টিমটিম করে জ্বলে, যেন
একেবারেই না জ্বললে
ব্যাপারটা বেমানান
ঠেকে বলে কোনোরকমে ঠেকা
সেরেছে কর্তৃপক্ষ। তবে
আজকের রাতের আকাশ তারায়
ভরা, তার আলোয় চারপাশটা
ঝকঝকে। সেই আলোর নিচে
একঘেয়ে শুয়ে থাকতে
থাকতে নবাবালির বিরক্ত
লাগে।
বেশ অনেকক্ষণ আগেই হুট
করে ঘুমটা চটে গেছে তার,
কিছুদিন ধরে এমন হচ্ছে।
আধপেটা খেয়ে না খেয়ে
ঘুমালে আর কতক্ষণ
শান্তিতে ঘুমানো যায়!
এর আগে কোনোদিন কি
খাবার নিয়ে চিন্তা করতে
হয়েছে নবাবালির? হয়নি।
শুধু ওরই নয়, খাবার নিয়ে
চিন্তা করতে হয়নি এ
তল্লাটের কাউকেই। কী
সুদিন ছিল ওদের!
সেই তো দুবছর বয়সে
নিজের আগের পাড়াটা থেকে
একা একা হাঁটতে হাঁটতে
এ পাড়ায় চলে এসেছিল
নবাবালি, আর কোথাও
যাবার নাম করেনি এই
ক’বছরে। তখনও অবশ্য ওর
নাম নবাবালি হয়ে ওঠেনি।
স্টেশনের একদম কাছে
পাড়াটা, দোকান পাট
হোটেল কোনোকিছুর কোনো
কমতি নেই, খাওয়া দাওয়ার
চিন্তা নেই- এমন একটা
জায়গাই তো সে চেয়েছিল
নিজের থাকার জন্য। তবে
আজকের অবস্থা যাই হোক, এ
পাড়ায় নিজের অস্তিত্ব
তৈরি করতে কিন্তু ওর
অনেক বেগ পেতে হয়েছে।
বস, সাদ্দাম, রিন্টোরা
তো প্রথমে ঢুকতেই দেবে
না এলাকায়। সে কী
কামড়াকামড়ি ওদের! এখনও
ওর ঘাড়ের সুন্দর সাদাটা
ছোপের নিচে সেইসব আঁচড়
আর কামড়ের দাগ ঘুমিয়ে
আছে মনে হয়। সব সহ্য করে
পড়ে থাকতে থাকতে একদিন
এ পাড়ার সবচেয়ে
বয়জ্যেষ্ঠ চাচার
প্রাণে দয়া হলো- ওর নাকি
সহ্য করার অসীম ক্ষমতা,
সেজন্য।
চাচার নাম ওরা কেউই
জানত না, এ তল্লাটের
সবাই তাকে এক নামে চাচা
বলেই ডাকত। তার কথা
বিনা প্রশ্নে মেনে চলত
সবাই, কারণ যতদিন শরীরে
শক্তি ছিল, চাচা
জানপ্রাণ লড়ত ওদের
জন্য। চাচাই ওর নাম
দিয়েছিল নবাবালি, ও
নাকি সাধারণ নয়, ও নাকি
নবাবের মতো! লড়তে জানে,
মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে
জানে!
আজ চাচা বেঁচে থাকলে কী
বলত ওকে? বোধহয় বলত- ওরে
নবাব, তুইই তো না খেয়ে
পড়ে থাকলি রে। তোর
প্রজা সাকরেগদের কী হবে
বল!
নবাবালি একবার কুঁউইই
করে লেজ নাড়ায়। ভাগ্যিস
চাচা মরে গেছে দু’বছর
আগেই। নাহলে এই
দুর্দিনে না খেতে পেয়ে
কোথায় না কোথায় মরে পড়ে
থাকত। তারপর সিটি
কর্পোরেশনের গাড়ি কবে
লাশ নিতে আসত সেই খবর
থাকত না। আজকাল সব রেশন
আর
কর্পোরেশনওয়ালারাই
শুধু মানুষ নিয়ে
ব্যস্ত, ওদের দিকে নজর
দেবার মতো কে আছে?
