স্বাধীনতা হল কথা
বলার , মাথা তুলে বেঁচে
থাকার এবং কথা
শোনার,ওপরের মাথাকে
মর্যাদা দেওয়ার নাম ।
এই স্বাধীনতা বহু
সংগ্রামের ফলে ত্যাগের
ফলে প্রাপ্ত ফসল ,
পুরোপুরি এমনটা
নয় । ঠিক তেমনি
স্বাধীনতার পরে ও আগে
শ্রমজীবি মানুষের
অবস্থার উন্নতি ও অবনতি
প্রসঙ্গে কয়েকটি কথা
বলার চেষ্ঠা করব । যদিও
আজ বৃহৎ গনতন্ত্রের
বুকে দাঁড়িয়ে আমি
কতোটা যোগ্য এসব আলোচনা
করার জানিনা কারন
সংগ্রামের পটভূমিটা
তখন ছিলো একটা
সামন্ততান্ত্রিক
ব্যবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে
মহা বিদ্রোহের আগুন
জ্বালা । এখন সেই
অনুভূতিটা কতোটা গভীরে
ছুঁয়ে যেতে পারব জানিনা
। জ্ঞানও সিমিত।তবু
চেষ্ঠা করছি
আমার,মেদিনীপুরের
কয়েকটি এলাকার বর্তমান
চিত্র এবং স্বাধীণতা
পূর্ববর্তি চিত্র ,যা
পড়ে এবং লোকমুখে শুনে
এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা
প্রত্নতাত্মিক
নিদর্শন থেকে জেনেছি ,
তাদের তুলনামূলক
চিত্রটি তুলে ধরার
চেষ্ঠা করছি ।
মানব সভ্যতার
নির্দিষ্ট স্থানে বসতি
নির্মান , মানুষ
সৃষ্ঠির সময়ের
পরিপ্রেক্ষিতে বেশি
দিনের নয় ।স্থায়ী এবং
নির্দিষ্ট আর্থ
সামাজিক রূপরেখা
নির্মানের বয়স আরো কম
।এই আর্থ সামাজিক
চিন্তাধারা এবং তার
দ্বারা সামগ্রিক মানব
সমাজের সুষ্ঠ অগ্রগতি
আজো সময়ের সাথে
পরিবর্তনশীল । এই
পরিবর্তিত সময়ের
প্রবাহ আবার বেশির
ভাগটাই মনুষ্য সৃষ্ঠ ।
কেউ বলতে পারেন ,
অস্তিতের সংগ্রামে আরো
সুগঠিত , সুন্দর এবং
নিশ্চিৎ সামাজিক ও
ব্যাক্তিগত সুখ ভোগের
উদ্দেশে মানুষ তার
সময়কে দ্রুত করে তুলেছে
! কিন্তু এই দ্রুত করতে
গিয়ে সে যতোটা চেয়েছে
তার চেয়ে বেশি চঞ্চল
হয়ে গেছে সভ্যতার ঘোড়া
।তা শুরু হয়েছিলো চাকার
আবিস্কারের সময় থেকে
।এবং এটা তীব্র ও
যান্ত্রিক হয় , ধাতু এবং
তারপর লোহা আবিস্কারের
পর থেকে । অস্ত্র আরো
তীক্ষ্ন আরো তীব্র এবং
নৃশংস হয়েছে । কালের
স্রোতে অস্তিত্বের
সংগ্রাম পরিবর্তিত
হয়েছে আগ্রাসি
অধিগ্রহনের দিকে
।নিজের শক্তি এবং
ব্যবসার উন্নয়নের
স্বপ্নে বিভোর একটি বা
একাধিক জাতি অস্ত্রকে
করেছে তার পথ আর
অধিগ্রহনের হাতিয়ার ।
একে অন্যকে টেক্কা দিতে
শক্তি বৃদ্ধির
নিমিত্তে বারুদ
আবিস্কার ও তার নির্মম
