সেদিনের পরেই দিনগুলো
আসে ।
লাফিয়ে লাফিয়ে , দৌঁড়ে
দৌঁড়ে ,
হাঁফাতে হাঁফাতে আর এই
আসা নিয়ে চলে যায় অনেক
কিছু ।
ছেলেবেলা আই মীন (
মিসটেক ইয়ার ) মেয়েবেলা
পালায় । স্মৃতিগুলো
মরচেগামী হয় । আর
হাপিত্যেশের আহা , উঁহু
করতে করতে জ্বলতে থাকি
সারাটা জীবন । আমার
হ্যানো ছিল , আমি ত্যানো
ছিলাম , খাইসে আবার
স্টার্ট ! এতকিছু বুঝি ,
জানতে পারি , তবুও
জীবনতো টক ঝাল মিষ্টি
নিয়ে গড়া বস্ ! এসবের
মাঝেই তো ওয়ান ইনটু
থ্রীপ্যাক অফার । পেছন
ফিরে দেখার মধ্যে যে
কোন ক্যালমা নেই ।
মহাপুরুষেরা বলেছেন (
কোন মহামহিলা এসবের ধার
ধারেন না ) -- নিয়ত সামনের
দিকে তাকাইয়া মস্তক
উচুঁ করিয়া লেগ স্টেপ
ফেলিবে । তাহাতে উচ্চ
মার্গ পাওয়া সহজ হইবে . ..
ইত্যাদি ,ইত্যাদি । এই
প্রসেস গ্রহনের
নিমিত্ত যেই না উপরের
দিকে তাকিয়েছি , খোঁচা
খোঁচা দাঁড়ি বিশিষ্ট এক
ষাটোর্ধ্ব
ভদ্রলোকের সঙ্গে চার
চক্ষুর মিলন হলো ।
মনে করি , মনে করি...
কিছুতেই আর মনে আসে না ।
শেষপর্যন্ত ঝলক দিখলা
যা সিন । ভদ্রলোক আমার
স্বর্গত দাদু , ধরাধামে
কিপ্টেমিতে নোবেলের
জন্য
নোমিনেশন পেয়েছিলেন ।
কিন্তু শেষমুহূর্তে
ষড়যন্ত্রের কারবারে
হেরে যান । তো উনি
উত্সুক দৃষ্টি নিয়ে
জানতে চাইলেন তেনার
হাতঘড়িটি( যেটিসস্নেহে
আমাকে দান করে চোখ
বুজেছিলেন এখন বহাল
তবিয়তে আছে কিনা ? আমি
আবার একসাথে ইনসোমনিয়া
আর মেমরি লসে ভুগি।
কিছু মনে থাকে না , সে এক
হ্যাপা । অবশ্য এতে
তেমন প্রব্লেম যে হয়
খুব তাও নয় । রাখে হরি তো
মারে কে -- গোছের বাক্য
যা সবসময় ইয়াদে রাখি ।
চিঠি আজকাল আর নেই যে
পোস্ট করতে হবে ,
বাজারঘাট তো বাবার
দায়িত্বে , আমার কাজ
বেশির ভাগ ফেসবুক নিয়ে
। হ্যাঁ , হ্যাঁ
ভার্চুয়াল জগত । ওখানে
আমার আড়াই হাজার বন্ধু
। অবশ্যই গর্ব করার মতো
বটে । রাজনীতি নেতাদের ,
ফিল্ম স্টারদের এত আছে
কিনা সন্দেহ ! একমাত্র
ফেসবুকে ঢুকলেই নিজেকে
বেশ কেউকেটা কেউকেটা
মনে হয় , স্টার স্টার
টাইপো "হৃদয় আমার
নাচেরা আজিকে ময়ুরের মত
" ফিলিং হয় আর কি! তাতেও
গাদাগুচ্ছের প্রব্লেম
গুরু।
গুড মনিং থেকে শুরু করে
কুড়ি পঁচিশ রকমের "
গুড "
আর বার্থ ডের ঘাট হয়ে
হিসি ডে , হাগা ডে'র
প্রভৃতি আঘাটার
পাশ কাটিয়ে প্রায় ছোটবড়
মাঝারি মিলিয়ে প্রায়
একশো আঠাশ রকমের ডে 'র
উইশ
করা কি চাট্টিখানি কথা
,বস! এছাড়াও আছে রকমারী
ভাঁজের প্রদর্শনী , কেউ
বিয়ের
পিঁড়িতে বসে তো কেউ
চিতায় শুয়ে কিংবা কবরের
থেকে স্ট্যাটাসের নামে
মর্জিমাফিক এক আধখানা
আধলা ইঁট ছুঁড়ছে । উফফফ!