না, খিদেটা লেগেছে
জব্বর। নবাবালি আর সহ্য
করতে পারবে না, একটা
কিছুর ব্যবস্থা করতেই
হবে এবার। পিলারের নিচ
থেকে ক্লান্ত শরীরটা
টেনে সে উঠে দাঁড়ায়।
গাটা ঝাড়া দেয় একবার,
রাস্তার ধুলো ময়লা
যতটুকু পারে গা থেকে
উধাও হোক। এই কদিন আগেও
কী দারুণ স্বাস্থ্য ছিল
ওর, আর কী রূপ! কালো
কুচকুচে শরীরে শুধু
গলার অংশটায় আগাগোড়াই
সাদা সাদা ছোপ। এই রূপ
দেখেই না ঝুমকি এমন
উথালপাথাল প্রেমে
পড়েছিল। আহা ঝুমকি!
আশপাশের পাড়ার সব ছোকরা
কুকুরেরা ভাদ্দর,
আশ্বিন মাস এলে ঝুমকির
পেছনে লাইন দিত। তা
ওদের মধ্যে মানুষের মতো
বিয়ে আর সংসারের বালাই
নেই বলেই কি না ঝুমকি
একটু আধটু গেছেও প্রেম
করতে দুয়েকজনের সঙ্গে,
প্রতিবারই যায়। তা সে
কি আর নবাবালি নিজেও
যায় না নাকি? এবারের
ভাদ্দরে কি টানা অনেক
দিন সে থেকে আসেনি ওই
মেথরপট্টির নেড়িটার
সঙ্গে?
পুরো রাস্তাটা একদম
নিখাদ পরিষ্কার। আগে
এমন রাতে কত বিস্কুটের
টুকরো কি মুরগির হাড্ডি
কিংবা আর কিছু না হোক
অন্তত এক দলা ভাত মিলে
যেত। তখন অবশ্য
ঘেন্নাপিত্তি করে ওসব
খাবারে মুখ দিত না
নবাবালি। ভাবত, পাড়ার
বুড়ো আর বাচ্চারাই খাক।
সে তো স্টেশন, ভাতের
হোটেল আর চায়ের দোকান,
স্টেশন পেরিয়ে ঐ বিশাল
বড় ডাস্টবিনটা থেকে পেট
ভরেই খেয়ে আসত। ঝুমকি
যখন ইয়া বড় পেট নিয়ে
দূরে কোথাও যেতে পারত
না, কতদিন সে মুখে করে
খাবার নিয়ে এসে দিয়েছে
ওকে। তখন কিন্তু ওর ওই
ভাদ্দুরে নাগরদের দেখা
মিলত না কোথাও। নবাবালি
মাঝেমধ্যে মুখ খারাপ
করে ঘেউ ঘেউ করত- ঝুমকি,
তোর ঐসব নাগর একদম
মানুষের বাচ্চাদের
মতোন রে! শরীরের সুখ
মিটে গেলেই খাল্লাস!
ঝুমকি কিছুদিন থেকে এ
পাড়ার মোড়ে ঝাপড়া
আমগাছটার নিচে ঘুমায়।
খাবার আর ময়লার
চিহ্নবিহীন রাস্তা ধরে
নবাবালি সেদিকে হাঁটে।
আজকাল মানুষের
বাচ্চাগুলো সত্যি কেমন
জানি হয়ে গেছে। ভয়ে তো
বাইরে বেরোনো ছেড়েই
দিয়েছে বলতে গেলে, আগের
মতো আর উঁচু উঁচু
বাড়িগুলো থেকে ঝুপঝাপ
ময়লার পলিথিনও ফেলছে
না। মানুষের
আক্কেলজ্ঞান নিয়ে ওর
কোনোদিনই তেমন আস্থা
ছিল না। আর এখন তো সব
চোখের সামনেই দেখছে।
বারো মাস যদি ওই
কিম্ভূত জাতটা এখনকার
মতো এমন পরিষ্কার
পরিচ্ছন্ন থাকত, তাহলে
মনে হয় এখন ওদের
বিল্ডিংয়ের ভেতর
সেঁধিয়ে থাকতে হতো না।
সাত রাস্তার মোড়ের
বিশাল বড় যে
সাইনবোর্ডটায় সারাদিন
নানা রকম বিজ্ঞাপন চলতে
থাকে, ওখানে দাঁড়িয়ে এই
সেদিন দেখে এসেছে
নবাবালি, একটা
সুন্দরমতো মেয়ে খালি
বলেই যাচ্ছিল- সাবান
দিয়ে হাত ধোন হাত ধোন
হাত ধোন…
মাঝরাত পেরোনো এই
অদ্ভুত সময়ে পেট ভরা
খিদে নিয়েও নবাবালির
হাসি পায়, ভাগ্যিস ওদের
হাত নেই। পেটের খাবারই
জুটছে না, এই সময়ে সাবান
কোথায় পেত ওরা!