প্রয়োগ হয়েছে মানুষের
ওপর । এই দিক থেকে
ইউরোপের দেশগুলো প্রথম
থেকেই এগিয়ে তাদের
বৈজ্ঞানিক
চিন্তাধারার জন্যে ।
এবং ওরা দেশবিদেশ পাড়ি
দিয়ে ব্যবসা করত এবং তা
থেকে ওদের ভেতর একটা
প্রতিযোগীতা ছিলো
প্রথম থেকে পাশাপাশি
দেশগুলোর সাথে । কে
কতোটা মূল্যবাণ দ্রব্য
আহোরন করতে পারে । তার
জন্যে রক্ত্ক্ষয়ী
যুদ্ধও লেগে থাকত
নিজেদের মধ্যে।ভারতে
ব্যবসা করতে এসে এভাবেই
ইংরেজ ও অলন্দাজদের
ভেতর একটা যুদ্ধ ছিলোই
।এমনকি পরবর্তি সময়ে
ভারতিয় বিপ্লবীদের
বারুদ ও অস্ত্র দিয়ে
সাহায্য করত অলন্দাজরা
যাদের প্রভাব ছিলো মূলত
দক্ষীনভারতের
এলাকাগুলি ।একথা সবাই
জানেন।এ ব্যপারে
বিস্তারীত যাচ্ছি না ।
আমার কথা হচ্ছে ইংরেজরা
বানিজ্য করতে এসে যেটা
দেখল যে এদেশ সোনার দেশ
। শুধু মাটির নীচের
সোনা নয় এর ওপরেও সোনা
ফলে ।আর একটা বিষয় নজর
করেছিলো যে , এখানকার
মানুষ কী বিপূল পরিমানে
শান্ত আর বাধ্য এবং
রাজার অথবা শামন্ত
প্রভুদের অনুগত। তার
জন্যে এমন একটি সোনার
ডিম পাড়া হাঁসকে
হাতছাড়া করতে চায়নি ।
ফলে অস্ত্র ও সামরিক
শক্তি বৃদ্ধি করতে শুরু
করেছিলে প্রথম শত্রু
পর্তুগীজ দস্যু ও
দ্বিতীয় ভারতীয় রাজারা
, যাদের ভেতর আবার যুদ্ধ
লেগেই থাকত । এভাবেই
বারুদ ও আধূনিক অস্ত্রে
বলীয়ান ইংরেজরা দেশ দখল
করতে শুরু করে ।
প্রত্যন্ত গ্রামে
ছড়িয়ে পড়তে থাকে চতূর ও
বলীয়ান ইংরেজদের রথ ।
গ্রামগুলোকে বেছে নিত
এরা মূলত কৃষি ও
শ্রমিকের জন্য আর
শহরগুলো গুদাম এবং
পরিবহনের জন্য ও
প্রশাসনিক কাজকর্মের
জন্য ব্যবহৃত হতে থাকল
। আমি এমন একটি গাঁয়ের
কথা বলব যেখানে নীলকর
দের অত্যাচারে অতিষ্ঠ
হয়ে ওঠা মানুষদের
বিপ্লবী সংগ্রাম ছিলো
মনেরাখার মতো । তার
দুটো কারনের একটি হলো
এই সংগ্রাম ছিল যতোটা
না ইংরেজদের বিরুদ্ধে
তার চেয়ে বেশি ইংরেজদের
পোষা শামন্তপ্রভু
মহাজন আর ক্ষুদ্র
মাফিয়াদের বিরুদ্ধে
।ভারতবর্ষ পরাধীণ ছিলো
প্রায় ২০০ বছর । এর
যতোটা না ইংরেজদের
জন্যে তার শতগুন বেশি
দালাল জমিদার আর
পুঁজিপতী সুবিধাভোগী
দেশের একটা অংশের
মানুষজনদের জন্যে
।দ্বিতীয়ত এই
সংগ্রামের একটা অন্য
গুরুত্ত্ব হল
,সংগ্রামটি ছিলো খেটে
খাওয়া শ্রমিক মজদুরের
সংগ্রাম।পরবর্তি ভারত