উপায়ও নেই ।
মেয়ে বলে কি
চক্ষুলজ্জার মাথা
খেয়েছি ? অগত্যা জ্যাঠা
টাইপের মুখ
করে জানাতেও হয় --- আগুনে
ঝাঁপ দাও ক্ষতি নেই
আমরা তোমার সাথে আছি ।
অনেকে আবার মরে ভূত হয়ে
গেছেন , শ্রদ্ধার
ব্যক্তি কিন্তু
একাউন্ড অ্যাকটিভেট
আছে ,কাজেকাজেই
মৃত্যুদিনের উইশটাও
করতে হয়। কি আর
করা যাবে ,ফেসবুকে থাকি
বাবা , ডিউটি বলে তো একটা
কতা আচে , না কি !
উফ্ , আবার মিসটেক ।
ছিলাম আদিমযুগে পিত্জা
খেতে পৌঁছে গেছি মর্ডান
যুগে । দাদু , আমার দাদু
।
যাইহোক ঘড়ির কথা ততদিনে
আমার মাথা থেকে আউট ।
চুপিচুপি বাবার
ঘড়িটা এনে দেখালাম ।
ভ্যাগিস , ছানি চোখটা
অপারেশন করা হয়নি ,
মৃত্যুর
আগে , তাই বাবার ঘড়ি উনার
বলে চালানো গ্যালো ।
উনি উনার ছোপমার্কা
হাসি
নিয়ে , খেঁকো গলায় আশীষ
বানী করতে করতে বিদায়
নিলেন । পরেরদিন সকালে
উঠেই এইটা স্টেটাস
দিলাম
পঞ্চাশটি লাইক , দেড়শ
কমেন্ট
( নিন্দুকেরা জ্বলে তো
জ্বলুক আমার কি ? সবাই তো
বাবার হোটেলে থাকি । )
জানালো ' দাদুর সাথে আছি
' , একমাত্র বয়ফ্রেন্ড
আমার সাথে , ভয়ে ।
এই জীবন নিয়ে কথা ভাবি
। ভাবতে ভাবতে জল এসে
দাঁড়ায় । জল মানেই
কবিরা আবার শুধু নোনার
তুলনা খোঁজে । সমুদ্র
এসে দিকভ্রান্ত চোখে
তাকিয়ে থাকে । চোখ যদি
সমুদ্র হয় , সমুদ্র তবে
কি ? এখানেও মিসটেক ইয়ার
এসব ভাবনার মধ্যেই
দুড়দ্দড়াম করে ছোটো
বেলা নেমে আসে স্লিপ
করে স্মৃতি চরিত্ররা ।
কিছু গাছ ,কিছু পাতা । আর
এটা তো তোরও জানা বল ,
গাছ আছে মানেই পাতা আছে
। তখনই হাত বাড়িয়ে দিই
...তাচ্ছিল্য ছুঁড়ে
অনেকে আবার হাত পাতা
বলে খ্যাঁকখ্যাঁক
করে হেসে ওঠে ।
টাকাপয়সা চাইনা বস ,
টাকা নয় ( বাবার হোটেল
থাকতে আমার
কি এসব সাজে ভালোবাসার
কাঙাল হয়ে পড়ছি দিনদিন
। হিমসিম খেতে খেতে তা
নিয়ে ভাবি , অন্তত্ একজন
উদাসী আসুক ...চোখের কণা
চুরি করে ,পাতি বাংলায়
না জোরে না আস্তে করে
একজন এসে বলুক,শুধু
এইটুকু বলে যাক --" মন
,তোকে ভালোবাসা যায় তাই
ভালোবাসি "।( এখানটাতে
সিরিয়াসলি , দু চারটে
স্টার দেওয়া যেতেই
পারে )
কি কেলো ,সেন্টু হয়ে
পরছি যে! সেন্টু হলেই
আমি আবার সটাসট
ফ্ল্যাশব্যাকের গর্তে
মাটি হাতড়াই। সেই কুচো
স্বপ্নের মত
ছোট্ট গাঁ ...দুখিনী
মায়ের টলটলে চোখের মত
স্বচ্ছ পুকুর ...পুকুরে
আমার
হাঁসেরা
...এক্স্যাক্টলি ঠিক এই
সিনটাতেই হাসি আর খুশি
ছিল । শান্ত হাসি ।
বন্ধুরা বলে হাঁস থেকেই
নাকি হাসির আমদানি ।
কিন্তু আমার মূর্খ