আবছা আলো অন্ধকার
জায়গাটায় ঝুমকি পেছনের
দুই ঠ্যাং উঁচু করে
ঘুমাচ্ছে, সামনের দুই
পা গুটিয়ে বুকের ওপর
রাখা। আচ্ছা, ও কি আজ পেট
ভরে খেতে পেয়েছিল?
নাহলে এমন আরাম করে
ঘুমাবে কী করে? জীবনে এই
প্রথম ঝুমকিকে খুব
হিংসে হয় নবাবালির।
মেয়ে মানুষের কী
সুবিধা, নিশ্চয়ই কোনো
নতুন নাগর ওকে খাওয়াতে
নিয়ে গিয়েছিল আজ! পর
মুহূর্তেই ভুল ভাঙ্গে
ওর। না, নাগরটাগর নয়।
কেবল শীত পেরিয়ে গরম
পড়তে শুরু করেছে, এখন
কেউ ঝুমকির জন্য ঐসব
আলগা প্রেম দেখাবে না।
মানুষের মতো তো আর ওরা
বারো মাসই শরীর নিয়ে
পড়ে থাকে না। ঝুমকি
হয়তো একাই গিয়েছিল
কোথাও। তবু একটু অভিমান
ওর হয় বৈকি, যাবার সময়
ঝুমকি ওকে একটা ডাক
দিতে পারত অন্তত।
ঝুমকি বোধহয় ঘুমায়নি।
নবাবালির দীর্ঘ শরীর ওর
মুখের ওপর থেকে জোৎস্না
আড়াল করে দিতেই ও ঠ্যাং
নামিয়ে নেয় চোখ মেলে
তাকায়। তারপর উঠে বসে।
দুবার ঘেউ ঘেউ করে
জানতে চায় নবাবালির কী
খবর। এই শেষ রাত্তিরে
হঠাৎ এখানে আসার কথা তো
ওর নয়। তারপর ঝুমকির
হয়তো ওর শুকিয়ে যাওয়া
শরীর দেখে মায়া লাগে।
এই কয় বছরে নবাবালির
শরীরের এই হাল কেই বা
দেখেছে ওরা?
না, কুঁইকুঁই করে ঝুমকি
জানায় আজ তারও খাওয়া
জোটেনি। সন্ধ্যার পরে
পাশের মহল্লার চিপায় যে
ভাতের হোটেলটা এখনো
চালু আছে সেখানে
গিয়েছিল বটে কিন্তু
দীর্ঘ লাইন দেখে চলে
এসেছে সে। রিন্টোর
সঙ্গে পথে দেখা হয়েছিল
ওর, রিন্টো কোন এক
দাওয়াত বাড়ির দরজা থেকে
কিছু এঁটোকাঁটা খেয়ে
ফিরছে তখন। এই আকালেও
মানুষ কী করে দাওয়াতের
আয়োজন করে নবাবালির
মাথায় ঢোকে না। অবশ্য
ঝুমকি বলে যে রিন্টো
খুব বকবক করছিল দাওয়াত
বাড়িতেও নাকি বেশি
খাবারদাবার ফেলেনি,
এঁটোকাঁটা যা ফেলেছে,
কাড়াকাড়ির চোটে তার
কতটুকুই বা পেয়েছে? এ
বেলাও নাকি পেট ভরেনি
ওর। রিন্টো বলেছে, ও
নাকি এ পাড়া ছেড়ে চলে
যাবে।
নবাবালির ক্লান্ত চোখে
ক্ষুধার চোটে জল আসতে
চায়। এত বছর পরে রিন্টো
তার আজন্ম পরিচিত পাড়া
ছেড়ে চলে যাবে খাবারের
খোঁজে, এটা ভেবেও খারাপ
লাগে। তারপর হঠাৎই এইসব
ক্ষুধাতৃষ্ণার বোধ চলে
গিয়ে তার ঝুমকির সঙ্গে
হাঁটতে ইচ্ছে করে। চাউল
কল মিলের গলির এক বাড়ি
পরে যে উঁচু বাড়িটা, সেই
বাড়ি থেকে দুজন মানুষ
রোজ সন্ধ্যায় হাঁটতে
বেরোত হাত ধরাধরি করে,
তেমন। এইসব বিশ্রী দিন
আসার আগে কী সুন্দর
গল্প করতে করতে
পাশাপাশি হাঁটত ওরা
রোজ। তারপর নবাবালির
আবারও মনে পড়ে ওদের হাত
নেই- ওর, ঝুমকির।
শীর্ণ শরীরের ক্লান্তি
ঝেড়ে ফেলে ঝুমকি উঠে