এই শ্রেণীটাকে আর ছোট
চোখে দেখা থেকে বিরত
থাকা শুরু করেছিলো ।
প্রশ্ন হচ্ছে জমিদার ও
মহাজন কেন আক্রমনের
প্রধান লক্ষ ? কারন
,গ্রামের বেশির ভাগ
জমির মালিকানা ছিলো
তাদের হাতে এবং ইংরেজরা
তা ছিনিয়ে নেয়নি কারন
তারা জানত মজুর শ্রেণী
যতোটা এ দেশিয় ফিউডাল
তথা উচ্চবিত্তের বা
উচ্চবর্ণের কথা শোনে
এবং অনুগত ততোটা
বহিরাগতদের শুনবে
না।আর তারজন্য প্রথম
দিকে বলপ্রয়োগ এবং অর্থ
মান প্রতিপত্তি প্রদান
প্রভৃতির দ্বারা ঐ
সামন্তপ্রভুদের নিজের
হাতে এনে জমির ওপর
নিজের ইচ্ছে মতন ফসল
ফলানো এবং কাঁচামাল
করায়ত্ত করার একটা কৌশল
নিয়েছিলো । পশ্চিম
মেদিনীপুরের শেষ মাথায়
একটি গ্রাম ওড়িষ্যা
ঝাড়খন্ড লাগোয়া
সুবর্নরেখার তীরে গড়ে
ওঠা সবুজ গ্রাম
গোপীবল্লভপুর।স্বাধীন
তার ৬৮ বছর পরেও সেই
গ্রামের উত্তর পূর্বে
ছড়িয়ে আছে ইংরেজ আমলের
কিছু নির্দশন , নীল
কুঠি।এবং সিধু কানহু
বিরশা সেতু ।এই সিধু
কানহু বিরশা এক
বিপ্লবের নাম । এক
দূর্বার প্রতিরোধের
নাম । শাল পিয়াল শিশু
অরণ্য আর সুবর্নরেখার
দুপাড়ে সবুজ হলুদ ফসলের
ক্ষেত নিয়ে সুসজ্জিতা
গোপীবল্লভপুর এবং
ঝাড়গ্রাম মহকূমার লাল
মাটির বুকে জমে ওঠা
বারুদের চূড়ান্ত
বিস্ফোরনের নাম সিধু ,
কানহু , বিরশা।ইংরেজ
আমলে এদের সশস্ত্র
সংগ্রাম ছিলো
স্বাধীনতা আন্দোলনের
একটি মহত্ত্বপূর্ন
অধ্যায় কিন্তু এই
বিদ্রোহকে তৎকালীণ
মহান স্বদেশীয় মানুষরা
বলেছিলেন চুয়াড় [
অর্থাৎ ছোটলোক , অসভ্য,
নীচ ] বিদ্রোহ । গায়ের রং
কালো আর ভাষা ঝাড়খন্ডি
( উপভাষা ) ছিলো বলে হয়ত
অথবা তীর ধণুক টাঙ্গি
কুঠার নিয়ে আন্দোলনটা
ছিলো বলে হয়ত।যাই হোক ।
বিস্তারিত যাচ্ছি না ।
আজ ফিরে দেখি -
ভাঙ্গা নীল কুঠির
কাছে গেলে চাবুকের শব্দ
শোনা যায় । ভাঙ্গা
পাঁজরে রক্ত আর ধর্ষনের
চিহ্ন দেখতে পাই আমি ~ এ
নেহাত ই অনুভব আর আবেগ
কিন্তু ইতিহাস ? নীলকর
দের অত্যাচারের
নির্মমতা অশ্বিকার
করতে পারি নি ।আজ সকাল
বেলার খবরের পাতা খুললে
চোখে পড় ধর্ষন লুঠ
হত্যা আর করাপশান । আর
গ্রামে বিষের ফলন ।
জমিনে ইঁটভাটার রমরমা ।
সরকারি উৎসাহ প্রদান
তাতে । আর কৃষি
সংস্কৃতির বিলোপ ।
এভাবে কতোটা ভালো আছে
শ্রমিক শ্রেনী যাদের
সংখ্যাটা একটু বেশি বই
কম নয় !
