মূক ভাষার গান

উপল বড়ুয়া


silence is the language of god,
all else is poor translation.
―Rumi

সময়হীনতার যুগে আকাশ চিরে বেজে উঠেছিল ধ্বনির গোঙানি। তারপর সেই ধ্বনি থেকে সৃষ্টি হলো শব্দ-ভাষা। সেই এককের ভাষা পরে বহুত্বে ছড়িয়েছে বয়সের সাথে সাথে। বয়সের সাথে সাথে পুনরায় সেই ভাষা বহুত্বের আগল ভেঙে নিমজ্জিত হবে এককে। তবে কেমন ছিল অন্ধকারের দিনে সেই ভাষাহীনতাঠকাল? নৈঃশব্দ্যৠর বেজে যাওয়া? তার কি ছিল অতীত-à¦¬à¦°à§à¦¤à¦®à ¾à¦¨-ভবিষ্যত? ভাষাই তো দিলো তারে নামধাম, পরিচয় ও কাল।

পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যমটাই হলো ভাষা। একসময় অস্ত্র দিয়ে সাম্রাজ্যব াদী দেশগুলো উপনিবেশ গড়ে তুলেছে পৃথিবীর আনাচে-à¦•à¦¾à¦¨à¦¾à ¦šà§‡à¥¤ এখন সাম্রাজ্য বিস্তারের সবচেয়ে বড় মাধ্যমটাই হলো ভাষা। অর্থাৎ আপনাকে নিজের পণ্যের বিক্রির জন্য বা অন্য দেশ লুণ্ঠনের জন্য সৈন্য পাঠাতে হবে না কোথাও। ভাষার ভেতর দিয়েই সেই কাজ করে নিচ্ছে ইংরেজ, স্প্যানিশ, পর্তুগিজরঠ। আপনার চিন্তাকে তারা প্রভাবিত করছে ভাষা দিয়ে। আপনি কিভাবে ভাববেন তা জারি রাখা হচ্ছে ভাষার ক্ষমতা দিয়ে। তার জন্য ভাষাকে হতে হচ্ছে সহজ ও বিবিধগমণেঠ° উপযোগ্য। ভাষার à¦¶à¦•à§à¦¤à¦¿à¦•à¦°à¦£à§‡à ° পেছনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে সেসব ভাষার বড় বড় সাহিত্যিকঠা। ইংরেজরা পেয়েছে চসার ও শেক্সপিয়াঠ°à¦•à§‡, স্প্যানিশর া সার্ভেন্তৠসকে। রাশানরা পেলো তলস্তয়-দস্ঠয়ভস্কি। যার ফলে সাহিত্য সেতুর ভেতর দিয়ে পাকাপোক্ত হলো ভাষার রাজনীতি। অর্থাৎ আপনি একবিংশ শতাব্দির লেখক, যে ভাষায় প্রতিনিধিত ্ব করেন না কেন মহৎ সাহিত্য হিসেবে বেছে নিচ্ছেন তাদেরকেই। এর ফলে বিস্তৃত হচ্ছে শেক্সপিয়াঠ°-তলস্তয়দের মার্কেট। সেহেতু তারা অমর। অতএব ভাষা যেমন জেগে উঠে সাহিত্যিকঠের সাহচর্যে তেমনি মরে যায় সাহিত্যিকঠের অভাবে। ভাষার ভেতর দিয়ে রাষ্ট্র যেমন তৈরি হচ্ছে তেমনি দখল হয়ে যাচ্ছে ভাষার মাধ্যমেই। কার্ল মার্ক্সের ভাষায়, বড় পুঁজি যেমন ছোট পুঁজিকে গ্রাস করে তদ্রুপ বড় ভাষা কেড়ে নেয় ছোট ভাষার প্রাণ। ভাষা সাম্রাজ্যব াদীরা তাই নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখার জন্য সৃষ্টি করে মহৎ কবি-লেখক। গ্রীকরা যেমন রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সৃষ্টি করেছিল হারকিউলিসঠ¦à§‡à¦° মতো বীরদের।
পৃথিবীতে আপাতত নতুন ভাষা সৃষ্টি প্রায় থেমে গেছে। এখন বিলোপের সময়। বৎসরে কতো ভাষা যে মৃত্যুবরণ করে তা ভাষা পরিসংখ্যাঠ¨à¦¬à¦¿à¦¦à¦°à¦¾ ভাল জানবে। আপনি যে, একুশে ফেব্রুয়ারঠতে ভাষা শহীদ স্মরণে প্রভাতফেরঠতে যাবেন তখন হয়তো পাহাড়ের কোন মানুষ নিজের ভাষায় কথা বলতে না পারার কষ্টে ভুগবে। বাংলা যেমন উর্দুর হুমকিতে পড়ে গিয়েছিল, তেমনি বাংলার হুমকিতে পড়ে কাতরাচ্ছে à¦†à¦¦à¦¿à¦¬à¦¾à¦¸à§€à¦¦à§‡à ° à¦­à¦¾à¦·à¦¾à¦—à§à¦²à§‹à¦“à ¤ একদিন হয়তো এই বাংলা-à¦†à¦¦à¦¿à¦¬à ¾à¦¸à§€à¦¦à§‡à¦° ভাষা মিলে আরেকটি ভাষার গোড়াপত্তন হবে। ইহাই যে ভাষার ধর্ম।
একসময় মানুষ তার স্মৃতিকে সংরক্ষণ করতে হায়ারোগ্রঠ¿à¦«à¦¿à¦¤ বা চিত্রলিপি তৈরি করতো। সেই সংকেত পরিবর্তন-বঠবর্তনে এসে ঠেকেছে আর্ন্তজালৠ। মানুষ যখন ছিল না তখনো ভাষা ছিল। যখন মানুষ থাকবে না তখনো ভাষা রাজত্ব করবে ভাষা। নৈঃশব্দ ভেঙে মানুষই তো দিয়েছে ভাষার মর্যাদা। কিন্তু জগত কি চিরন্তন কিছু নির্দেশ করে? সূয্য কি ডুববে না? ভাষা কি থাকবে না? এই জবাবের আগে, এই কলরবের দিনে বেজে উঠুক আপাতত― ‘সাউন্ড অব সাইলেন্স।⠙