বুদ্ধি দিয়ে মনে হয়
হাঁসের ডিমটাই সব ।
ডিমের ভাজা খাও , পোচ
বানাও , ঝোলে ঝালে মন
বিন্দাস । আর তাতেই
আটাশটি দাঁতের সুমহান
সিনসিন্যাটি বুবলাবু ,
সর্তকতায় জানাই , শুধু
হাসির জন্য বেশি আবার
হাঁসের ডিম খাবেন না ,
এলার্জির সম্ভবনা 100% (
নিজের শরীরের যত্ন নিন )
।
ছোটবেলাতেই যত সুখ(
ভুল ,পুরো মিথ্যা ।
সকালে উঠে আলজেব্রা কর ,
সুনামির রচনা , হিন্দি
অক্ষর শেখা ,সরগম সাধা
তার উপর গেলাস গেলাস
দুধ -- এগুলো সুখ ! ) ।
বিন্দাস বাবার হোটেলে
খাও , মায়ের হাত দিয়ে
সাজুগুজু করো , যা খেতে
ইচ্ছে শুধু একবার বলে
ফেল ,বাপ কাকু দাদু
সর্বস্ব দিয়ে ফিলআপ
করে
দেবে । অথচ , দেখ এসব তখন
কিছুই বোঝা যায় না তখন ।
যেইনা হাতে এসে পড়ল
সংসারের চাবি ,ভাবলাম
স্বাধীনতার আঠারোর পা
দিলাম ,'হা রে রে রে
রে...'সুর ভেঁজে পাড়ি দেব
ওহে " সুদূরের পিয়াসী
" তোর হাত ধরে ,ব্যস ,
স্বপ্ন ঘচাং খচ । একে
একে সমস্ত আর্দশের বুলি
তখন সুড়সুড় করে ঢুকে
পড়বে লঙ্কার কৌটায় ,
তেলের শিশিতে ,বাজারের
বিশটাকা নামক থলিতে ।
জল পড়ে পাতা নড়ের বদলে
টাকা নড়লেই জল পড়ে
অবস্থা তখন । পরাধীনতার
সুখ অনুভব করতে করতে
বাকী জীবন কাটানোর
সঙ্কল্প করতে হয় । এর
মধ্যে আবার ঘাঁয়ের উপর
বিষফাঁড়ার মতো এসএসসি
দাও রে , নেটের
প্রিপারেশান নাও রে ,
প্রাইমারীর জন্য
হা-পিত্যেশ করতে করতে
চৌরঙ্গীতে চিপটে মর
রে...ইত্যাদি ইত্যাদি
আডজ্যাস্টমেন্ট
অ্যাডজাস্টমেন্ট
অ্যান্ড
অ্যাডজাস্টমেন্ট ।
না পারছো তো খাঁটি
কলকাত্তাইয়া স্টাইলে
মেট্রোর সামনে ফুল লেংথ
ড্রাইভ কিংবা যেসব
গাঁইয়াদের কাছে
মেট্রোটা বিলাসিতা
তাদের জন্যে বরং
সুবর্ণরেখার পাড়ে ঘন
দেখে একটা কাজুবাদামের
গাছটাই বেটার অপশন ,
যদিও এটা ঠিক কাপ অফ মাই
টি নয় আমার আলালের ঘরের
দুলালী ,জমিদারনন্দিনী
ঠাকুমার মত আমিও "জীব
দিয়েছেন যিনি আহার
দেবেন তিনি " র
আপ্তবাক্যে বরাবরই
বিশ্বাসী , বিয়ের পরেও
ভদ্রমহিলা
নিশ্চিতভাবে জানতেন
বাউন্ডুলে স্বামী বই
কিনে সব টাকা খরচ করে
দিলেও জমিদার বাপের
দয়ায় শাড়িটা , ইলিশ
মাছটা কিংবা মিঠাপাতি
পানের যোগান সময় মতো
ঠিক পেয়ে যাবেন ।আমি
উত্তরাধিকার সূত্রে এই
বিশ্বাস পেয়েছি । কথায়
কথায় বলি , মোবাইল কিনে
দিয়েছেন যিনি , টকটাইম
দেবেন উনি । মা অবশ্য
এখানে একটা বড় হুঙ্কার
ছাড়ে ।থোড়াই কেয়ার ।
ম্যান ম্যানেজমেন্ট
বলুন কিংবা কুটনীতি ,যো
হ্যায় সির্ফ
ইয়াঁহা হ্যাঁয় । এটা