অস্তিত্বের জন্যে
সংগ্রাম প্রতিটি
প্রাণী এমনকি উদ্ভিদের
মধ্যে প্রতি মুহূর্তে
ঘটে চলেছে । এই টিকে
থাকার লড়াইটা কিন্তু
খুবই ব্যক্তিগত।যদিও
বৃহৎ বিপর্যয় এবং অজানা
ভয়কে রুখতে আমরা বারে
বারে দলবদ্ধ হয়ে
সংগ্রাম করি । এর সাথে
স্বাধীনতা সংগ্রামকে
গুলিয়ে ফেললে চলবে না
স্বাধীনতা সংগ্রাম
ছিলো শৃঙ্খল মোচনের
যুদ্ধ , মর্যাদার লড়াই
। কিন্তু ইংরেজ আমলের
২০০ বছর একটি কৃষকের ,
একটি শ্রমিকের বা একটি
কেরানির যে জীবন
সংগ্রাম ছিলো তাকে fight for
existing বলা যেতেই পারে ।
এবং তা কম বেশি সর্বদা
থাকে । এখানে যে কথাটা
হচ্ছে ইংরেজ আমলে নীল
চাষ করার জন্য বাধ্য
করানো এবং বাধ্যতামূলক
ভাবে সুলভ সাঁওতাল মজুর
চালান দেওয়া শহরে এবং
তার সাথে নাগাড়ে চলতে
থাকা নারীর ওপর
অত্যচারের ইতিহাস
ছিলো। কিন্তু একটা কথা
ভুললে চলে কী করে যে ,
ইংরেজ আমলে সবচেয়ে বেশী
যারা মাথাচাড়া দিয়ে
উঠেছিল , তারা , গ্রামীন
মহাজন আর শামন্ত প্রভূ
আর এদের হাতেই ছিলো
প্রভূত জমিজমা । অর্থাৎ
খুব শুক্ষ্মভাবে বিচার
করলে দেখা যাবে যে
অত্যাচার নেমে এসেছিলো
তা ছিলো প্রকৃত পক্ষে এ
দেশিয় শামন্ত প্রভূ
ইংরেজ সরকারের পোষ্য
সামন্ত প্রভূ ইংরেজদের
স্বার্থে প্রশাসন কে
কাজে লাগিয়ে
অত্যাচারের ফলাটা
তীক্ষ্ন করেছিলো । এবং
অত্যাচারের চাবুকটা
নেমে এসেছিলো শ্রমিক
মজুর শ্রেণীর ওপর যারা
জমিদারের জমিনে বেগার
খাটত নূন্যতম মজুরীতে ।
তবে আন্দোলন আগে না হয়ে
নীল চাষের সময় কেন
হয়েছিল ! কারন নীল চাষ
বহু কষ্টের আর এতে
মজুরীও পেতো না ধানের
আকালে খাদ্য
জুটত না ।
রাষ্ট্রশক্তির ভরসায়
জমিদাররা আরো নির্মম
হয়ে উঠেছিলো । তারজন্য
প্রথম আঘাতটা নেমে
এসেছিলো ইংরেজদের
তোষামদকারী জমিদারদের
ওপর । আজ । আজ সেই
অত্যাচার নেই ! আমি বলব
আছে চরিত্রটা বদল হয়েছে
। যেমন পর্তুগিজ
ইংরেজদের ব্যবসার
চরিত্রটা
পাল্টেছে । শোষনটা একই
আছে । আজো ইউরোপের থাবা
আমাদের দেশে তীব্র
হয়েছে । লুঠ আজো হচ্ছে ।
আজো সংগ্রাম সম্মিলিত
হয় । কিন্তু তার কারনটা
পাল্টেছে । ধরণটা
পাল্টেছে । এবং সংগ্রাম
রুখে দেওয়ার রাষ্ট্রের
