মেডিটেশন

গিরীশ গৈরিক ও শ্রবণা মুখার্জি


গিরীশ গৈরিক

প্রশ্ন ও উত্তরের বাহিরে

কিছু কথার প্রশ্ন আছে উত্তর নেই
কিছু কথার উত্তর আছে প্রশ্ন নেই
তোমার এই চুপ থাকা প্রশ্ন ও উত্তরের ঊর্ধ্বে।

পৃথিবীতে কে কে চুপ থাকতে ভালোবাসে-
মানুষ, পাখি, মাছ কিংবা পশু-
কেউ নয়, শুধু বক্ষই চুপ থাকে নিভৃতে।
নিরব তার ভাষা-প্রেম-à œà§€à¦¬à¦¨à§‡à¦° ঘাঁ।
তবুও হেমন্ত এলে সবুজ পাতা হলুদ হয়ে যায়
পাতার সাথে ঝরে পরে বেদনা।

বাবা, তোমার ছবি আজ নিরব বৃক্ষ
আমরা তার ঝরে যাওয়া হলুদ পাতা!


মেডিটেশন

কিছু কথা আছে-পাখির মতো উড়ে যায়
কেউ শুনতে পায় না, শুধু তারে দেখা যায়।
কিছু কথা-শুধু বধির মানুষ শুনতে পায়।
কিছু গন্ধ দেখা যায় হৃদয় দিয়ে-
অনুভূতির দুয়ারে দাঁড়িয়ে তারে নাচে।

এক জন্মান্ধ মেয়ের কাছে শুনেছি-à¦¬à¦¾à¦¤à ¾à¦¸ দেখতে কেমন?
সে বলেছিলো : আমার চোখের জলের মতো!
অন্ধকারের মতো গন্ধহীন আর আলোর মতো বধির!

তাই আমার কথাগুলো ব্যথা হয়ে বেজে ওঠে বাতাসের আড়ালে।


ঋষিঋণ

চোখ বুঝলেই শ্মশান দেখতে পাই-
শ্মশানে বরফ জমে আছে!
কোথাও আগুন পাচ্ছি না, একটা বিড়ি ধরাবো।
আচ্ছা। আপনার খুঁতি থেকে একফোঁটা আগুন ধার দেবেন?
এই দেখেন-আমার বিড়ির ব্যান্ডের নাম পৃথিবী
পৃথিবীকে পোড়াবো, আমার হৃদয় পৃথিবীকে পোড়াবো!

রবিবাবু-একঠ«à§‡à¦¾à¦à¦Ÿà¦¾ আগুন ধার দেবেন?
আমাদের জীবনের ধারাপাত জ্বালাবো...

ধ্বনি

একজন গর্ভবতী অন্ধকারে আলোর সন্ধানে ব্রত-
তার চারিপাশে জ্বল জ্বল করছে কালো নক্ষত্র।
মৃত্যুর নিড়বতা জীবনের উৎসবকে এভাবে পরাজিত করে।

দূর পাহাড় থেকে কে যেন বাঁশি বাজায়, শান্ত ধীর স্থির সেই সুর।
সেই সুরের পথে গর্ভবতী মা হেঁটে যাচ্ছে-à¦¦à¦¿à¦—à ¦¨à§à¦¤à§‡à¦° সীমারেখা পেরিয়ে
তার পায়ের শব্দে লজ্জাবতী মথা নত করে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে-
ঘাসে ঘাসে শিশিরের মাঝে প্রাণ কিচির-মিচিঠ° নৃত্যে জেগে উঠেছে।
এসব অনুভব করে পাখিরা গাইছে-
‘আলো ও আঁধারে, জীবন ও মরণে-à¦­à¦¾à¦²à§‹à¦¬à ¾à¦¸à¦¾ কথা কয়’।

মা-বাঁশির সুরকে যতই কাছে পেতে চায়, সুর ততই দূরে সরে যায়।
এভাবে মায়ের পদযাত্রা থেমে যায়, শুরু হয় নতুন সুরের-
ভূমিষ্ঠ শিশুর কান্না বাশির সুর হয়ে ধ্বনিত হয়।
আর সেই সুরে কালো নক্ষত্রগুঠ²à§‹ আলোয় আলোয় ভরে ওঠে।

============================================


শ্রবণা মুখার্জি

শব্দ জন্ম

১।

স্বপক্ষে উচ্চারিত হবে বলে চুপ করে ছিলে শেষ। বনস্পতি ছায়া গুল্ম থেকে গাছ হয়েছে বেড়ে বেড়ে। গৌরব দিতে পারিনি তবু তুমি ক্ষমা দিয়ে গেছো। তোমার আস্তে আস্তে নিভে যাওয়ায় হেরে যাওয়া ছিলো না। সেই মহীরুহ এখন স্মৃতিপটে তার ঝড়ে যাওয়া পাতাগুলো কুড়োতে ব্যস্ত।

২।

যে ডাকে শব্দ নেই তা শুনতে ইন্দ্রিয়েঠ° দরকার হয় না। যে গন্ধ দেখতে পাওয়া যায় তার ঘ্রান রাখি হৃদয়ে। বধির শব্দের ব্যাকরণ। কানে তালা পড়ে। চাবি মিশে যায় অনুরণনে। পিছিয়ে যাই যতটা, ততটাই ফিরে আসার দাবী। পায়ে ব্যথা বাড়লেই তো অভিসার সম্পূর্ণ হয়।

৩।

বেঁচে থাকাই আগুন হয়ে জ্বলছিলো তোমার ভিতর। শ্মশানে আর কতটুকু আগুন থাকতে পারে জ্বালাতে। আমি অভাগির স্বর্গে যাওয়ার মতো দেখছিলাম। কিভাবে জ্বলে উঠেছিল নরক। একে একে প্রেম, লোভ, কামনা, অহংকার…। হিমাঙ্কের খবর পৌঁছায়নি তোমার হেঁশেলে। বরফের থেকে আগুন ধার করবে বলে হেঁটেছিলে মৃত্যু সঙ্গে নিয়ে।

৪।

মৃত্যুর কাছে জন্মকে বাজি রাখে যে নারী, তার কানে জন্ম শব্দের মুখ থাক। তুই আঙুল ধরবি বলেই নক্ষত্রদেঠ° সাজাতে পারি। জন্মের ঘোষণা প্রতিধ্বনি ত হতে থাকে এক জীবন ধরে। তোর কাছে হার মানতে পারে সব নাছোড় দাবিগুলো। এই মুহূর্তের স্নানঘর যা মেঘ ছাড়াও বৃষ্টি নামায় শরীরে। খুঁজে দেখতে পারে জন্মস্থান।

যেটুকু গল্পের রুপকথা এখনো বাকি আছে, তুই আসবি জানলে ভুলে যেতে পারি এ জন্মে।