দাঁড়ায়। ওরা দুজনে
পাশাপাশি হাঁটতে থাকে
স্টেশনের দিকে। এ শহরের
রেলস্টেশনটা নতুন
করেছে। বিশাল বড় বড়
প্ল্যাটফর্মের পাশ
দিয়ে আরামে হাঁটার
জায়গা। এই সব বিশ্রী
দিন শুরু হবার আগে খুব
সকালে ওখানে অনেককেই
হাঁটতে যেতে দেখেছে
নবাবালি।
পাওয়ার হাউজের মোড়টা
পার হতে আগে এই শেষ
রাতেও চারপাশে নজর
বোলাতে হতো বারবার। আজ
একেবারে মিয়াপাড়ার
বিশাল বড় গোরস্থানটার
মতো নিস্তব্ধ হয়ে আছে
জায়গাটা। ওরা
নির্বিঘ্নে মোড়টা পার
হয়ে আসে। স্টেশনের নতুন
গেইট বন্ধ,
পাহারাদারটাকে দেখা
যায় না কোথাও, সেও হয়তো
এ সময়ে তার খুপড়িতে
ঢুকেছে। পেছনের পুরনো
রাস্তাটা মাড়িয়ে ওরা
প্ল্যাটফর্মের ভেতরে
ঢুকে পড়ে। নতুন এই
স্টেশনটায় কোনো
দোকানপাট বা হকারের
ঘোরাফেরা নেই। এখন তো
একেবারেই নির্জন। এই
জায়গায় নবাবালি আসেনি
বহুকাল। তারপর ওরা
সামনে এগোয়, হাঁটবে আজ
যতদূর হাঁটা যায়।
বিশাল বড় বড় থাম দিয়ে
মাথার ওপর ছাদ টেনে
দেয়া এই স্টেশনে। তার
একটার নিচে হাত পা
গুটিয়ে কে বসে আছে।
প্রথমে ওকে নিজেরই
স্বজাতি বলে ভ্রম হয়
নবাবালির। কিন্তু পর
মুহূর্তেই সে ভুল
ভাঙ্গে তার। শতেক
জোড়াতালি দেয়া একটা
কাঁথার ওপর বসে বিড়বিড়
করছে যে, সে এক মানুষেরই
বাচ্চা, রুক্ষ জটাওলা
চুল আর শীর্ণ মুখের
কারণে তার চোখগুলো খুব
বড় বড় দেখায়। পাশেই
অর্ধেক খালি গায়ে একটা
ছোট্ট মানবশিশু ঘুমায়,
হয়তো ওরই বাচ্চা সেটা।
নবাবালি সামনে তাকায়-
সামনের কয়েকটা থামের
নিচেও বিভিন্ন সাইজের
বোঁচকা জড়িয়ে অনেক
মানুষ ঘুমাচ্ছে কিংবা
ঘুমের ভান করে শুয়ে
আছে।
নবাবালির আর হাঁটতে
ইচ্ছে করে না। এমন
রাস্তার মানুষ আগেও
দেখেছে সে, অগণিত। এই
স্টেশনেই দেখেছে কত
বাস্তুহীন মানুষের দল।
তবু আজ এই সময়ে, যখন
পুরো প্রজাতিটিই
নিজেদের ঘরের ভেতর দরজা
লাগিয়ে থাকছে, তখন
স্টেশনে পড়ে থাকা এই
মানুষের বাচ্চাদের
দেখে ওর মায়া জাগে। সেই
মায়ায় নিজের ক্ষুধার
কথা একেবারে বিস্মৃত হয়
নবাবালি, তার সামনে
থাকা ছোট্ট পোটলার মতো
ঘুমন্ত বাচ্চাটারও
হয়তো সারাদিনে খাবার
জোটেনি। জীবনে এই প্রথম
কি সে মানুষ নামের
প্রজাতিটির জন্য নিজের
হৃদ্যতা অনুভব করে?
ঝুমকির দিকে একবার
তাকিয়ে নবাবালি বসে পড়ে
ওদের পাশে। মা মানুষটা
হঠাৎ মাথা তোলে। সমস্ত
স্টেশন আর তার আশপাশ যে
মুহূর্তে আকাশ থেকে ঝরে
পড়া মুঠো মুঠো আলোয়
ভেসে যায়, সেই মুহূর্তে
এক ঘরহীন মানবসন্তান আর
এক খেতে না পাওয়া কুকুর
ঘোরলাগা বিস্ময়ে
নিষ্পলক তাকিয়ে থাকে
পরস্পরের চোখে।