কায়দাটাও পাল্টেছে। আজ
কৃষি সংস্কৃতি এবং কৃষি
জমিটাকেই এই কায়দায়
ছিনিয়ে নেওয়ার প্রয়াশ
চলছে।যা আরো মারাত্মক
।
জনসংখ্যা বাড়ার সাথে
সাথে ফসল ফলানোর চাহিদা
বেড়েছে ।এদিকে নতুন
নতুন বসতির প্রয়োজনে
কৃষি জমি হ্রাস পেয়েছে
। ফলে অধীক ফলনের জন্যে
কৃত্রিম ধানবীজ ও
রাসায়নিক সার এবং
কীটনাশকের প্রয়োগ
বেড়েছে । আবার কৃষি
জমিতে ইঁটভাটার ব্যবসা
বেড়েছে বহুগুন । যার
ফলে তার চারপাশের জমির
জলতল তেমন হ্রাস পেয়েছে
মাটির রসাল ভাবটাও
কমছে।রাষ্ট্র বেকার
সমস্যার একটা দিক
হিসেবে একেও চিহ্নিত
করেছে । অনেক সময় উৎসাহ
দিয়েছে এবং অর্থের
সাহায্য করেচলেছে
রাষ্ট্র । বেকার
সমস্যার সমাধান হিসেবে
বেড়েছে ভারী শিল্পের
চাহিদা । যার মালিকানা
বেশীরভাগ বিদেশীদের
হাতে প্রত্য্ক্ষ এবং
পরোক্ষভাবে । এবং এই
শিল্পের জন্যে অরণ্য
কৃষি জমি সবুজ মাঠ আর
নদীকে ধ্বংস করা হচ্ছে
। ইউরোপীয় কায়দায় { যদিও
অধুণা ইউরোপ তার নিজের
দেশে সমঝে চলে } শহরে
কয়টা পার্ক , নদীর পাড়
বাঁধীয়ে সবুজায়নের
একটা সময় কাটানোর এবং
শ্বাস নেওয়ার জায়গা ঠিক
করে নিয়েছে । যেখানে
গ্রামের প্রকৃতিকে
দিনকে দিন কলুষিত দুষিত
করে চলেছে । আর
কৃষিমজুরকে পরিনত করা
হচ্ছে ভারী কারখানার
মজুরে।এদিকে তাদের
খাদ্যতালিকায় সুষম
খাদ্য ও নিউট্রেশানের
সঠিক বন্দোবস্ত না
থাকায় অথবা সেই কালচার
না থাকায় অথবা সেই অর্থ
না থাকায় তাদের ঘরের
মহিলারা দূর্বল ও রোগ
গ্রস্থ হচ্ছে । তাদের
ঘরের ছেলে মেয়েরা
দুর্বল ও অসুস্থতার
শিকার । প্রতিযোগিতা
থেকে পিছিয়ে পড়ছে । আর
সেই মজুরটি কাজ করতে
পারছে না যতোটা সে পারত
। ফলে কাজের জন্যে মদ
হেঁড়িয়ায় আসক্তি
বেড়েছে । বেশির ভাগ
মরছে লিভার সিরোসিসের
ফলে । আর নেশার ফলে
বাড়ছে বিশৃঙ্খলা ।
রাজনীতি তাদের
মাথাগুলো কিনতে সুবিধে
হয়েছে , এবং লোভ আর আশাহত
হওয়ার ফলে বাড়ছে অবসাদ ,
হিংসা আর আগ্রাসন ,যাকে
কাজে লাগাচ্ছে রাজনীতি
সুচতুরভাবে । এই ভাবে
একটা অপরাধপ্রবন
শ্রেণিতে পরিনত করছে
দলের
স্বার্থে , দেশের
রাজনীতি।আর শহরে
মাফিয়া এবং গ্রামে আবার
