❑ ফেরিওয়ালা
চাঁদ নক্ষত্র ঝুলিতে
তোমার
লুকায়া লুকায়া করছো গো
ফেরি
ওরে ও বণিক, ও সপ্তদেশের
সওদাগর
কোনদিকে যাও আজ তুমি—
সূর্যের নিচে ফুরাইছে
দুপুর
মরুর মলিন মুখের মমি
অপেক্ষায় রাখছো তারে কয়
জনম?
কয় ঘুম? জিওন কাঠি অদল
বদলে
রাতরে করেছ দিন
ও নিখোঁজ জাহাজের
নাবিক,
ওরে পরানের জাদুকর
জামার ভিতর দিয়া যে
পাখি উড়িল
কোনপথে গেল তোমার?
সোনার শিকলে
কেন তারে বাঁধছিলা
হৃদয়
জানো ভালোবাসা কারে
কয়?
গান না বাধিলা, আসমান না
ফুরাইলা
পাখি তুমি আইসা বসো
মাটির পিঞ্জিরায়
❑ শাদাকালো উজ্জ্বলতার
দিকে
ঘোরে ঘোরে, হাওয়া ঘোরে
গাছে আর
শনশন হাওয়া হৃদয়ের
ভিতর—
শাদাকালো উজ্জ্বলতার
দিকে নির্বাক আছি
তোমাকে হারায়েছি তাই
তোমাকে ফিরে পাবার
বাসনাও ঈশ্বর
তোমাকে পাবার চেয়ে
প্রবল
আরাধনা
নেই তো আর—
একবার তোমাকে পেলে
এ ব্রহ্মাণ্ড আমি
বিদায় জানাতাম
উড়ছে আর্দ্র
নিশান
শাদাকালো
একবার যদি ফেরো
এ জগত ছেড়ে দেব
❑ ভয়ানক বিপদজনক ঢাল
আছি দাঁড়ায়ে; এখনো
তাই এই উঁচু
ভয়ানক হয়ে ওঠে
এই খাড়া এই পাশ
দূর্বার, ধ্বংসের
মৃত্যুরে ভয় পাও?
একপাশে সরে যাও?
আশা তো করি নাই
কুশল! কুশল!
ভয়ানক বিপদজনক ঢাল—
ভয়ানক এই
কেন বলো তারে?
ভয়টয় থাকে না কিছু
মরনের পরে।
❑ এক আশ্চর্য ফুল
প্রেমিকা আমার অনেকদিন
পরে
আমার প্রণয়ের পরে
আমার জীবনের পরে
কিংবা আরো অনেকদিন
যখন আমি আর কোথাও নাই
বেহেশতে নাই, দোজখেও
নাই
কিন্তু সে এমন থেকে
যায়
এক আশ্চর্য ফুলের মতো
অমর
আর আশ্চর্য ছবির মতো
নিখুঁত
তার বয়স বাড়ে না— স্থির
গাছের পাতায়
কোমল মুখ, ছোট মুখ,
মলিন হয়ে
যেভাবে লেগে থাকে
আমার মনে
তেমনই যদি
ঝরনার পাশে এসে দাঁড়ায়
বহুদিন পরে!
❑ কায়া
নির্জনতাকে আমি চিনেছি
এভাবেই-
একটি দুপুরের ছায়া
দীর্ঘতর; অপেক্ষা হয়ে
আসে।
কেন তবু এলে না তুমি?
আমারও তো হাত অরণ্য হয়ে
যায়; ফুল জন্মাতে থাকে-
বুক জুড়ে জলের মতো দুঃখ
থইথই
করে।