চানক্য হোক বা জল
জ্যান্ত আমি ,ডাজন্ট
ম্যাটার মাচ । বুঝতে
হয়
গো বুঝতে হয় , নইলে
পিছিয়ে পড়তে হয় ।
চানক্যের কথাও ধরো ,ওই
তাল পাতা সংগ্রহ করো রে
... পালক টালক খোঁজ
রে...তার ওপর রাজা টাজা
লোকের মন জুগিয়ে চলো , বড়
বড় হিংসুটে নীতি শেখাও --
জীবনটাই হেল হয়ে যায় নি
এই
রক্ষে ! আমি সেজন্যেই
কাগজ টাগজে লেখা ছেড়েছি
। এত ডাইরি কাগজ
ক্লাসমেট কিনে টাকা খরচ
করার চেয়ে , ল্যাপটপ
একটা বাগিয়ে সারাদিন
খুট খাট করতাম । কিন্তু
তাতে সবার দৃষ্টিরোষে
পড়ার কারণে বাংলা
লিখনেওয়ালা মোবাইল
আর্জেন্ট হয়ে পড়ে । এখন
হাঁটতে হাঁটতে লেখ ,
ঘুমাতে ঘুমাতে লেখ
,বন্ধু বাড়ি গিয়ে লেখ ।
ঠিক !
বাথরুমে দরজা বন্ধ করে
লিখে ফ্যাল দিল যা চায় ।
এদিকে দিল মাঙ্গে মোর ,
করতে করতে রুম ভর্তি
হয়ে যাচ্ছে , বেডের নীচে
জায়গা টায়গা নেই , ওই
ভেতরেও নিজের
সযত্নলালিত কিছু লেখা (
কবিতা টবিতা জাতীয় )
ম্যাগাজিন দক্ষিনা
স্বরূপ যা পাই জমিয়ে
রাখি । খুশি হয়ে একেওকে
দেখাই । জাহির করি ,
দেখুন , আমি হেঁই এত বড়
লিখিয়ে হয়ে উঠেছি (
ধাপ্পাবাজি ইয়ার ,
সত্যি ভেবে নিজের
সর্বনাশ ডেকে আনবেন না )
।বন্ধুরা আড়ালে হাসে ।
আরে , হাসতে দাও হাসতে
দাও । গুণীর কদর ক জনা
বোঝে ! আলেকজান্ডার কি
কম দুখ্যু করে বলে
গিয়েছেন? -"সত্য
সেলুকাস ,কি বিচিত্র এই
দেশ ! "
দুঃখ হয় , সুখ ভোগ করতে
ইচ্ছে হয় । বাবা বলেন যে
সয় সে রয় । ব্যস , আমিও
নিমেষে পাল্টে ফেলি
নিজেকে । এর কাছে
ফিসফাস করে লাল
পরক্ষণেই ওর পাশে গলা
তুলে সবুজ হয়ে যাই ।
কথায় বলে দেওয়ালেরও কান
আছে ।সে থাক , মুখ তো নেই
নাকি ,তবে দেওয়ালকে ভয়
পাওয়া কি ! তারচেয়ে বরং
জানালা থেকে সাবধান ।
যত নষ্টের গোঁড়া শালা
জানালা । পাক্কা দু
নম্বরি মাল । পাল্টাতে
জানে । এখুনি আলোবাতাস
গিফট দিচ্ছে তো ,পরেই
অন্ধকার আর ভূতের ভয় ।
সেক্রেটারিইয়েটের
দায়িত্ব সামলানো
রাস্তারা বরং একটু
বেশিই ইয়ে , আর কি ?
কূটনীতিতে পাক্কা,চতুর
খবরী মাল ! এরকম শত্রুতে
পিলপল করছে রুটিনের মুখ
। একসময় একসময় নিজের
আঙুলকেও বিশ্বাস করে
উঠতে পারি না । পা তো আর
নাছোড় , হৃদয় বিকিয়ে
দিয়েছি তোকে । নাক কান
চোখ মুখকে দিনরাত
আক্ষরিক অর্থেই তেল
দিয়ে চলতে হয়। শীতকালে
নিভিয়া ঘসে দাও ,দিনের
রোদে সানস্ক্রিন রাতের
গভীরে কেয়াশেঠের
স্বান্তনবারি ।
তারপরেও ব্রণ , ফুসকুড়ি ,
এটা সেটা । এত হ্যাপার
মধ্যেও থামার জো আছে !
