“বারীন দা আর বারান্দা-কে চুমুকে ভিজতে দেখলাম”

রাদ আহমদ


-----------------------------------------------------

কিভাবে কিভাবে যেন ঢাকায় বসে ১৯৯৭ সালেই আমি জেনে যাই 'কৌরব' একটা ভালো পত্রিকা। কবিতার জন্য। এখানকার মেইন-à¦¸à§à¦Ÿà§à¦°à ¿à¦® পত্রিকাগুঠ²à¦¾à¦° সাহিত্য পাতার উপরে ততদিনে হতাশ। কারণ নতুন ধরণের কোনো কবিতার সন্ধান সেখানে পাওয়া যাচ্ছে না। সবই পুরনো কবিতার বিভিন্ন রকমের রিপিটেশন। এসব বিষয় নিয়ে রিফাত ভাইয়ের (কবি রিফাত চৌধুরী)-র বাবুপুরা বস্তির 'à¦†à¦¨à§à¦¡à¦¾à¦°à¦—à§à¦°à ¾à¦‰à¦¨à§à¦¡' ঘরে তুমুল আড্ডায় সময় কাটাতাম। রাত দিন। ওরকম সময়েই কৌরবের কথা শোনা। আর স্বাভাবিক ভাবেই, ভাবনার মিলের কারণে, এর প্রতি আকর্ষণ।

ধীরে ধীরে এই পত্রিকা আর এর কুশীলবদের সম্বন্ধে জানতে থাকি। এক পর্যায় সরাসরি যোগাযোগও হয়ে যায় এর তৎকালীন/à¦¬à¦°à à¦¤à¦®à¦¾à¦¨ কাণ্ডারিদৠর সাথে। আর এতসবের সাথে সাথে কৌরবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাত া-সদস্য বারীন দার লেখালেখি আর ভাবনার সাথে পরিচিত হতে থাকি আলাদাভাবেॠ¤ আমার মনে আছে, পড়ালেখা সূত্রে মেলবোর্নে থাকাকালীন একটা চমৎকার মেইল (বাই পোস্ট) পাই প্রিয় কবি সব্যসাচী দা-র (সব্যসাচী সান্যাল) স্টকহোম, সুইডেনের এড্রেস থেকে (২০০৪-০৫)। ওই পার্সেলে বারীন দা-র "অতিচেতনাঠ° কথা" বইটা ছিল অন্যতম দামী কনটেন্ট। বইটা এখনও আমার কাছে সযত্নে সংরক্ষিত আছে।

একই সময় ইন্টারনেট মারফত (তখনও ফেসবুক আসেনি) আরেক প্রিয় সিনিয়ার কবি কল্যাণ দাসের একটা চমৎকার আর অদ্ভুত কবিতা আমাদের অনেকের মাথাতেই ঘুর ঘুর করেছিল বেশ কয়েকদিন। ওখানকার একটা লাইন ছিল অনেকটা এরকম (স্মৃতি থেকে লিখছি। পুরা কবিতাটা কোথাও পেলাম না খুঁজে):

"বিস্কিটে বিস্কিটে ভিজে চা আসছে/ বারীন দা আর বারান্দা-কৠ‡ চুমুকে ভিজতে দেখলাম"।

অগ্রজ কবি ব্রাত্য রাইসু প্রতিষ্ঠিত /সম্পাদিত (মডারেটেড) ইয়াহু গ্রুপ "কবিসভা" - তখন খুব জমজমাট। অনেকের আগমনে মুখরিত। ওখানে বারীন দা-র একটা দু‘টা ছোট মেইল দেখি। প্রশ্ন করলে উত্তর পাই না। আগ্রহ আরও বাড়ে। ততদিনে মারাত্মক আকর্ষণীয় এক ব্যক্তিতে পরিণত বারীন দা আমার কাছে।

২০০৫ এ কোলকাতা বইমেলা চলাকালীন অলিম্পিয়া পাবে এক সন্ধ্যায় একা একা ছিলাম। ঘরের কোনার এক টেবিল থেকে হঠাৎ শুনতে পাই, "বারীন কোথায়? বারীন আসে নি?" - তাকিয়ে দেখি একজন বয়স্ক ভদ্রলোক কার সাথে যেন কথা বলছেন। হয়ত অন্য কোনো বারীনের কথা। কিন্তু আমার কেন যেন মনে হচ্ছিল কৌরবের বারীন দার কথাই উনি বলছেন। টেবিল থেকে উঠে গিয়ে অপরিচিত একজনকে তো আর জিজ্ঞাসা করা যায় না - আচ্ছা আপনি কোন বারীনের কথা বলছেন। কিন্তু আমার ইচ্ছা ছিল সেইটাই। অনেক আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও সেবার আর, যতদূর মনে পড়ে, বারীন দার সাথে দেখা করা হয় নাই। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে - ওনার লেখালেখি, কবিতা আর টেক্সট-à¦‰à¦ªà¦¸à §à¦¥à¦¿à¦¤à¦¿ এমনই যে কিভাবে কিভাবে যেন খুবই আপন বলে মনে হয় সবসময়।

আমার দুটা বই বারীন-দার হাতে গিয়েছিল। উনি যেরকম করে থাকেন - কেউ তাঁকে কবিতার বই পাঠালে খুব যত্ন নিয়ে পড়ে - তাঁর মতামত উনি চিঠি লিখে লেখক-কে জানান। তো আমাকেও উনি খুব সুন্দর ভাবে হাতে লিখে চিঠি পাঠিয়েছিলৠ‡à¦¨ আলাদা আলাদা ভাবে কবিতাগুলো পড়ে। যে ভালোবাসা আর মনোযোগ দিয়ে উনি কবিতা পড়েছিলেন - আমি অভিভূত। এটা আমার কাছে খুবই ভালোলাগা একটা বিষয় ছিল ওই সময়। বড় প্রাপ্তি। দুর্ভাগ্য যে - ৫/৭ বার বাসা বদল করতে করতে - একটা বইয়ের ভিতরে ছিল সেই চিঠি - বই সমেত সেই চিঠি হারিয়ে যায়।

বারীন দার কবিতা নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। অনেকেই বলবেন। অনেকে আরও অনেক ভালোভাবে বলবেন। দুই বাংলা মিলিয়ে যে অল্প কয়জনার কবিতা পড়লে এখনও লেখার জন্য অটোমেটিক ইন্সপায়ারৠশন পাই ব্যক্তিগতঠ­à¦¾à¦¬à§‡ - বারীন দা তাঁদের মধ্যে অন্যতম ।

কিছু কিছু মানুষ চলে গেলে ঠিক মনে হয় না যে - উনি আর নাই। মনের ভিতরে তাঁর উপস্থিতি জ্বল জ্বল করতে থাকে। বারীন-দাও বুঝতে পারছি সেরকমই একজন। যেখানেই থাকেন ভালো থেকেন বারীন দা, বাংলা কবিতার "স্ব-ঘোষিত ভিলেন"।

(৩০/১০/১৭)