মাটির বাড়ি

সোমব্রত সরকার



অনেকদিন ধরে বুকের ভেতর একটাই স্বপ্ন নাড়াচাড়া দিত। সেটা একটা মাটির বাড়ির। একবার বর্ধমান শহরে à¦—à¦¿à¦¯à¦¼à§‡à¦›à¦¿à¦²à¦¾à ® কবিতার এক অনুষ্ঠানেॠ¤ সেখানে শ্যামলবরণ সাহা এসে আমাকে ওঁর বাড়ি নিয়ে গেলেন। শ্যামলবরণৠর কথা আমি অনেক শুনি আমার অত্যন্ত কাছের মানুষ আলোক সরকারের কাছে। শ্যামলবরণ শ্যামসুন্দ র কলেজে আলোক সরকারের ছাত্র। আলোক সরকার বর্ধমান থেকে একটু ভেতরে তখন শ্যামসুন্দ রে অধ্যাপনা করছেন । ওঁর সান্নিধ্যৠএসে গুটিকয় তরুণ স্বপ্ন দেখছেন বাংলা কবিতা চর্চার । শ্যামলবরণ, সঞ্চয়িতা কুণ্ডু, মহম্মদ রফিক, রাজকুমার রায়চৌধুরৠ। সুব্রত চক্রবর্তীঠ•à§‡ নিয়ে কবিতা আর স্বপ্নে মাতোয়ারা একটা গোষ্ঠী ছিল বর্ধমানে। ওঁর মৃত্যুর পর স্বপ্ন আর কবিতা এলোমেলো হয়ে যায়। আলোক সরকার বর্ধমানে এলে সেই স্বপ্ন আবার দানা বাঁধে। কবিতা ভবনে রমেন্দ্রকৠà¦®à¦¾à¦° আচার্যচৌধৠরী যখন যেতেন তখন এরকমই এক কবিতার স্বপ্নে মাতোয়ারা গোষ্ঠী ছিল। বুদ্ধদেবেঠ° ঘরে বসে অজিত দত্ত, অরুণকুমার সরকার,নরেশ গুহ। রমেন্দ্রকৠà¦®à¦¾à¦° বললেন, একদিন দেখলাম পাজামা আর ফতুয়া পরে এলোমেলো এক মানুষ এলেন। বুদ্ধদেব বসুর বাড়িতে চায়ের আসর ছিল জমজমাট। তিনি অত্যন্ত দামি চা পাতার চা খেতেন। সেই সুদৃশ্য চায়ের পেয়ালা প্রতিভা বসুর হাত থেকে নিয়ে আনমনা ভদ্রলোক খেতে গিয়ে গায়ে ফেলে দিলেন। অনেক পর বুঝলুম ভদ্রলোক হলেন আমার স্বপ্নের কবি জীবনানন্দ দাশ। অনেক দিন ধরে ওকে দেখবার একটা বাসনা ছিল। সেই স্বপ্ন কবিতা ভবনের আড্ডায় এসে বলতে পারো পুরণ হল। আমার ছিল মাটির বাড়ির স্বপ্ন। বর্ধমানের অনুষ্ঠানেঠ° ফাঁকে শ্যামলবরণ আমাকে ওঁর ওখানে নিয়ে গেলেন। আলোক সরকারের মুখে শুনেছিলাম ওঁরা টেরাকোটার পুতুল ও গয়না বানান। টেরাকোটা পোড়ানো হয় তেঁতুল কাঠের আগুনে। এ আগুন ধিকিধিকি জ্বলে। তাই পুতুল ভালো পোড়ে। সঞ্চয়িতা কুণ্ডু আলোক সরকারকে নিয়ে একটা গদ্য লিখেছিলেন একসময়। যার শিরোনাম ছিল তেঁতুল কাঠের আগুন। পরে শ্যামলবরণৠর মুখে টেরাকোটা পোড়ানোর এই তথ্য পাই। তা আমি বায়না ধরলাম টেরাকোটা পোড়ানো দেখতে যাব। শ্যামলবরণ বললেন, চলো তাহলে তোমাকে দোলাদের ওখানে নিয়ে যাই। সঞ্চয়িতার বোন দোলাই টেরাকোটা পোড়ানোর কাজটা করে। গিয়ে দেখলাম ওদের সংস্থার নাম মাটির বাড়ি। আমি চমকে গেলাম। বোধহয় আমার স্বপ্ন ধাক্কা খেলো। সেই মাটির বাড়ির স্বপ্ন আজও দেখি। এক ফালি জমি, তিরতিরে নদী আর মাটির বাড়ি।