একুশ পেরোচ্ছে ,ঢং ঢং
করে এগিয়ে আসছে বাইশের
এক্সপেক্টেশন , দেখতে
গেলে সব
নিউটনমার্কা
মনুসংহিতা । চৌষট্টি
পয়ষট্টির এসপার ওসপার
।
এখন , আমার বাবার কথায়
আসি । অত্যন্ত সজ্জন
ব্যক্তি উনি ।সবকিছু
ভালোবাসার দ্বারা জয়
করা সম্ভব এই টুপি পরে
দাদুর সমস্ত সম্পত্তি
জেঠুর কাছে হেরেছেন
।চারপয়সা চাকরিতে
আস্তে আস্তে নিজের
রাজ্যপাট সামলে থাকেন ।
আমি ওই ধাঁচটাকে
মনেপ্রাণে না মানলেও ,
উপায় নেই তাই বাবাকে
সার্পোট করে চলি । তাই
ঘুসস্বরূপ ভালো পেনটা
,প্যাস্টেল প্যাকেটটা ,
সুবিধা অসুবিধায় হাত
খরচের পয়সাটি আমার
ভাগ্যে জোটে । ভাই গিয়ে
কানভাঙানি দেয় মায়ের ।
আরে বাবা , এটা তো বোঝ্
আগে , কিছু দিলেই তবে
কিছু পাওয়া যায় । কথায়
আছে না , 'দেব আর নেব ...' ! এ
কূটনীতি নয়
বস , এতো জীবননীতি হে !
তখন , ন্যায় অন্যায়ের
ফিরিস্তি বেরিয়ে পড়ে
। আরে ! স্নেহের ভাই আমার
( সম্বোধনটা ওর মনখুশ
করে দেওয়ার জন্য ) এটা
তো বোঝ আগে , জগতে কোন
জিনিস সত্যি মিথ্যা বলে
নেই রে ! যে নিয়ম টা ঠিক
বলে জেনেছি এতদিন অথচ
আমার স্বার্থ ছাড়িয়ে
যাচ্ছে বলে মিথ্যে হয়ে
পড়ছে কি আশ্চর্য ভাবে !
এইসব বুঝতে হয় নাহয়
পিছিয়ে পড়তে হয় । ধূস !
ভাল্লাগে না , এইসব
নীতিজ্ঞান কি ভাইয়ের
মাথায় ঢোকে । বেকার
বেকার টাইম ওয়েস্ট ।
এমনি করে আমার পরজীবি
জীবন চলতে থাকে ।
খাচ্ছি ,দাচ্ছি ,
ঘুমাচ্ছি , টুপ করে
বয়ফ্রেন্ডের মেইলচেক
করছি --- এই তো জীবন ! আহা !
এ জীবন যদি না শেষ হয় ! না
না , মৃত্যু
নিয়ে এমুহূর্তে কিচ্ছু
ভাবছি না । যদিও মাঝে
মধ্যে স্টেটাস দিই
অবশ্য ।
সেতো তাকে ভয় দেখানোর
জন্য ।
যাতে ইনবক্সে বলে --'সোনা
, ' তোকে ছাড়া বাঁচবো না ' (
এ সংসার ঝুটা হ্যায় )।
তখনি মনটা দুলে ওঠে ।
ভগবান তো আর একসাথে
দুজনের জীবন নিতে পারেণ
না !
স্বর্গ বলো কিম্বা নরক
কোথাও ফাঁকা নেই রে ভাই
আজকাল । বাস্তু সমস্যা
,ভিটে সমস্যা , পরিধান
সমস্যা, কসটিউম সমস্যা,
ভাষা সমস্যা , ক্ষিদে
সমস্যা ,
নেটওয়ার্কিং সমস্যা
,শালা! সমস্যাময় জীবন, আর
এত
সমস্যা উপরে তুলে নিলে
ভগবান ঘুমোবে কখন ?
উর্বশী নৃত্য দেখবে কখন
?