গজিয়ে উঠছে ছোট ছোট
ফিউডাল । আমাদের গ্রাম
,শুধু আমাদের গ্রাম কেন
সারা ভারতের গ্রামগুলো
আজ কৃষি থেকে সরে আসতে
চাইছে রাষ্ট্রের
বিভ্রান্তমূলক নীতির
জন্যে । বিভ্রান্ত কৃষক
মজুর পরিচালিত হচ্ছে
সাময়ীক অর্থ সংগ্রহের
সোর্সগুলোর দিকে ।ফলে
দীর্ঘকালীন একটা
অস্তিত্বের সংকট তৈরী
হয়ে গেছে।
স্বাধীনতা ! মাটির
নাকি মানুষের নাকি
দুটোর ! এটা বোঝার আগেই
৬৮তম স্বাধীনতা আমাদের
চুম্বন করে চলে গেল
অথবা আমরা তাকে চুমু
খেলাম । এই স্বাধীনতা
আমাদের অনেককিছু
দিয়েছে । অনেককিছু
নিয়েছে নিচ্ছে ।এই
স্বাধীনতা ভুল নাকি তার
আসল মূল্যায়ন করতে
পারিনি ? কোনটা ঠিক ভুল
বিচারের চেয়ে বড় কথা
আমার মনে হয় স্বাধীনতা
কেউ কাউকে দিতে পারে না
কেউ কারো কাছ থেকে
নিতেও পারে না , আমি যদি
মনের দিক থেকে চিন্তার
দিক থেকে না স্বাধীন
হতে পারি । তাই শাষন
মানেই পরাধীনতা কিন্তু
আমাদের সুস্থ
স্বাভাবিক গ্রোথের
সাথে বেঁচে নেওয়ার
জন্যে একটা আইন ও সমাজ
ব্যবস্থার শৃঙ্খলে
থাকতে হয় । এবং এই
শৃঙ্খল যদি সাধারন
মানুষের দ্বারা
নির্মিত ও পরিচালিত এবং
অবস্থা অনুসারে
পরিবর্তিত হয় তবে তাকে
গনতন্ত্র বলে । যা তার
হিতকারি এবং সহমর্মিও
বটে । কিন্তু আজ যখন
আমার গ্রামের নদীর তীরে
ভাঙ্গাচোরা নীলকুঠি
গুলির পাশে দাঁড়াই তখন
দেখি আজো এই ভাঙ্গা ঘরে
অত্যাচারের চাবুক শনশন
করে বাতাস কেটে নেমে
আসে রেশনের ছালতোলা
মিলের চালে ।রেপ হয়ে
পড়ে থাকা মেয়াদের যোনির
ভেতর আজো দেখি
এ দেশীয় ইংরেজদের
শুক্রানু কতোটা নির্মম
। রাস্তার পুলিশের পাশে
দাঁড়ালে মাথা নেমে আসে
মাটিতে লজ্জায়
অসহায়তায় ভয়ে।তখন
বুঝতে পারি আজ
স্বাধীনতার ভোগ টা
কাদের জন্যে ? আসলে
সাধারণ মানুষের
স্বাধীনতাটা কোথায় তাই
কেউ বুঝল না । আমাদের
মর্যাদা চাই । মৌলিক
অধিকার চাই । আমাদের
নদী চাই । সবুজ মাঠ চাই ।
ধান চাই । ধানের গান
গাওয়ার মন চাই । সুস্থ
রাজনীতি চাই । সুস্থ
প্রশাষন চাই । অত্যাচার
মুক্ত গনতন্ত্র চাই ।
এটাই বোঝেনি রাষ্ট্র ।
তাই শাষক মানেই
শ্রমিকের কাছে মজুরের
কাছে খেটে খাওয়া
মানুষের কাছে - ইংরেজ।