অতএব , আমিও খুশ ,
ভগবানও খুশ । পড়াশোনায়
যে কি ছিলাম , নিজেই ভুলে
গেছি। অবশ্য , স্কুলের
স্যরেরা মাঝে মধ্যে
উনাদের ইয়াদে ফেলেন বলে
বিশ্বস্ত সূত্রে খবর
আছে । কিন্তু বাবা
ওটাকে সজ্জনবুদ্ধি
দিয়ে বলেন তোতাবিদ্যা ।
যাহ ! তো তোতাপাখি কি
খারাপ ? তবে খড়্গপুর
স্ট্যান্ডে চারশো টাকা
, হাজার টাকা দামে বিকোয়
কেন ?এইজন্যই আমার
সজ্জনবুদ্ধিতে রাগ
লাগে । যা কিছু মন খুলে
করতে যাবে একটা না একটা
ফল্ট বের করবেই করবে ।
ধূস ! ভাল্লাগে না ।
বাবা যদি সজ্জন
প্রজাতির হন ,
মা তবে দজ্জাল প্রজাতির
। কারণে অকারণে প্রশ্ন
। কার সাথে কথা বলছিলি ,
ছেলে না মেয়ে , বুড়ো না
যুবক , বেকার নাকি
চাকরিজীবি । আরো আছে ,
ওগুলো পারসোনাল আরো ।
বলা যাবে না ।
ভাইটি আমার পরজীবি
প্রজাতির
ক্ষনে ক্ষনে ম্যা ম্যা
করে চিত্কার জুড়েন
।দশভূজা রূপে তখন মাতা -
মাতাশ্রীর আবির্ভাব (
দুর্গার চাক্ষুষ রূপ)।
জলটা , কলাটা , ছাতাটা ,
ব্যাগটা সব মায়ের হাত
থেকে নেন উনি । সুতরাং ,
কি আর বলি ! চলতে দাও ।
আমারও সুযোগ আসবে ।
বিশল্যবাবু তো বলেইছেন
, এই বিশ্বে ( এখানে
আর্টিস্ট বিশ্বজিৎ
দাকে ভাবেন না আবার )
নিত্য - অনিত্য নেই (
কিন্তু আমি রবীন্দ্র
ভবনে " তা তা থই থই "
এর নাচ বা নৃত্য
স্বচক্ষে দেখেছি , এও
স্রেফ ঝুট ! ) , ভুল ঠিক
নেই ( তবে যে ইতিহাসে
সিপাই বিদ্রোহের সাল
ভুল লিখেছিলাম বলে
নাম্বার কাটা গেছিল ! ) ,
কোন কিছু স্থায়ী নয়
(এখানেও কনফিউজড) । আসলে
কারো কিছুই কিছু নয় ?
মাথা ঘুরে আমার এসবে ।
কি যে নিয়ম ! আর কোন টা যে
... ! ওই যে আছে না , "আমি
কোন পথে যে চলি ..." ।
অবশ্য , এতে আমার
অসুবিধে নেই । বেশ আছি ।
পাল্টাতে তো জানি ।
তুমি ও শেখো । আপনিও ।
শেখার শেষ আছে কি ! আরে
ওই গ্যালিলিও থেকে
আজকের গ্যালাক্সি
মোবাইল ...এসব তো শিখতে
শিখতে , পাল্টাতে
পাল্টাতে হয়
ইয়ার !ভুল টপকে টপকে
ভোলেবাবা ( পার করেগা ) ।
মিসটেক এগেইন ইয়ার ,
এতসব দেখে শুনে ভাবছি
'ভুল ' একটি শব্দ ছাড়া
কিচ্ছু নয় ।এখুনি
যাকিছু গলদ ভ্রমে গঙ্গা
স্নান যাওয়ার তোড়জোড়
করছি , সকালে ঘুম ভেঙে
ওটাই ধ্রুব সত্য বলে
'ইউরেকা' 'ইউরেকা' করে
কাঁপিয়ে তুলছি
কর্ণকুহর । আসলে , রুল
নোটের সাথে সাথে তৈরী
চেঞ্জ দেওয়ার খুচরো
।ব্যস , সিম্পল ।এই
দুনিয়ায় সব কিছু 'সত্য'
আসলে স্রেফ ঝুটের
প্যাকেটে মোড়া ; অউর সব
কিছু ' মিথ্যা' ও
একপ্রকার সত্যের মোড়কে
গুছানো । কি বললেন ? না
না ,স্বাভাবিক মশাই
,জানতাম এ প্রশ্ন
উঠবেই।এতে রাগের আছেটা
কি !
আমি ?
--- বহুরূপী প্রজাতি (
সলজ্জে , নো মিসটেক ইয়ার
)